ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ

নারী কোটা বিতর্কের ব্যাখ্যা দিয়েছে অধিদফতর

প্রকাশিত: ১১:১৫, ১৯ জানুয়ারি ২০২০

নারী কোটা বিতর্কের ব্যাখ্যা দিয়েছে অধিদফতর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ কোটা বণ্টন নিয়ে বিভিন্ন মহলের বিতর্ক ও আদালতের রিটের প্রেক্ষাপটে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে নারী কোটা বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। অধিদফতর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগে নারী শিক্ষকের চেয়ে বেশি পুরুষ শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ার ব্যাখ্যাও দিয়েছে। ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-’১৮ এর প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলে সরকারী কোটাবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। অধিদফতরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) সোহেল আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল প্রকাশিত হয়। সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-’১৩ বিধি ৭(ক) অনুযায়ী কোন একটি উপজেলার মোট পদের ৬০ শতাংশ নারী, ২০ শতাংশ পোষ্য ও ২০ শতাংশ পুরুষ কোটা নির্ধারিত থাকে। আবার বিধি ৭(খ) অনুযায়ী নারী, পোষ্য ও পুরুষÑ এই তিন ধরনের কোটা পূরণের ক্ষেত্রে আবার চার ধরনের কোটা অনুসরণ করা হয়। এগুলো হলোÑ এতিমখানা নিবাসী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ৩০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ এবং আনসার ও ভিডিপি সদস্য ১০ শতাংশ। নারী, পোষ্য ও পুরুষ কোটায় এই চার ধরনের কোটা অনুসরণের পর প্রতিটিতে অবশিষ্ট ৪৫ শতাংশ মেধা কোটা থেকে পূরণ করার নিয়ম রয়েছে। অধিদফদতর ব্যথায় বলেছে, কোটায় উপযুক্ত প্রার্থী না পাওয়া গেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ’১৮ সালের ৫ এপ্রিল জারি হওয়া স্মারক ও শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালার বিধি ৭(১)(খ) অনুযায়ী নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সাধারণ মেধাক্রম থেকে পূরণ করা হবে। এবারের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিভিন্ন শ্রেণী-কোটায় নির্বাচনযোগ্য প্রার্থী না পাওয়ায় শূন্যপদগুলো সাধারণ প্রার্থীদের দিয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে মেধাক্রম অনুসারে পূরণ করা হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায় বিধিসম্মতভাবেই কিছু উপজেলায় নির্বাচিত পুরুষ প্রার্থীর সংখ্যা নির্বাচিত নারী প্রার্থীর চেয়ে তুলনামূলক বেশি হয়েছে। অধিদফতর বলেছে, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রকাশিত চূড়ান্ত ফল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি সহায়তায় উন্নত সফটওয়্যারের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে মানবীয় হস্তক্ষেপের কোন সুযোগ ছিল না। ব্যবহৃত সফটওয়্যারে সরকারী কোটাবিধি সঠিক ও যথাযথ অনুসরণ করা হয়েছে বিধায় প্রত্যেক প্রার্থী বিধি অনুযায়ী মূল্যায়িত হয়েছেন। এ বিষয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর আগে ১৫ জানুয়ারি ফল প্রকাশের পর সারাদেশে শিক্ষকদের নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হলেও দুই জেলায় এ কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। নিয়োগ কার্যক্রমে কোটা অনুসরণ না করার অভিযোগে আদালতে রিট দায়ের হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেন বলেন, নওগাঁ ও ভোলা জেলায় নিয়োগ কার্যক্রমে নারী-পুরুষ কোটা অনুসরণ হয়নি বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে। আদালতে এ বিষয়ে একটি রিট দায়ের হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাকে রিট শুনানির কাগজ তুলতে বলা হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে আদালতে জবাব দেয়া হবে। সচিব আরও বলেন, যেহেতু রিটে নওগাঁ ও ভোলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, এ কারণে এ দুটি জেলায় শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হবে। বাকি সব জেলায় ঘোষণা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে চূড়ান্তভাবে পাস করা প্রার্থীদের যোগদান ও পদায়নের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তিনি বলেন, নিয়োগ কার্যক্রমে সঠিকভাবে কোটা অনুসরণ করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নারী প্রার্থী না পাওয়ায় মেধা তালিকায় যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়েছে। তাই নিম্ন আদালতে আশানুরূপ রায় না হলে উচ্চ আদালতে আপীল করা হবে। এদিকে পাস করা শিক্ষক প্রার্থীদের শূন্যপদে ১৬ ফেব্রুয়ারি জেলা শিক্ষা অফিসে যোগদান করতে বলা হয়েছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি তাদের পদায়নের আদেশ জারি করা হবে। চূড়ান্ত নির্বাচিতদের ১২ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করা হবে। ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে ডাকযোগে প্রার্থীদের নিয়োগপত্র পাঠানো হবে। কোন প্রার্থীর নিয়োগপত্র জারি না হলে তাদের তালিকা ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে অধিদফতরে পাঠাতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।
×