ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস মানুষকে আক্রান্ত করে না

প্রকাশিত: ১০:১৫, ৬ জানুয়ারি ২০২০

 সোয়াইন ফ্লু ভাইরাস মানুষকে আক্রান্ত  করে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সোয়াইন ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। রবিবার পাঠানো প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অত্যন্ত কম। কিন্তু সতর্ক থাকা জরুরী। সোয়াইন ফ্লু নামে কোন ভাইরাস বর্তমান বিশ্বে মানুষকে আক্রান্ত করে না। ২০০৯ সালে সারা পৃথিবীতে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী দেখা দিয়েছিল এবং ওই ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসকে সোয়াইন ফ্লু নামে অনেকে আখ্যায়িত করেন। পরবর্তীতে ২০১০ সালে মহামারী শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসকে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা নামে অভিহিত করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা জারি করে। ২০১১ সাল থেকে এই ভাইরাসটি মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা নামে পরিচিত। আইইডিসিআর’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডাঃ এ এস এম আলমগীর স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি সোয়াইন ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে নানা রকম সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) তথা ন্যাশনাল ইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টার (এনআইসি) এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন অনুভব করছে, যাতে সাধারণ জনগণ এ বিষয়ে কোন বিভ্রান্তিতে না পড়েন। বাংলাদেশের মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং এভিয়ানসহ অন্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের নজরদারিতে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে আইইডিসিআর। বাংলাদেশে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা মূলত শুরু হয় এপ্রিল মাসে এবং সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এর প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। বছরের অন্যান্য সময়ে এই সংখ্যা খুবই নগণ্য। বিশেষ করে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনসাধারণ এ রকম সম্ভাবনা দেখা দিলে জরুরী ভিত্তিতে যোগাযোগ ( করার অনুরোধ জানিয়েছে আইইডিসিআর। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জা সাধারণত ৪ থেকে ৫ দিনে এমনি ভাল হয়ে যায়। কিন্তু উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য কখনও কখনও মারাত্মক জটিলতা করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসের রোগ, কিডনি রোগ, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক লোকজন, ২ বছরের নিচে শিশুদের সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণদের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরী। বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে (আমেরিকা, ইউরোপে) মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ দেখা যাচ্ছে এবং এই মৌসুমে প্রবাস থেকে অনেকে দেশে বেড়াতে আসেন। এই সময়ে বিদেশ থেকে আসা প্রবাসীদেরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সাধারণ জনগণের জন্য আমাদের অনুরোধ- এই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম কিন্তু সতর্ক থাকা জরুরী। বিশেষ করে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জনসাধারণ এ রকম সম্ভাবনা দেখা দিলে জরুরী ভিত্তিতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। এই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আইইডিসিআর এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণে সতর্কতা সমূহের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আইইডিসিআর জানায়, হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় পরিষ্কার রুমাল-গামছা-কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিন। রুমাল-গামছা-কাপড় বা টিস্যু পেপার না থাকলে জামার হাতা-শাড়ির আঁচল দিয়ে নাক-মুখ ঢাকুন এবং ঘরে ফিরে ওই জামা-শাড়ি সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যেখানে-সেখানে কফ্-থুতু ফেলবেন না। ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যেখানে সেখানে না ফেলে ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন। হাঁচি-কাশির পর অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে দু’হাত ভাল করে ধুয়ে নিন। আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর অবশ্যই সাবান-পানি দিয়ে দু’হাত ভাল করে ধুয়ে নিন। জ্বর-সর্দি-কাশি হলে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি (পাঁচ বছরের নিচের শিশু, গর্ভবতী নারী, ৬৫ বছরের অধিক বয়স্ক ব্যক্তি এবং আগে থেকেই হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট অথবা অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন ঃ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্নায়ুর রোগ, ক্যান্সার ইত্যাদিতে ভুগছেন) যদি ফ্লু আক্রান্ত হন, জরুরী ভিত্তিতে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করুন।
×