ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক কলেজগুলোর আসন সংখ্যা কম

নিয়মিত শিক্ষার্থী অনিয়মিত হয় যেভাবে-

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯

নিয়মিত শিক্ষার্থী অনিয়মিত হয় যেভাবে-

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এমবিএ (মাস্টার্স অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন) চূড়ান্ত পর্বে নিয়মিত সেশনে নির্দিষ্ট কলেজে স্বল্প আসনের কারণে ভর্তি হতে পারেনি হাজার হাজার শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক কলেজগুলোতে অনার্স পাস করা শিক্ষার্থীর তুলনায় আসন সংখ্যা অনেক কম হওয়ায় এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বহীন নীতি নির্ধারকরা শিক্ষার্থীদের বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষা জীবনে এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত অন্ধকার করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ অভিভাবকদের। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অজ্ঞতা ও দায়িত্বহীনতার কারণেই শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোর পক্ষ থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনকে এমবিএ চূড়ান্ত পর্বের আসন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক কলেজের অধ্যক্ষরা কোন সাড়া পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। এদিকে, বিভিন্ন প্রেসক্লাবের সামনে উচ্চ শিক্ষা লাভের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেও টনক নাড়াতে পারেনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডীন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনের। শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হারুন অর রশীদকে সচেতন করতে পারেনি। শেষতক ভবিষ্যত জীবনের আশা-ভরসা হোঁচট খাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তহীনতার কারণে। এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ফয়জুল করিম জনকণ্ঠকে বলেন, নির্দিষ্ট কলেজে আসন সংখ্যা সীমিত হলে রিলিজ স্লিপের মাধ্যমে আসন খালি সাপেক্ষে অন্য কলেজে ভর্তি হতে হবে। চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজ থেকে অধ্যক্ষ কর্তৃক আসন বৃদ্ধির অনুরোধের চিঠি তিনি দেখেননি। উল্লেখ্য, চলতি সেশনে চট্টগ্রামের সরকারী কমার্স কলেজ থেকে প্রতিবছর আসন অনুযায়ী প্রিলিমিনারি থেকে মাস্টার্স শেষপর্ব হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে মোট ৪ শ’ শিক্ষার্থী অনার্স পাস করেছে। এছাড়াও ২০১২-২০১৩ এবং ২০১৩-২০১৪ সেশনে ডিগ্রী পাস কোর্স উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন কলেজ থেকে চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে এমবিএ শেষ পর্ব কোর্সে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন অনুযায়ী এমবিএ শেষপর্বে হিসাববিজ্ঞান শ্রেণীতে ৫৫০ আসন আর ব্যবস্থাপনা বিভাগের জন্য ৫৫০ আসন রয়েছে। অথচ আসন সঙ্কটের কারণে কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে একটু দেরি হলেই ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যদিকে, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা প্রত্যেকটি বিভাগে আরও ২৫০ আসন বাড়ানোর অনুরোধ জানালেও টনক নড়েনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের। গত ৩০ নবেম্বর এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বরাবর একটি চিঠি পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের সরকারী কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সাগর কান্তি দে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ শিক্ষা বর্ষে মাস্টার্স শেষ পর্ব (নিয়মিত) ভর্তির আবেদন অনলাইনে গ্রহণ করা হয়েছে গত ১১ নবেম্বর থেকে ২১ নবেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত। ১২ নবেস্বর থেকে ২৩ নবেম্বর পর্যন্ত কলেজ নিশ্চয়নের জন্য তিন শ’ টাকা জমা নেয়া হয়েছে। ২৪ নবেম্বর থেকে ২৭ নবেম্বর সোনালী সেবা স্লিপের মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থী থেকে দুই শ’ টাকা আদায় করা হয়েছে। এই সেশেনে শুধু ২০১৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৪ বছর মেয়াদী অনার্স বিষয়ভিত্তিক শতকরা ৪৫ ভাগ অথবা সিজিপিএ ২ দশমিক ২৫ প্রাপ্তরা আবেদনের যোগ্যতা রেখেছে।
×