ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

নুসরাত হত্যা মামলা উচ্চ আদালতেও দ্রুত নিষ্পত্তি হবে

প্রকাশিত: ১০:৩২, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

 নুসরাত হত্যা মামলা উচ্চ আদালতেও  দ্রুত নিষ্পত্তি হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চাঞ্চল্যকর নুসরাত হত্যা মামলার রায় উচ্চ আদালতে (হাইকোর্ট) বহাল থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। শুক্রবার গুলশানের নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আশা ব্যক্ত করেন। আইনমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয় দু’একজন বাদে সবার রায়ই বহাল রাখবে হাইকোর্ট। আমরা আশা করব নিম্ন আদালতে বিচার শেষ হওয়ার পর উচ্চ আদালতে গেলে সেখানেও মামলার কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে নুসরাত হত্যাকান্ডে যারা অংশগ্রহণ করেছিল তাদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা দেবে। মামলায় যাতে কম সময় লাগে সে বিষয়ে এ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলব। নুসরাত পরিবারের নিরাপত্তা বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, যতদিন নিরাপত্তা দেয়ার প্রয়োজন মনে করব ততদিন তাদের নিরাপত্তা দেয়া হবে। কেউ যদি তার পরিবারকে হুমকি-ধামকি দেয় তাদেরও আইনের আওতায় এনে সাজা দেয়া হবে। আইনমন্ত্রী বলেন, এ মামলায় ৯২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ জন দোষ স্বীকার করেছেন। মামলায় সাজা পাওয়াদের মধ্যে দু’নারী রয়েছেন, তাদের মধ্যে ১ জনের বাচ্চাও রয়েছে। উচ্চ আদালত বিশেষভাবে বিবেচনা করলে তাদের সাজা কম হতেই পারে। ৭ কার্যদিবসের মধ্য নিম্ন আদালতের সব রেকর্ড উচ্চ আদালতে যাবে। আইনমন্ত্রী বলেন, নুসরাত জাহান রাফি হত্যা মামলার রায়ের মাধ্যমে এ ঘৃণ্য, নিকৃষ্ট হত্যাকান্ডে যারা জড়িত ছিলেন বিজ্ঞ আদালত তাদের ফাঁসির দন্ডে দন্ডিত করেছেন। এ মামলার ১৬ জন অপরাধীর প্রত্যেকেই যড়যন্ত্র এবং এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার কারণে তাদের সর্বোচ্চ সাজা দেয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ে মামলার রায় দেয়ার বিষয়ে কোন ক্যারিশমা কাজ করেছে কিনা জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, এখানে ক্যারিশমার কি আছে? বিজ্ঞ আদালত এটার গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছেন এবং বুঝতে পেরেছেন যে দেশের জনগণ ও জনগণের নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান সকল আইনী প্রয়োজন সম্পন্ন করে মামলাটা দ্রুত নিষ্পত্তি করা হোক। সংশ্লিষ্টরা যখন মামলা শুরু করেছেন, তখন কাউকে কোন সময় না দিয়ে মামলাটা চালিয়ে গেছেন। এখন উচ্চ আদালতেও এ মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা হবে। যত কম সময়ে পারা যায় মামলা হাইকোর্টে বিচারের জন্য রেডি করব। দ্রুত বিচার সম্পর্কে তিনি বলেন, একটা কথা আছে ‘জাস্টিস ডিলেইড জাস্টিস ডিনাইড’। পাশাপাশি আরেকটি কথা আছে ‘জাস্টিস হারিড, জাস্টিস বারিড’। কুমিল্লার তনু আলোচিত তনু হত্যা মামলার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তনু হত্যা মামলায় এখনও চার্জশীট দাখিল করা হয়নি। পুলিশ তদন্ত করে চার্জশীট দিলে মামলার বিচারের জন্য এগোনো যাবে। এর আগে আমাদের হাতে কিছু নেই। আলোচিত সাগর-রুনি হত্যা মামলার বিচার আটকে আছে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, মামলার অভিযোগপত্র এখনও দাখিল হয়নি, সে মামলা কীভাবে তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলবে। ১৬ জনের সবার ফাঁসির রায় উচ্চ আদালতে কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আইনে যেটা বলে এ রকম হত্যাকা-ে সবচেয়ে আগে ক্যাপিটাল পানিশমেন্টের কথা চিন্তা করতে হবে। যদি কোন ‘মিটিগেটিং সারকামস্ট্যান্সেস’ থাকে তাহলে যাবজ্জীবনের কথা চিন্তা করা হয়। নয় বিচারপতি নিয়োগে বিএনপির পক্ষ থেকে রাজনৈতিক বিবেচনার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে মন্ত্রী বলেন, যাদের বিচারপতি করা হয়েছে, তাদের একজন হলেন সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ এবং প্রত্যেককে তার যোগ্যতা অনুসারে বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিএনপির গাত্রদাহ হচ্ছে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা চুরি করে এখন জেলে গেছেন, এজন্য বিচারকের দোষ, এ দোষ দিয়ে তো হবে না, উনারা তো এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়াকে বের করতে পারছে না, তাহলে কি হাইকোর্টের দোষ? নুসরাত হত্যা মামলার রায় দেয়ায় বিজ্ঞ আদালত ও পাবলিক প্রসিকিউটরকে ধন্যবাদ জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, তারা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে যথাযথ মর্যাদায় নুসরাত হত্যা মামলাটির বিচারকার্য শেষ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। প্রধানমন্ত্রী বিচারহীনতার সংস্কৃতির দেশকে আইন প্রয়োগের সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে এনেছেন। নুসরাত হত্যা মামলার রায় তার একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। আমরা আইনের শাসনে বিশ্বাস করি।
×