ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধু স্মরণ

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ১৭ মার্চ ২০২০

বহির্বিশ্বে বঙ্গবন্ধু স্মরণ

মশিউর রহমান খান ॥ শেখ মুজিব। বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। বাংলা, বাঙালী, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার অপর নাম শেখ মুজিবুর রহমান। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের নিপীড়িত-নির্যাতিত, শোষিত-বঞ্চিত মুক্তির ঠিকানা। যার জন্ম না হলে হাজার বছরের পরাধীন বাঙালী জাতি কোনদিনও স্বাধীনতার স্বাদ পেত না। যিনি তাঁর হিমালয়সম নেতৃত্বে বাংলাদেশের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে সে সব দেশের নাগরিকদের মনের এখনও অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাচ্ছে। জাগিয়েছে দেশপ্রেম, সুমহান আত্মত্যাগ। তাঁর অকাল মৃত্যুর পরও যুগের পর যুগ বিশ্ববাসী স্মরণ করে যাচ্ছে ইতিহাসের এই মহানায়ককে। যা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দিকে তাকালেই তাঁর অবিনশ্বর কীর্তির স্মৃতিচিহ্ন চোখে পড়ে। স্বাধীন বাংলাদেশের রূপকার হিসেবে ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার এ স্থপতির অবিস্মরণীয় নেতৃত্ব ও আত্মত্যাগকে সম্মান জানাতে শুধু দেশেই নয়, বিশ্বের বহু দেশেরই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গড়ে উঠেছে বঙ্গবন্ধুর স্মরণে অনেক স্থাপনা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রধান সহযোগী পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর সম্মানার্থে তৈরি করা হয়েছে আবক্ষ মূর্তি, জাদুঘর ও বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত ভবন। এছাড়া নয়াদিল্লীতে বঙ্গবন্ধুর নামে রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। কম্বোডিয়ার রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে দেশটির রাজধানী নমপেনের একটি প্রধান সড়ককে বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ করেছে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনির একটি ইউনিভার্সিটি নিজস্ব উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর কীর্তিকে স্মরণ করে তৈরি করেছে একটি আবক্ষ মূর্তি। ফ্রান্সে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, তুরস্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে দুটি সড়ক নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়া আমেরিকার শিকাগোতে শেখ মুজিব ওয়ে নামে একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৪২ সালে তৎকালীন কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান মৌলানা আজাদ কলেজ) ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়ে স্মিথ স্ট্রিটের বেকার হোস্টেলের ২৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। হোস্টেলটি কলকাতার শিয়ালদহের কাছে ৮ স্মিথ লেনে অবস্থিত। ফ্রান্সে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার ফ্রান্সের পর্যটননগরী পারেলুমনিয়াল সিটিতে তৈরি হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। সেখানে পাথরে খোদাই করা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। বিদেশের মাটিতে এই প্রথম বঙ্গবন্ধুর নামে স্কয়ার করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পারেলুমনিয়াল মিউনিসিপালিটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এ স্কয়ারের উদ্বোধন করেন। দিল্লীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব লেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীর একটি সড়ক রয়েছে। নয়াদিল্লীর শঙ্কর রোড-মন্দির মর্গ ট্রাফিক চত্বর থেকে রাষ্ট্রীয় রাম মনোহর লোহিয়া হসপিটালের সামনে মাদার টেরিজা ক্রিসেন্ট পর্যন্ত সড়কটির পুরনো নাম পার্ক স্ট্রিট পরিবর্তন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরণ করা হয়। এছাড়া কলকাতায় বঙ্গবন্ধুর নামে পার্ক সার্কাস সংলগ্ন একটি সড়ক রয়েছে। বাংলাদেশ উপ-দূতাবাস সংলগ্ন এক কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তাটির নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সরণি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়ক তুরস্ক তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা ও তাদের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে রয়েছে দুটি সড়ক। তুরস্কের আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস ও ইস্তান্বুলে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জানায়, ১৯৯৭ সালে বর্তমান সরকার প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসার পর ১ এপ্রিল বঙ্গবন্ধুর নামে তুরস্কে রাস্তার নামকরণ হয়। কম্বোডিয়ার বঙ্গবন্ধু সড়ক কম্বোডিয়ার রাজা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনের একটি প্রধান সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। গণহত্যার শিকার হওয়া দুই দেশ বাংলাদেশ ও কম্বোডিয়ার একে অপরের জাতির জনকের নামে গুরুত্বপূর্ণ শহরের প্রধান সড়কের নামকরণ করে। ফিলিস্তিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সড়ক ফিলিস্তিন সরকার প্রাচীন ঐতিহ্যের শহর হেবরনের একটি রাস্তার নামকরণ করেছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। বঙ্গবন্ধুর মতো জাতীয় বীরের সম্মানার্থেই একটি সড়কের নামকরণ করে সে দেশের সরকার। মিশিগানে ‘স্পেশাল ট্রিবিউট’ যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান অঙ্গরাজ্যের আইনসভায় সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করা হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী। এদিন বঙ্গবন্ধুকে দেয়া হয় ‘স্পেশাল ট্রিবিউট’। হাউস ও সিনেটের যৌথ অধিবেশনে সহকারী ডেমোক্র্যাটিক ককাসের চেয়ারম্যান সিনেটর পল ওয়াজনোর নেতৃত্বে এবং হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ লরি স্টোনের যৌথ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুকে এই বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহ্বায়ক ড. রাব্বী আলমের সভাপতিত্বে ১০ মার্চ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন কনস্যুলেট মিনস্টার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সিনেটর ওয়াজনো এই অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক উল্লেখ করে বলেন, আমরা এমন ইতিহাসের অংশ হতে পেরে আনন্দিত ও গর্বিত। -বিজ্ঞপ্তি।
×