ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভ্রমণে খরচ কমবে

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০

 ভ্রমণে খরচ কমবে

দেশ বিদেশে ঘুরে দেখতে কার না ইচ্ছে করে। কিন্তু বেশিরভাগ সময় খরচের ভয়ে সেটা করতে পারি না। আর যে সব জায়গায় ঘুরতে চাই হয়ত সেগুলোতে দূরত্ব এবং পর্যটন মূল্যের কারণে সে সব জায়গায় জিনিসপত্র, তথা যাতায়াত ও হোটেল ভাড়া বেশি থাকে। ফলে আমরা বাজেটের মধ্যে ভ্রমণ করতে পারি না। একবার কোন ক্রমে ঘুরে আসলে হাত খালি হয়ে যায় দ্বিতীয়বার আর যাওয়া হয় না। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে অল্প কিছু কৌশল অবলম্বন করলে আমরা ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ কোন কোন ক্ষেত্রে তারও বেশি খরচ সেভ করতে পারি। সহজ কথা কখনও কখনও অর্ধেক খরচেও ঘুরে আসতে পারি সেখানে যেখানে যাব বলে কয়েক বছর ধরে জল্পনা-কল্পনা করে আসছি। দলীয়ভাবে ভ্রমণ করুন বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণে একা না গিয়ে আট দশজন বন্ধুবান্ধব নিয়ে ভ্রমণ করুন খরচ কমে যাবে। যদি গাড়ির পথ হয় এক গাড়িতে কতজন ঘুরতে পারবেন সে গুণিতকে ঘুরুন। যেমন যেখানে ঘুরতে যাবেন সেখানে নৌকায় ভ্রমণ আছে। সেটা আবার ব্যয়বহুল। সেখানকার নৌকাপ্রতি ৬ জন উঠতে পারে। তা হলে আপনি ৬ জন, ১২ জন অথবা ১৮ জনের দল তৈরি করুন। সুবিধা শেয়ার করুন পর্যটন এলাকাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের হোটেল ও সেবা থাকে। যেমন একটি সিঙ্গেল রুমের ভাড়া যদি ২ হাজার টাকা হয় হয়ত ডবল রুমের ভাড়া হবে ৩ হাজার টাকা মানে জনপ্রতি ১ হাজার ৫০০শ’ টাকা, আর চারজনের রুমের ভাড়া হয়ত ৪ হাজার টাকা তখন খরচ পড়বে জনপ্রতি ১ হাজার টাকা। আবার যদি আপনি কক্সবাজার ভ্রমণ করেন সেখানে ডরমিটরি আছে পর্যটন কর্পোরেশনে তার সিট ভাড়া ৩০০ টাকা। ছাত্রদের জন্য যা খুব সাশ্রয়ী। সিজন আসার আগেই ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন মনে রাখবেন পিক সিজনে সবকিছুর দাম বেশি থাকে। শুধু তাই নয় কয়েক দিন আগে বুকিং দিতে চাইলে আপনি সিট খালি পাবেন না। তাই সিজন আসার আগেই হোটেল ও অন্যান্য যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে রাখুন। ২০-৩০ শতাংশ সাশ্রয়ী হতে পারে। ছুটির দিন বাদ দিয়ে ভ্রমণ করুন ছুটির দিনে সব ভ্রমণ স্পটগুলোতে প্রচুর ভিড় হয়। ফলে সেদিন বাস টিকেট, হোটেল রুম, খাবার-দাবার স্থানীয় পরিবহন সবকিছুর চড়া মূল্য থাকে। আপনি যদি খোলার দিন ভ্রমণ করতে পারেন অফিস বা কর্মক্ষেত্র থেকে ছুটি নিয়ে ২-১ দিনের জন্য। দেখবেন সব জায়গায় কম দামে পাচ্ছেন। দেখা গেল দর-দাম করে হোটেলে রুম নিতে পারবেন। আগেই বুকিং দিন আপনি হাতে সময় নিয়ে ভ্রমণ পরিকল্পনা করুন এবং হোটেল ও অন্যান্য সেবা সম্ভাব্য ক্ষেত্রে আগেই বুকিং দিয়ে রাখুন। অগ্রিম বুকিংয়ের জন্য হোটেলগুলো কম দামে নিতে পারে। আপনি বিকাশের চেয়ে অনলাইনকে বেশি প্রায়োরিটি দেবেন তাহলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না। দরদাম করুন পর্যটন স্থানগুলোতে জিনিসপত্রের দাম সব সময় ওঠানামা করে মানে পর্যটক বেড়ে গেলে দাম বেড়ে যায়, লোক কমে গেলে দাম কমে যায়। তাই আপনি চাইলে দর-দাম করে নিতে পারেন। খুব বেশি ক্রাইসিস না হলে কিছু সুবিধা পেয়েও যেতে পারেন। খোঁজখবর দিয়ে কাজ করুন ভ্রমণ পরিকল্পনার আগেই খোঁজখবর নিন কোন ট্যুর অপারেটর যৌক্তিক দাম অফার করে। আবার স্পটে গিয়েও খবর নিতে পারেন কোথায় জিনিসপত্রের দাম কেমন। কারণ ট্যুরিজম এলাকার লোকজন কখনও আপনার সঙ্গে সম্পর্কে তৈরির কথা ভাববে না। অন্য কাজের সঙ্গে মিলিয়ে নিন যদি সম্ভব হয় আপনি কক্সবাজার শুধু ভ্রমণের জন্য না গিয়ে অন্য কাজের সঙ্গে ট্যাগ করে নিন। ধরে নিন অফিসের কোন কাজে কক্সবাজার যাবেন। সেই সঙ্গে ২ দিনের ছুটি নিয়ে কক্সবাজার ভ্রমণ করতে পারেন। হয়ত সব সময় সম্ভব হবে না। তবে অবশ্যই বিষয়টি আগে থেকে মাথায় রাখবেন। তা না হলে দেখা যাবে অন্য একজন ঠিকই সুযোগ নিল আপনি ডিসেম্বরে কক্সবাজার যাবেন মনে করে বসে রইলেন। অন্যভাবে পোষানোর চেষ্টা করুন আপনি চাইলে সফরকে বিভিন্নভাবে পোষাতে পারেন। যেমন আপনি সুন্দর বন বেড়াতে গেলেন সেখান থেকে ৩০০ টাকা দামে ১০ কেজি মধু ?নিয়ে আসলেন। প্রতি কেজিতে ১০০ টাকা লাভ করে অফিসের কলিগ ও বন্ধুবান্ধবদের মাঝে বিক্রি করলেন, দেখা গেল আপনি খরচের একটা অংশ সেখান থেকে তুলে নিলেন। তবে এক্ষেত্রে বিক্রি করতে পারবেন কিনা বা দাম তুলতে পারবেন কিনা সেটা আগেই ভেবে নেবেন। সরকারী রেস্ট হাউস ব্যবহার করুন আপনি জানেন যে, বেসরকারী হোটেল মোটেলের চেয়ে সরকারী গেস্ট হাউস ও বাংলোগুলোতে কম ভাড়ায় থাকা যায়। কোথায় ১০০ বা ২০০ টাকায়ও থাকতে পারবেন এক রুমে। এ জন্য অবশ্যই আগে থেকে যোগাযোগ করে বুকিং দিয়ে যাবেন। কোন কোন ক্ষেত্রে সরকারী রেফারেন্স দরকার হয়। যেমন আপনি যদি রেলওয়ের বাংলাতে থাকতে চান চট্টগ্রামে সেখানে হয়ত রেলওয়ের কারও রেফারেন্স প্রয়োজন হতে পারে। কখনও আগে থেকে যোগাযোগ না করে সরকারী হলো পাবার আশা করবেন না। কমিউনিটি ট্যুরিজমের সাহায্য নিতে পারেন কমিউনিটি ট্যুরিজম হলো স্থানীয় লোকজনের ট্যুরিজম সেবা। যেমন আপনি যদি সাজেক যেতে চান। সেখানে প্রধান হোটেলটির ভাড়া যেখানে প্রতিরাত ৫ হাজার টাকা সেখানে আপনি কোন আদিবাসী বা উপজাতির বাসায় থাকলে আপনার ভাড়া পড়তে পারে ২০০ টাকা। না ভয় নেই আদিবাসীরা ঘর ভাড়া দেয় তারা পর্যটকের উপযুক্ত করেই তাদের ঘরগুলো তৈরি করে রাখে এবং তাদের ঘরে খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। এ ছাড়া আরও অনেক উপায় রয়েছে। তবে বিমান টিকেট আপনি যতদিন আগে কাটবেন তত দাম কম।
×