ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের সম্মিলনে সঙ্গীতানুষ্ঠান

প্রকাশিত: ১১:১৯, ১৪ জানুয়ারি ২০২০

বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীদের সম্মিলনে সঙ্গীতানুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুরে সুরে সাজানো এক আয়োজন। আর সেই সুরের মাঝেই খুঁজে ফিরলেন স্রষ্টাকে। মঞ্চজুড়ে কয়েকটি ভাগে বসেছিলেন কণ্ঠশিল্পীরা। আর একপাশে একটি ক্যানভাসে চিত্রশিল্পী ছবি আঁকছিলেন মনভরে। কণ্ঠশিল্পীরা কণ্ঠ ছাড়তেই রঙিন হতে থাকল চিত্রশিল্পীর ক্যানভাস। তারপর একে একে পরিবেশিত হলো নানা রাগে নানা তালে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত। পরিবেশনাগুলোপ উপস্থাপন করলেন বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা। পিনপতন নীরবতায় তা উপভোগ করলেন দর্শকরা। ‘সঙ্গীতের মাধ্যমে ধর্মের মিলন’ প্রতিপাদ্যে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পশ্চিমবঙ্গের গবেষণামূলক সাংগীতিক প্রতিষ্ঠান নাদ। সোমবার শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও শিল্পকলা একাডেমি সঙ্গীতের এই আয়োজনের মূলে ছিল সঙ্গীতের মাধ্যমে ধর্মের মিলন। এই আয়োজনের শুরুতেই প্রধান ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে বিভিন্ন বাণী পড়ে শোনানো হয়। এরপর সঙ্গীতের মাধ্যমে ধর্মের মিলনের কথা গানে গানে ফুটে ওঠে। মূলত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতকে উপজীব্য করেই সব পরিবেশনা উপস্থাপিত হয়। এতে নাদের শিল্পীদের পাশাপাশি যন্ত্রসঙ্গীতে বাংলাদেশের শিল্পীরাও অংশগ্রহণ করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল। নাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এর প্রতিষ্ঠাতা আধিকারিক ঋত্বিক বন্দোপাধ্যায়। ভারতের শিল্পীদের মধ্যে সঙ্গীত পরিবেশন করেন আর্য শাওন ভট্টাচার্য, সুলতা ব্যানার্জী ঘোষ ও অরুণ কান্তি ঘোষ। গ্রন্থপাঠ করেন তৃণা ঘোষ। বাংলাদেশের নৃত্যশিল্পী ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের প্রভাষক মনিরা পারভীন নৃত্য পরিবেশন করেন। যন্ত্রবাদনে ছিলেন দেবু চৌধুরী ও অশোক কুমার সরকার। বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসবের একাদশ দিন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও প্রসারের মাধ্যমে শিল্প-সংস্কৃতি ঋদ্ধ সৃজনশীল মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ২১ দিনের ‘বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক উৎসব ২০২০’। সমবেত সঙ্গীত, যন্ত্রসঙ্গীত, ঐতিহ্যবাহী লোকজ খেলা, পালা, একক সঙ্গীত, বাউল সঙ্গীত, ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য, যাত্রা, সমবেত নৃত্য, এ্যাক্রোবেটিক, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের পরিবেশনা, পুতুল নাট্য, একক আবৃত্তি, শিশুদের পরিবেশনা, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সঙ্গীত ও নৃত্য, নাটকের কোরিওগ্রাফি, বৃন্দ আবৃত্তি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের পরিবেশনা, আঞ্চলিক ও জেলা ব্রান্ডিং বিষয়ক সঙ্গীত ও নৃত্য এবং জেলার ঐতিহ্যবাহী ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছে এই উৎসব। আর এসব সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞে অংশ নিচ্ছেন সারাদেশের ৬৪টি জেলা, ৬৪টি উপজেলা এবং জাতীয় পর্যায়ের পাঁচ হাজারের অধিক শিল্পী ও শতাধিক সংগঠন। এছাড়াও একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিদিন রাত ৮টায় থাকছে একটি লোকনাট্যের পরিবেশনা। সোমবার ছিল ২১ দিনের এই উৎসবের একাদশ দিন। যথারীতি জাতীয়সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে বিকেলে একাডেমির নন্দনমঞ্চে শুরু হয় এদিনের আয়োজন। এরপর এ্যাক্রোবেটিক শো পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের পর্বে দ্বৈতসঙ্গীত পরিবেশন করে সাফিন ও শৈলী। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির নিজস্ব শিল্পীরা। অনুষ্ঠানে আরও সঙ্গীত পরিবেশন করে পিপলস থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশনের প্রায় তিন শতাধিক শিল্পী। দলীয়আবৃত্তি পরিবেশন করে কথা আবৃত্তি সংগঠন। জেলা পরিবেশনা পর্বে নিজ নিজ জেলার ঐতিহ্য সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পিরোজপুর ও কক্সবাজার জেলার শিল্পীরা। সবশেষে রাত ৮টায় একাডেমির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে পুতুলনাট্য পরিবেশন করে দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী পুতুলনাট্য দল। ২৩ জানুয়ারি শেষ হবে ২১ দিনের এই উৎসব।
×