মোঃ মামুন রশীদ ॥ মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে প্রতিযোগিতাটা জমে উঠেছিল তামিম ইকবালের। দুজনের সামনেই সুযোগ ছিল প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরের ইতিহাসে ২ হাজার রান পূর্ণ করার। চলতি বঙ্গবন্ধু প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) এক ম্যাচ খেলতে পারেননি তামিম অসুস্থতার কারণে। সেই সুযোগে সর্বাধিক রানের তালিকায় তাকে পেছনে ফেলেছিলেন মুশফিক। কিন্তু তামিম ফিরেই আবার ছাড়িয়ে গেলেন মুশফিককে। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে ২ হাজার রান পূর্ণ করলেন তিনি। কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে সোমবার ৩৪ রানের ইনিংস খেলেই আবার শীর্ষে উঠেছিলেন এবার ঢাকা প্লাটুনের জার্সিতে খেলা তামিম। মঙ্গলবার সিলেট থান্ডারের বিপক্ষে তাই ২ হাজার রান পূর্ণ করতে মাত্র ৩১ রানের প্রয়োজন ছিল তার। নিজের শহর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মাইলফলকটি পেরিয়েছেন তিনি। এই ম্যাচে তামিম ৪৯ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৬০ রানের দুর্দান্ত হার না মানা ইনিংস খেলে সেই মর্যাদাপূর্ণ ক্লাবের প্রথম সদস্য হয়েছেন। এখন বিপিএলের ইতিহাসে তামিমের রান ৬৩ ম্যাচে ২০২৯। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা মুশফিকের রান ৭৬ ম্যাচে ১৯৩৭।
বঙ্গবন্ধু বিপিএল দিয়েই টানা ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙ্গে বেরিয়ে আসেন তামিম। ঢাকায় প্রথম ধাপের ৩ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে ৫, ৭৪ ও ৩১ রান। খুব কাছাকাছি চলে এসেছিলেন প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলের ইতিহাসে ২ হাজার রান স্পর্শ করার। কিন্তু হঠাৎ ভাইরাস জ্বরে চট্টগ্রাম পর্বে খেলতে দলের সঙ্গেই আসতে পারেননি। হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় জ্বর নিয়ে। সঙ্গে ছিল কুঁচকির ব্যথা। তাই একটি ম্যাচ খেলতে পারেননি। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে তার পেছনে থাকা মুশফিক ৫১ বলে ৯৬ রানের ক্যারিয়ারসেরা টি২০ ইনিংস খেলেন চট্টগ্রাম পর্বের প্রথম দিনেই। খুলনা টাইগার্সের এ অধিনায়ক পরের দুই ম্যাচে অপরাজিত ১৭ ও ১২ রানের ইনিংস খেলে তামিমের রান (১৯৩৫) পেরিয়ে যান। অর্থাৎ প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ২ হাজার রান থেকে তখন মুশফিক ৬৪ রান দূরে। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ১ রানেই সর্বশেষ ম্যাচে সাজঘরে ফিরেছেন। একই দিনে (সোমবার) খেলতে নেমে তামিম ৩৪ রানের একটি ইনিংস উপহার দেন এবং মুশফিককে টপকে আবার শীর্ষস্থান দখল করেন। খুলনার খেলা চট্টগ্রাম পর্বে শেষ হওয়াতে মঙ্গলবার তামিমের দিকেই নজর ছিল সবার। এদিন সিলেটের বিপক্ষে চট্টগ্রামের ম্যাচটি দুপুরে শুরু হয়। সিলেটের করা ১৭৪ রানের ইনিংস টপকানোর জন্যও তামিমের ব্যাটের দিকে তাকিয়ে ছিল ঢাকা প্লাটুন।
শুরুতেই সঙ্গী এনামুল হক বিজয়কে নিয়ে দারুণ ব্যাটিং করেন তামিম। ৫৮ রানের উদ্বোধনী জুটির পর বিজয় সাজঘরে ফেরেন ৩২ রান করে। এরপর মেহেদি হাসানকে সঙ্গে নিয়ে চলতি আসরের দ্বিতীয় অর্ধশতক তুলে নেন তামিম ৩৯ বল মোকাবেলায়। এর আগেই বিপিএলের ইতিহাসে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন ৩১ রান করতেই। প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে দুই হাজার রানের ক্লাব খুলেছেন তামিম। এই রান করতে তার বিপিএলে খেলতে হয়েছে ৬৩ ম্যাচ। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
এখন ৩৬.৮৯ গড়ে ১৮টি অর্ধশতক ও ১টি সেঞ্চুরিতে তামিমের রান ২০২৯। তার পেছনে থাকা মুশফিকের রান ৭৬ ম্যাচে ৩৩.৯৮ গড়ে ১৯৩৭। তৃতীয় অবস্থানে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ৭৮ ম্যাচে ২৫.৬৮ গড়ে ১৬৯৫। যে কোন পর্যায়ের টি২০ ম্যাচেও বাংলাদেশের পক্ষে ১৯৫ টি২০ খেলে সর্বাধিক ৫৩৬৯ রান তামিমের। সেক্ষেত্রে তার পেছনে সাকিব আল হাসান ৩০৮ টি২০ খেলে ৪৯৭০ রান করে।