ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২৪ এপ্রিল ২০২০

ঠাকুরগাঁওয়ে ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৩ এপ্রিল ॥ সদর উপজেলার সালান্দরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও কোন সাহায্য না পাওয়ায় বৃহস্পতিবার ত্রাণের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড় মহাসড়কের তেলীপাড়া নামক স্থানে এলাকায় কয়েকশ’ কর্মহীন মানুষ ত্রাণের দাবিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মহাসড়কের ওপর শুয়েবসে অবরোধ ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মাহাবুব আলম মুকুল ও এক মেম্বারকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে সাহায্যের ব্যবস্থার কথা বলার চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ওপর তেড়ে যান। এ সময় অপ্রীতিকর পরিস্থিতিসহ সড়কের দুপাশে যানজট সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাকসুদা আক্তার মাসুসহ সদর থানার পুলিশ ও আনছার ব্যাটালিয়ন সদস্যরা। তারা ত্রাণের দাবিতে বিক্ষোভ করা নারী-পুরুষদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ-আল-মামুন দ্রুত তালিকা তৈরি করে তাদের মাঝে ত্রাণ পৌঁছানোর আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা। ঘণ্টাব্যাপী এই অবরোধ চলাকালে বিক্ষোভকারীদের মধ্য থেকে সমারু হোসেন, মিজান, সিরাজুল, কুলসুমসহ আরও অনেকে অভিযোগ করেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারের নির্দেশ মোতাবেক ও লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন কর্মহীন অবস্থায় তারা নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদের এলাকায় দিনমজুর, রিস্কা ও অটোচালকসহ নি¤œ আয়ের অসংখ্য মানুষের বসবাস। সরকার থেকে বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করার কথা বলা হলেও তারা এ পর্যন্ত কোন ত্রাণ পান নাই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। তাই ক্ষুধার জ্বালায় বাধ্য হয়ে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন তারা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জেলা প্রশাসন ধারাবাহিকভাবে সব দরিদ্র কৃষক, দিনমজুর ও কর্মহীন মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ক্রমান্বয়ে সব হতদরিদ্র ব্যক্তি যেন সরকারী ত্রাণ পায় সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন কাজ করছে। এছাড়া যে সমস্ত ব্যক্তির চাহিদা থাকলেও লোক লজ্জায় ত্রাণ নিতে পারছেন না তাদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। অনেকে ফোন করছেন, তাদের কাছে গোপনে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। কলাপাড়ায় ১১ দরিদ্রের চাল চৌকিদারের পেটে নিজস্ব সংবাদদাতা কলাপাড়া থেকে জানান, এবার ১১ দরিদ্র অসহায় দরিদ্র পরিবারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল তুলে খেয়েছে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) আবু সালেহ। দীর্ঘ কয়েক মাস এসব ফেয়ার প্রাইস কার্ডের চাল তুলে আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে আসলে তিনি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গেছে, একজনের কার্ডের ওপরে অন্যের ছবি লাগিয়ে চৌকিদার এসব চাল তুলে নিয়েছে। ভুক্তভোগী আমির হোসেন জানান, তার কার্ড দিয়ে তিনি একবার চাল তুলেছেন। এরপর পরিষদের কথা বলে কার্ডটি নিয়ে যায় চৌকিদার। আরেক ভুক্তভোগী খবির উদ্দিন জানান, তাকে একটি কার্ড দেয়ার কথা বলে চৌকিদার পাঁচ শ’ টাকা নিয়েছে। খবিরের ছবি দিয়ে একটি কার্ডে বসিয়ে একবার চাল তোলা হয়েছে। নুরভানু জানান, তার কার্ডটিও চৌকিদার আবু সালেহ নিয়ে গেছে। ইউপি মেম্বার মিজবা খান জানান, এসব ভুক্তভোগী অভিযোগ দিলে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে ডিলারের কাছ থেকে কার্ড নিয়ে দেখি এই অবস্থা। ডিলার ওমর ফারুক জানান, তিনি কার্ড হাতে পেয়ে চাল দেন। তবে তার কাছে কার্ড থাকে কেন এর উত্তর মেলেনি। তদারকি কর্মকর্তা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা লিটন চন্দ্র রায় জানান, তার কাছে কেউ কখনও অভিযোগ দেয়নি। চৌকিদারের এমন অপকর্মের কথা স্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম সিকদার জানান, ওই চৌকিদার বেপরোয়া এবং মাদকসেবী। আইনী ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতির কথা জানালেন তিনি। ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, চৌকিদারের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রাঙ্গাবালীতে জেলেদের অবস্থান স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা থেকে জানান, কর্মহীন রাঙ্গাবালী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জুগিরহাওলা ও চরকানকুনি গ্রামের ভিজিএফ সুবিধাবঞ্চিত জেলেরা অবস্থান কর্মসূচী পালন করেছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ চত্বরে অর্ধশতাধিক জেলে এ কর্মসূচী পালন করেন। কর্মসূচীতে অংশ নেয়া জেলেদের অভিযোগ, কার্ডধারী জেলে হওয়া সত্ত্বেও তারা ভিজিএফ সুবিধা পাচ্ছেন না। অথচ জেলে নয়, অন্য পেশার লোক অনৈতিক সুবিধার মাধ্যমে ভিজিএফ সুবিধা ভোগ করছে। শুধু তাই নয়, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারী কোন ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় জেলেরা মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই এর প্রতিবাদ ও প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তাদের এ কর্মসূচী। কয়েক জেলে জানান, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বারদের টাকা না দিলে সুবিধা পাওয়া যায় না। নাম প্রতি নির্ধারিত অঙ্কের টাকা দিলেই কেবল ভিজিএফসহ অন্যান্য সুবিধার তালিকায় নাম উঠানো যায়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাশফাকুর রহমান বলেন, এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×