ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মির্জাপুরে ইটভাঁটির ধোঁয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

প্রকাশিত: ২০:৫০, ৩ জুন ২০২০

মির্জাপুরে ইটভাঁটির ধোঁয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মির্জাপুর, ২ জুন ॥ মির্জাপুরে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ইটভাঁটির ধোঁয়া ও গ্যাসে কৃষকের আধাপাকা ধান পুড়ে নষ্ট ও চিটা হয়ে গেছে। আবাদকৃত জমির ধান ইটভাঁটির ধোঁয়া ও গ্যাসে বিনষ্ট হওয়ায় উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের মীর দেওহাটা গ্রামের কৃষকরা এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সারাবছর সংসারে কিভাবে খাদ্যের যোগান দিবে তা নিয়েও তারা চিন্তিত বলে জানা গেছে। এদিকে প্রতি বছর এ এলাকার কৃষক ইটভাঁটির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থানীয় প্রশাসন এ প্রতিকারে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। উপজেলার মীর দেওহাটা গ্রামে সরেজমিনে দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি বোরো প্রকল্পের শত শত বিঘা জমির আধাপাকা ধান পাশে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ৬/৭টি ইটভাঁটির ধোঁয়া ও গ্যাসে পুড়ে নষ্ট ও চিটা হয়ে গেছে। ইটভাঁটির মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার কৃষকরা ভয়ে কিছু বলতে সাহস পান না। প্রতি বছর এলাকার কৃষক ইটভাঁটির কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থানীয় প্রশাসন এর প্রতিকারের কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে কৃষকরা অভিযোগ করেছেন। মীর দেওহাটা মৌজায় কৃষিপ্রধান ও বসতি এলাকায় গড়ে উঠা অধিকাংশ ইটভাঁটির অনুমোদন নেই বলে কৃষকরা অভিযোগ করেন। এর জন্য কৃষি অফিস ও পরিবেশ অধিদফতরকে দায়ী করেন তারা। মীর দেওহাটা গ্রামের কৃষক নূরুল ইসলাম মিয়া বলেন, আমি ৯৫ শতাংশ জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি কিন্তু ইটভাঁটির ধোঁয়ায় পুড়ে সব শেষ করে দিয়েছে। একইভাবে প্রবীণ কৃষক শমেজ উদ্দিন ৭০ শতাংশ, নজরুল মল্লিক ৪৮ শতাংশ, সুরত আলী ৩১ শতাংশ, শাজাহান বাউল ১শ’ ৪১ শতাংশ, বরগা চাষী সায়েদ আলী ৪০ শতাংশ, তারু মিয়া (অন্ধ) ১৮ শতাংশ, খোরশেদ মিয়ার প্রকল্পের ৪শ’ শতাংশ ও মজিবর মিয়া ৫০ শতাংশ জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন। কিন্তু ইটভাঁটির ধোঁয়া ও গ্যাসে তাদের আবাদকৃত আধাপাকা ধান পুড়ে নষ্ট ও চিটা হয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন। বোরো ধানেই তাদের সারাবছরের খাদ্যের যোগান হতো এখন তাদের চাল কিনে ভাত খেতে হবে বলে তারা জানান। এরা সবাই জমিতে এসে প্রতিবাদ ও ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। মির্জাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, কৃষির কোন ক্ষতি হোক তা আমরা কখনও চাই না। ইটভাঁটির অনুমোদন দেয় পরিবেশ অধিদফতর। আমরা শুধু ফসলি জমির একটি প্রত্যয়ন দিতে পারি। মীর দেওহাটা মৌজায় গত দুই বছরের মধ্যে কোন ইটভাঁটির কৃষি অফিস থেকে কোন প্রত্যয়নপত্র দেয়া হয়নি বলে তিনি জানান। মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, কৃষকের ধান নষ্ট হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি জেনেছি। এছাড়া মীর দেওহাটা এলাকায় কিভাবে ইটভাঁটি গড়ে উঠেছে সে বিষয়ে কৃষি অফিসারকে তদন্ত করে দেখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
×