ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মদক্ষতা বাড়বে

চিকিৎসকদের মতো নার্সদেরও বিশেষজ্ঞ করা হবে

প্রকাশিত: ১০:১৭, ৭ মার্চ ২০২০

  চিকিৎসকদের মতো নার্সদেরও বিশেষজ্ঞ করা হবে

নিখিল মানখিন ॥ চিকিৎসকদের মতো নার্সদেরও ‘বিশেষজ্ঞ’ করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি নার্স ও মিডওয়াইফদের কর্মস্থলের পরিবেশ আরও অনুকূল করে তোলা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, একজন সাধারণ নার্সকে চিকিৎসা সেক্টরের সব বিভাগের রোগীদের সেবা দিতে হয়। এতে অনেক সময় নির্দিষ্ট বিভাগের রোগীকে সেবা প্রদানের কর্মদক্ষতা অর্জন করতে পারেন না। একজন রোগীর পাশে চিকিৎসকের তুলনায় নার্সকেই বেশি অবস্থান করতে হয়। চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে তাকে রোগীর তাৎক্ষণিক সমস্যা সামাল দিতে হয়। তাই নার্সদেরও নির্দিষ্ট বিভাগে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেয়ার পাশাপাশি ‘বিশেষজ্ঞ’ করে তোলা দরকার। আর কর্মক্ষেত্রে অনুকূল পরিবেশ যত বেশি বিরাজ করবে, নার্স ও মিডওয়াইফদের কর্মদক্ষতা ততই বাড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নার্সিং ও মিডওয়াইফ নিঃসন্দেহে মানবিক পেশা। সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকেন নার্স ও মিডওয়াইফ। তাদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কাজ করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে তাদের কাজের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না। কর্মস্থলে দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনীয় উপকরণ ছাড়াই অনেক সময় কাজ করতে হয়। অতিরিক্ত চাপ মাথায় নিয়ে কাজ করতে গিয়ে অধিকাংশ নার্স ও মিডওয়াইফ তাদের কর্মক্ষমতার শতভাগ বিলিয়ে দিতে পারেন না। তবে এই পেশায় আচার, ব্যবহার ও দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে উদার মন-মানসিকতার অধিকারী হতে হয়। নার্সিং ও মিডওয়াইফ অধিদফতর জানায়, নার্স ও মিডওয়াইফদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭২তম অধিবেশনে ২০২০ সালকে আন্তর্জাতিক নার্স ও মিডওয়াইফ বর্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর আধুনিক নার্সিং সেবার পথিকৃৎ ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলের ২০০তম জন্মবার্ষিকীও উদযাপন করা হবে। স্বাস্থ্যসেবা খাতে বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ নার্স ও ২০ লাখ মিডওয়াইফ। এটি বিশ্ব স্বাস্থ্য খাতের মোট জনবলের ৫০ শতাংশ। ২০২০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিশ্বে আরও ৯০ লাখ নার্স ও মিডওয়াই প্রয়োজন। এবিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) সচিব মোঃ আসাদুল ইসলাম জনকণ্ঠকে জানান, নার্সিং সেক্টর উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনেক সৎ ইচ্ছা আছে। বিশ্বের অনেক দেশের সমর্থন রয়েছে। আমাদের অনেক সুযোগ আছে। এগুলোকে কাজে লাগিয়ে স্বাস্থ্য খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন জনকণ্ঠকে জানান, ১ জন ডাক্তারের বিপরীতে ৩ জন নার্স প্রয়োজন। আমাদের ডাক্তার আছে ৩০ হাজার। এক্ষেত্রে নার্স প্রয়োজন ৯০ হাজার। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নার্স ও মিডওয়াইফদের জন্য নতুন পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে একটি অর্গানোগ্রাম করা হয়েছে। সেখানে ৭৫ হাজার নাসের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে ৩২ হাজার ৫৯১ জন নার্স ও ১ হাজার ১৪৯ জন মিডওয়াইফ কর্মরত আছেন। মিডওয়াইফদের জন্য ১ হাজার ৮৫০টি শূন্য পদ পূরণ করতে চাহিদাপত্র পিএসসির কাছে পাঠানো হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে শূন্য পদগুলোতে নিয়োগ প্রদান করা হবে। এছাড়া নার্স ও মিডওয়াইফদের ডিজিটাল ডাটাবেজ তৈরির কাজ চলছে। এক মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ হবে। তখন আমরা সহজেই জানতে পারব কে কোন বিভাগে, কোন জেলায়, কোন হাসপাতালে কাজ করছে, কার কেমন বেসিক, কার কোন বিষয়ে প্রশিক্ষণ লাগবে বা কোথায় কাজের পরিধি কেমন। সবকিছুর ওপর ভিত্তি করে আমরা তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব। স্বাস্থ্য খাতে সংখ্যার দিক দিকে ডাক্তারদের পরই নার্সের অবস্থান।
×