ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যে কোন দিন অনুশীলনে নামতে পারবেন মুশফিকরা

প্রকাশিত: ২২:২৫, ৭ জুন ২০২০

যে কোন দিন অনুশীলনে নামতে পারবেন মুশফিকরা

মোঃ মামুন রশীদ ॥ দীর্ঘদিন বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের আঘাতে স্থবির হয়ে ছিল বিশ্ব ক্রিকেটের সার্বিক কর্মকা-। তবে সবার আগে অনুশীলন শুরু করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দল। এরপর একে একে তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। আগে থেকেই বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার চাইছিলেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুশীলন করতে, কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা ভেবে তাতে অনুমতি দেয়নি। তবে এখন বাংলাদেশেও আড়াই মাস সবকিছু বন্ধ থাকার পর গত মাসের শেষে উঠে গেছে লকডাউন। অন্যান্য দেশের ক্রিকেটারদের মতো এখন তাই অনুশীলন শুরু করতে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু দীর্ঘদিন মাঠ ও মাঠের বিভিন্ন অবকাঠামোর সুবিধাদি অব্যবহৃত থাকায় অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে সবকিছু। এখন সেগুলোই ঠিকঠাক করছে বিসিবি। আর এসব কিছু ভাল অবস্থায় আনার পরই এককভাবে ক্রিকেটাররা অনুশীলনে নামতে পারবেন। শনিবার এমনটাই দৈনিক জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান। ক্রিকেটাররা দীর্ঘদিন বিসিবির দেয়া গাইডলাইন অনুসরণ করে ফিটনেস ঠিক রাখতে নিজ নিজ ঘরেই অনুশীলন চালিয়ে গেছেন এবং খাদ্যাভ্যাসও ঠিক রাখতে সচেষ্ট ছিলেন। কিন্তু ঈদের আগেই মুশফিকুর রহিম এবং আরও কয়েকজন বিসিবির কাছে আবেদন করেন এককভাবে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বিভিন্ন সুবিধাদির মধ্যে পর্যাপ্ত অনুশীলন করার। কিন্তু লকডাউন থাকা অবস্থায় এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা ভেবে সেটাতে অনুমোদন দেয়নি বিসিবি। তবে ঈদের পরই লকডাউন খুলে যাওয়া এবং বিভিন্ন দেশে ক্রিকেটাররা অনুশীলন শুরু করায় চাপে পড়ে যায় বিসিবি। ক্রিকেটাররাও অনবরত অনুশীলনের সুযোগ চেয়ে গেছেন। শেষ পর্যন্ত এতে রাজি হয়েছে বিসিবি। এখন ক্রিকেটারদের অনুশীলন করার সুবিধার্থে সবকিছু ভালভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আকরাম বলেন, ‘ঈদের আগে মুশফিকসহ অনেকেই চেয়েছিল অনুশীলন করতে, কিন্তু আমরা সেটাতে রাজি হইনি। কারণ স্বাস্থ্যঝুঁকির ব্যাপার আছে। এর মধ্যেই অনেক দেশে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তাছাড়া সামনে আমাদের শ্রীলঙ্কা সফরের ব্যাপার আছে। সেটি যদি হয় সেক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের একটা মানসিকভাবে মাঠের সঙ্গে আবার মানিয়ে ওঠার ব্যাপার থাকে। সে জন্য আমরা অনুমতি দিয়েছি এককভাবে তারা অনুশীলন করতে পারবে।’ ব্যক্তিগত এই অনুশীলন শুরু হয়ে গেলেও গ্রুপভিত্তিক অফিসিয়াল অনুশীলনের যে পরিকল্পনার ছক তৈরি করেছে বিসিবি সেটা শুরু করতে আরও বিলম্ব আছে। ক্রিকেটারদের অবিরাম দাবির মুখে একক অনুশীলনের জন্য ইতোমধ্যেই বিসিবি কিছু পরিকল্পনা করে রেখেছে। হয়তো ইতোমধ্যে দুয়েকজন ক্রিকেটারকে মাঠে আসতে দেখা যেত, কিন্তু ‘হোম অব ক্রিকেট’ দীর্ঘ বিরতিতে ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট ভাল অবস্থাতে নেই। তাই এখন মুশফিকদের জন্য সেসব প্রস্তুত করছে বিসিবি। আকরাম বলেন, ‘দীর্ঘ সময় সবকিছু অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল। এখন সেগুলো ঠিকঠাক করা হচ্ছে। হয়তো আরও ২/৩ দিন লাগবে সব ঠিকঠাক করতে। এরপরই ক্রিকেটাররা যার যার ইচ্ছা মতো চাইলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্র্যাকটিস করতে পারবে। আমরা অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। যে কোন দিন তারা অনুশীলনে নামতে পারে। আর অনুশীলন সহযোগী হিসেবে আমরা একজনকে হয়তো দেব তাকে পাওয়ার বিষয়টিও এখানে ভাবতে হয়েছে। সবকিছুই প্রস্তুতির ব্যাপার ছিল।’ এ বিষয়ে ২ দিন আগে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও বলেছেন দীর্ঘ সময় মাঠের বাইরে থাকার পর ক্রিকেটারদের প্রস্তুত হতে অন্তত ৫/৬ সপ্তাহের অনুশীলন ক্যাম্প করার প্রয়োজন। তিনি দাবি করেন, ৩ সপ্তাহ লাগবে শারীরিকভাবে ফিট করতে আর ২ সপ্তাহ লাগবে স্কিল আগের জায়গায় আনতে। ছন্দ ফেরাতে আরও সপ্তাহখানেক। এখন একক অনুশীলন শুরু হয়ে গেলে অনেক ক্রিকেটারই এর মাধ্যমে এগিয়ে যাবেন অফিসিয়াল অনুশীলন শুরুর আগে।
×