ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার অচল দুই মাস ধরে

প্রকাশিত: ০৭:৩১, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০

   ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার  অচল দুই মাস ধরে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার অচল হয়ে পড়ে আছে প্রায় দুই মাস ধরে। ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন নষ্ট পাঁচ মাস হলো। আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন থাকলেও দুই বছর ধরে নষ্ট। এতে জেলার দূরদূরান্ত থেকে সেবা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে গরিব অসহায় রোগীদের। অর্থ সঙ্কটের কারণে তারা বাইরে অপারেশন কিংবা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছে না। স্বচ্ছল রোগীরা অন্য ক্লিনিকে অপারেশন করালেও ২-৩ গুণ অর্থ গুণতে হচ্ছে। একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ সুযোগে রোগীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ নবেম্বর থেকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের অপারেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনজন চিকিৎসক বদলি হয়ে চলে যান। তারা হলেন- ডাঃ ফকরুল আলম (অ্যানেস্থেসিয়া), গাইনি চিকিৎসক ডাঃ মৃণাল কান্তি বন্দ্যোপাধ্যায় ও সার্জারি চিকিৎসক ডাঃ প্রদীপ কুমার কর্মকার। এদের মধ্যে সার্জারি চিকিৎসক মিতু দেবনাথকে ঝালকাঠিতে পোস্টিং দেয়া হলেও এ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসক পদে নিয়োগ না দেয়ায় অপারেশন থিয়েটার চালু করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে জেলার দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীরা। বাধ্য হয়ে অপারেশনের রোগী নিয়ে স্থানীয় ক্লিনিক, ডায়ানস্টিক সেন্টার এবং বরিশালে চিকিৎসা করাতে স্বজনদের ৪-৫ গুণ বেশি টাকা গুণতে হচ্ছে। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে মেয়ের চিকিৎসা করাতে আসা আছিয়া বেগম বলেন, মেয়ে মর্জিনা গর্ভবতী। তাকে গাইনি বিশেষজ্ঞ মৃণাল কান্তি বাবুকে দেখাতাম। দুই মাস পরে আসতে বলেছিলেন। এসে দেখি তিনি নেই, অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। এখানে কোনো অপারেশন হবে না। গরিব মানুষ। বাইরের ক্লিনিকে অপারেশন করাতে অনেক টাকা। এত টাকা কোথায় পাব। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সদর হাসপাতালে সিজার করাতে খরচ পরে মাত্র ১ থেকে ২ হাজার টাকা। একই অপারেশন করাতে বাইরে দিতে হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। সার্জারি অপারেশন করাতে সদর হাসপাতালে খরচ হয় ১ হাজার টাকা। বাহিরে প্রয়োজন হয় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ডিজিটাল এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে আছে ৫ মাস ধরে। দেড় লাখ টাকা মূল্যের এক্স-রে ফিল্ম কিছুদিন পরেই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাবে। মেশিনটি সচল করতে চিঠি চালাচালি করলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ সুযোগে বাইরে এক্সরে করাতে ২-৩ গুণ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে বেসরকারী ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে। এ হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন নষ্ট হয়ে আছে প্রায় দুই বছর ধরে। চারটি অত্যাধুনিক মেশিন থাকলেও সেগুলো অকেজো পরে থাকায় নষ্ট হওয়ার উপক্রম। এ বিষয়ে ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডাঃ শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার বলেন, এই মুহূর্তে সদর হাসপাতালে মেজর কোন অপারেশন হচ্ছে না। কারণ এ্যানেস্থেসিয়া ও গাইনি চিকিৎসক নেই। গত ৩০ নবেম্বর থেকে এ দু’জনের সঙ্গে সার্জারি চিকিৎসকও বদলি হয়ে যায়। এরপর নতুন সার্জারি চিকিৎসক যোগদান করলেও অন্য দু’জনের পদ এখনও খালি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে বারবার চিঠি লেখা ছাড়াও সরাসরি সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাচ্ছি। কবে ডাক্তার পাওয়া যাবে তা বলা যাচ্ছে না।
×