ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৪ সদস্য গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১৩:২৩, ২ ডিসেম্বর ২০১৯

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৪ সদস্য গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। শনিবার রাতে তাদেরকে আটক করা হয়। তারা হলো- মোঃ মাসুম মিয়া মাসুম (৩০), মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক এমরান (১৯), মোঃ রাকিবুল হাসান সিয়াম (১৮) ও মোঃ আব্দুল্লাহ আল রোমান রোমান খান (২২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সক্রিয় সদস্য বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করে। তাদের কাছ হতে জঙ্গী সংগঠনের বিভিন্ন ধরনের উগ্রবাদী বই, লিফলেটসহ উগ্রবাদী ডিজিটাল কনটেন্ট ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ সম্পর্কে র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত জঙ্গী সদস্য মোঃ মাসুম মিয়া মাসুমের বাড়ি কুমিল্লায়। সে বর্তমানে ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রির কাজ করে। ফেসবুকের মাধ্যমে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষস্থানীয় নেতা ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃত আমির হোসেনের মাধ্যমে পরিচিত হয়। পরে সে জঙ্গী সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে অনলাইনে বিভিন্ন জঙ্গীবাদী আইডি থেকে জঙ্গী সংক্রান্ত পোস্ট ডাউনলোড করে এবং অন্য জঙ্গীর সঙ্গে পরিচয় হয়। সে জঙ্গী সংগঠনে বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে আসছে। সাতক্ষীরা অঞ্চলের শীর্ষ জঙ্গী ইতোমধ্যে গ্রেফতারকৃত আমীর হামজার কাছ থেকে জঙ্গী সংগঠনের সক্রিয়তা সম্পর্কে জানতে পারে। সে অনলাইনে শীর্ষ জঙ্গীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। তাদের সঙ্গে নিয়মিত মিটিংয়ের আয়োজন করে। সে প্রায় ৩ বছর ধরে এই সংগঠনে জড়িত। গ্রেফতারকৃত জঙ্গী সদস্য মোঃ আবু বক্কার সিদ্দিক এমরান ফাজিল প্রথম বর্ষের ছাত্র। সে বাংলাদেশী বীর মুজাহিদ নামক এক ব্যক্তির সঙ্গে এ্যাপসের মাধ্যমে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম সম্পর্কে প্রথম জানতে পারে এবং তাদের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে এ দলে যোগদান করে। সে প্রায় দু’বছর ধরে এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন এ্যাপস যেমন টেলিগ্রাম, টরে, মেসেঞ্জার ও ইমো ব্যাবহার করে বিভিন্ন ছদ্মনামে অনলাইনে বিভিন্ন রকম জঙ্গীবাদী কার্যক্রম পরিচালন করে আসছিল। সে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে পরিচিত হয়। মোঃ রাকিবুল হাসান সিয়াম মুন্সীগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে। অপর এক জঙ্গীর সঙ্গে ফেসবুক, মেসেঞ্জারের মাধ্যমে তার প্রথম পরিচয় হয়। পরবর্তিতে জঙ্গী সংগঠনের বিভিন্ন আইডির সঙ্গে পরিচয় হয় এবং জঙ্গীবাদী বিভিন্ন রকম কার্যকলাপে আগ্রহী হয়ে উঠে। পরে সাতক্ষীরা অঞ্চলের শীর্ষস্থানীয় এক জঙ্গীর মাধ্যমে জঙ্গীবাদে দীক্ষিত হয়। মোঃ আব্দুল্লাহ আল রোমান রোমানও আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের একজন সক্রিয় সদস্য। আনসারুল্লাহ বাংলাটিম পরিচালনা ও ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতি মাসে চাঁদা দিয়ে আসছে। সে গাজীপুরের একটি কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্র। ছাত্র জীবনে সে হরকাতুল জিহাদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। হরকাতুল জিহাদ নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে সে তার সক্রিয়তা কমিয়ে দেয়। কিন্তু সব সময় সে সশস্ত্র উগ্রবাদ এ অংশগ্রহণে আগ্রহী ছিল। আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের শীর্ষস্থানীয় এক জঙ্গী তাকে দাওয়াত দেয় এবং বিভিন্ন বই লিফলেট ও ভিডিও সরবরাহ করে। তার মাধ্যমে সাতক্ষীরা অঞ্চলের অন্যতম জঙ্গী সদস্য মোঃ ইকরামুল ইসলাম যার সাংগঠনিক নাম মুত্তাকিন ওরফে আমীর হামজা ওরফে সালাউদ্দিন আইয়ুবীর সঙ্গে পরিচয় হয়। গ্রেফতাকৃতদের ভাষ্যমতে- আনসারুল্লাহ বাংলা টিম গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিপক্ষে। তাদের মতে এই ব্যবস্থা তাগুতি বা বাতিল। তারা কথিত ইসলামি শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায়।
×