ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চার মাস ধরে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত

সঞ্চালন লাইনের অভাবে উৎপাদনে যেতে পারছে না পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ৫ নভেম্বর ২০১৯

সঞ্চালন লাইনের অভাবে উৎপাদনে যেতে পারছে না পায়রা বিদ্যুত কেন্দ্র

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ চার মাস ধরে উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত বিদ্যুত কেন্দ্র। কিন্তু সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট। বিদ্যুত সচিব বলছেন, কেন্দ্রের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগোতে পারেনি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজ। আর একজন বিশেষজ্ঞ মনে করেন, এটি বিদ্যুত খাতের অব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্ত। গ্রামীণ জনপদের নিকষ আঁধারে পায়রা মেগা বিদ্যুত কেন্দ্র যেন এক উজ্জ্বল রাতের নাম। যার আলোয় আলোকিত হতো জনপদ থেকে জনপদ সেটি এখন যেন বড্ড একা। পায়রা মেগা বিদ্যুত কেন্দ্র। ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুত কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি উৎপাদনের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে সেই জুলাই মাস থেকে। কোন বিদ্যুত কেন্দ্র সময়মতো শেষ হওয়ার একটি দৃষ্টান্তও বটে পায়রা। যেটি যৌথভাবে নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ ও চীন। পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শাহ আব্দুল মওলা বলছেন, শুধু আমরা গ্রিড লাইনের অপেক্ষায় আছি। ৪০০ কেবি ট্রান্সমিশন লাইন হলেই সিনক্রোনাইজ করে কিছু টেস্ট করতে হবে। তো এই ৬ শতাংশের মতো কাজ আমার বাকি আছে। একটি কেন্দ্র চালু হলে সেখান থেকে গ্রিডে বিদু্যুত দিতে প্রয়োজন সঞ্চালন লাইন। পায়রা থেকে সেই লাইন এখনও শেষ করতে পারেনি পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি। তাই দুই দফা পিছিয়ে উৎপাদনে আসার নতুন তারিখ ঠিক করেছে পায়রা। বিদ্যুত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলছেন, মোটামুটিভাবে নিশ্চিত হতে পারি যে আমরা আগামী জানুয়ারির ১৫ তারিখ থেকে করতে পারব। কয়েক দিন আগে কেন্দ্রটি পরিদর্শনে এসে, বিদ্যুত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ব্যাখ্যা দিলেন ঠিক কি কারণে এখনও শেষ হয়নি সঞ্চালন লাইনের কাজ। তিনি বলেন, এখনে কিছু ব্যর্থতা তো অবশ্যই আছে, তবে এর সঙ্গে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে ট্রান্সমিশন লাইনগুলো কিন্তু অনেক লম্বা, ১০০-১৫০ কিলোমিটার। জমিটাও একটা বিশাল ব্যাপার থাকে। জানুয়ারিতে চালুর নতুন তারিখ ঠিক থাকলেও, ৬ মাস বসে থাকল পায়রার ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি। সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে এতে হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি রাষ্ট্র। একজন বিশেষজ্ঞ সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিশেষ সহকারী ম. তামিম বলছেন, সময়মতো সঞ্চালন লাইন না হওয়া একধরনের অব্যবস্থাপনা। তিনি আরও বলেন, জ্বালানি সরবরাহ, পাওয়ার তৈরি করা এবং সেই পাওয়ার ইভ্যাকুয়েট করে ক্লাইন্টদের কাছে নিয়ে যাওয়া। এই পুরো ব্যাপারটাই হচ্ছে একটা চেইনের মতো। তো এখানে যে কোন একটা লিঙ্ক যদি মিসিং থাকে তাহলেই দেলিভারি দেয়া যাবে না। আমদানি করা কয়লা দিয়ে প্রথমবারের মতো বিদ্যুত উৎপাদন করবে পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্র। মাত্র ৪ বছরে নির্ধারিত সময় মেনে বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত এই পায়রা তাপ বিদ্যুত কেন্দ্রটি। কিন্তু এখান থেকে উৎপাদিত বিদ্যুত জাতীয় গ্রেডে দেয়ার জন্য যে সঞ্চালন লাইনের প্রয়োজন সেটি এখনও তৈরি হয়নি। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাষ্ট্র।
×