ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমালোচনার মুখে চার কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত

প্রকাশিত: ২৩:৫১, ৪ জুন ২০২০

সমালোচনার মুখে চার কলেজের ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খ্রীস্টান মিশনারি পরিচালিত নটর ডেম, হলিক্রস, সেন্ট জোসেফ ও সেন্ট গ্রেগরি কলেজে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। নিজস্ব নিয়মে একাদশ শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেয়া অনুমতির এক দিনের মাথায়ই নানা জটিলতা ও সমালোচনার মুখে বুধবার প্রক্রিয়া স্থগিতের আদেশ দেয়া হয়েছে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ইতোমধ্যেই আগের ভর্তির আদেশ স্থগিত করে নতুন আদেশ জারি করেছে। নটর ডেম কলেজের এক বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য জানানো হয়েছে। কলেজের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২ জুন ঢাকা শিক্ষাবোর্ড নটর ডেম, হলিক্রস, সেন্ট যোসেফ ও সেন্ট গ্রেগরি কলেজকে তাদের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে ২০ জুনের মধ্যে ভর্তি সম্পন্ন করে বোর্ডকে অবহিত করার নির্দেশনা দেন। ৩ জুন শিক্ষারেবার্ডের চেয়ারম্যান টেলিফোনে চারটি কলেজকে দেশে করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সব ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশনা দিয়েছেন। দেশের সার্বিক অবস্থা স্বাভাবিক হলে চেয়ারম্যান চারটি কলেজকে লিখিত পত্রের মাধ্যমে ভর্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ১৫ দিন সময় দেবেন। সুতরাং চেয়ারম্যানের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা কলেজের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করছি। ভর্তি কার্যক্রমের নতুন তারিখ শিক্ষাবোর্ড থেকে নির্দেশনা পাওয়ার পর কলেজের নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে পুনরায় প্রকাশ করা হবে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ বলেন, নটর ডেম হলিক্রসসহ খ্রীস্টান মিশনারি পরিচালিত কলেজগুলোরকে ২০ জুনের মধ্যে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। সে প্রেক্ষিতে কিছু কলেজ বিজ্ঞপ্তিও জারি করে দিয়েছে। এ কলেজগুলোর ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জানা গেছে, এর আগে এই নির্দিষ্ট কলেজকে তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তির অনুমোদন দেয়ার সমালোচনা করেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন ও সাবেক শিক্ষা সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম খানসহ অনেকেই।। তারা বলছেন, বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান হিসেবে তাদের জন্য একটা নির্দিষ্ট কোটা থাকতে পারে কিন্তু পুরোপুরি তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তির কেন অনুমোদন দেয়া হলো। একদেশে দুই নীতির কঠোর সমালোচনা করে মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ডের আদেশ দুটি প্রত্যাহার করার পরামর্শ দেন তারা। মঙ্গলবার রাতে শিক্ষা বিষয়ক অনলাইন পক্রিকা দৈনিক শিক্ষার লাইভে যুক্ত হয়ে কথা বলেন সাবেক শিক্ষা সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম খান। দৈনিক শিক্ষা ডটকমের সম্পাদক ও এডুকেশন রিপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান খানের সঞ্চালনায় লাইভে যুক্ত ছিলেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহসানুল হক মিলন এবং মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দ জাফর আলীসহ কয়েক শিক্ষক। এন আই খান বলেন, আমি যখন সচিব ছিলাম (২০১৫ সনে) তখন তারা আলাদা ভর্তির অনুমোদন চেয়েছিল। আমি তা না দেয়ায় তারা আদালতে যান। প্রতিবেদনে দেখলাম মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড নটর ডেম কলেজসহ মিশনারি পরিচালিত কলেজগুলোকে ২০ জুনের মধ্যে ভর্তি শেষ করতে বলেছে। তাহলে অন্যান্য কলেজগুলো কি দোষ করেছে? উল্লেখ্য, সারাদেশে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জনকণ্ঠকে বলেন, প্রতি বছর দেখা যায় ভর্তির ফল প্রকাশের পর বোর্ডে দৈনিক ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থীর আসা-যাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা অসম্ভব হয়ে পড়তে পারে। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ভর্তির বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রাখছি।
×