ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিএনপিরও দায়িত্ব রয়েছে ॥ ড. রাজ্জাক

প্রকাশিত: ১১:২১, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিএনপিরও দায়িত্ব রয়েছে ॥ ড. রাজ্জাক

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৮ ডিসেম্বর ॥ কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, আওয়ামী লীগ সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে এটা ভাল কথা। বিএনপি এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক তা সবাই চায়। কিন্তু নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, সুন্দর এবং নিরপেক্ষ হয় সেক্ষেত্রে বিএনপিরও দায়িত্ব রয়েছে। আগামী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হবে এই প্রতিশ্রুতি আমি আপনাদের দিচ্ছি সরকারের পক্ষ থেকে। শনিবার দুপুরে টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারী মহিলা কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী আরও বলেন, প্রতিদিন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, বাংলাদেশে কোন নির্ভরযোগ্য সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হবে না। তাহলে তারা নির্বাচনে আসবে কেন। যাদের জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। রাজাকার, আলবদররা ত্রিশ লাখ মানুষ হত্যা করেছে। যারা দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জত নিয়েছে তারা আজ গণতন্ত্রের ছবক দেয়। আমরা নাকি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি না। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক দল। ক্যান্টনমেন্টে আপনাদের জন্ম। নীল কুঠির, লাল কুঠির ষড়যন্ত্র করে সেনাবাহিনীকে ব্যবহারসহ নানান রকম ক্ষমতার অপব্যবহার করে আপনারা হ্যাঁ, না ভোট করেছেন। আপনারা এদেশে মিডিয়া ক্যু করে নির্বাচন করেছেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় কারাগারে রয়েছেন। দুর্নীতির কারণেই আদালতে দোষী প্রমাণিত হয়েই কারাভোগ করছেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। সেই মহাসড়ককে বেগবান ও ত্বরান্বিত করতে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। টাঙ্গাইলের একটি অর্থনৈতিক জোন তৈরি হবে। সেই অর্থনৈতিক জোন দেশের অন্যতম জোন হিসেবে পরিচিত হবে। মন্ত্রী বলেন, দেশে এখনও কৃষির গুরুত্ব অনেক বেশি। বর্তমান সরকার কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। কৃষির যে অর্জন তা কোন জাদুর কাঠিতে অর্জন হয়নি। এখানে বর্তমান সরকারের অনেক অবদান রয়েছে। কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিকীকরণে যান্ত্রিকীকরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণের সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। কৃষিকে সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করতে যান্ত্রিকীকরণ কর্মকা-কে বেগবান করতে হবে। স্বাধীনতা-পরবর্তী দেশ ও দেশের কৃষির অবস্থা দেখে অনেকেই বলেছিলেন, বাংলাদেশ টিকবে না। সেই অবস্থার বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। জননেত্রীর নেতৃত্বে ও কৃষিবিদদের সহযোগিতায় আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। সারাবিশ্বে আমাদের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের বাজেটের আকার ও জিডিপি অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষির উন্নয়ন ও শিল্পায়ন পাশাপাশি চলতে হবে। দেশের উন্নয়নে দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন। শিক্ষার মান বিশ্বমানের করতে ও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে ভূমিকা রাখতে হবে। টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান, ছানোয়ার হোসেন এমপি, তানভীর হাসান ছোট মনি এমপি, সংরক্ষিত আসনের এমপি মমতা হেনা লাভলী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান ফারুক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন, কুমুদিনী সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল মান্নান, কলেজের প্লাটিনাম জয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক নিগার আফতাব প্রমুখ। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন, কুমুদিনী কলেজের শিক্ষক, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনাসভা শেষে ৭৫ পাউন্ড কেক কাটেন অতিথিবৃন্দ। এ সময় সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়। নাচ, গান এবং আড্ডায় মেতে ওঠেন তারা। পরে বিকেলে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে সকালে কলেজের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। উল্লেখ্য, দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা নারী শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে ১৯৪৩ সালে টাঙ্গাইল শহরে মায়ের নামে কুমুদিনী কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। নারীদের জন্য ১৪ দশমিক ১৩ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত বৃহত্তর ময়মনসিংহের এই কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণী দিয়ে। পরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণী চালু হয়। ১৯৭৯ সালে কলেজটি সরকারী করা হয়। বর্তমানে কলেজে ১৬টি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) এবং আটটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে।
×