ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর

প্রকাশিত: ১১:০৪, ১ অক্টোবর ২০১৯

নুসরাত হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর

নিজস্ব সংবাদদাতা, ফেনী, ৩০ সেপ্টেম্বর ॥ ফেনীর সোনাগাজীতে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার রায় ২৪ অক্টোবর ধার্য করেছে আদালত। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। সোমবার রাষ্ট্রপক্ষ বাদী পক্ষের আইনজীবীগণ ও আসামি পক্ষের আাইনজীবীগণ আদালতে তাদের যুক্তিতর্কের প্রতিউত্তর শেষ করেন। এরপর বিচারক রায় ঘোষণার দিন ঘোষণা করেন। মামলার বিচার শুরুর ৬২ কার্যদিবসে মামলা নিষ্পত্তির সকল আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শেষ হয়েছে। সকালে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নুসরাত হত্যা মামলার ১৫ আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। কামরুন নাহার মনি সন্তান জন্ম দেয়ার কারণে হাসপাতালে থাকায় আদালত তার হাজিরা মওকুফ করেছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আক্রামুজ্জামান ও বাদী পক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু আদালতে আসামি পক্ষের যুক্তিতর্কের আইনগত প্রতিউত্তর উপস্থাপন করেন যে- কেরোসিন দাহ্য পদার্থ যা উচ্চ আদালতের ডিসিশনে রয়েছে। একইভাবে যড়যন্ত্র করার বিষয়, ঘটনার সহযোগিতা করার বিষয়, হত্যার মোটিভ, ডায়িং ডিক্লারেশন, ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী, অডিও ভিডিও সাক্ষ্য হিসেবে গ্রহণসহ আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক খ-ন করে আইনগত প্রতিউত্তর উপস্থাপন করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ আদালতের বিভিন্ন মামলার ডিসিশন, রায়, ও নির্দেশনার ফটোকপি আদালতে জমা দেন। একইভাবে আসামি পক্ষের আইনজীবী কামরুল হাসান ও গিয়াস উদ্দিন নান্নু তাদের আইনগত প্রতিউত্তর উপস্থাপন করেন। গত ২৯ মে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ৮০৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ইন্সপেক্টর মোঃ শাহ আলম। চার্জশীটভুক্ত ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। ৩০ মে মামলাটি ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। ১০ জুন আদালত মামলাটি আমলে নিলে শুনানি শুরু হয়। ২০ জুন অভিযুক্ত ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারিক আদালত। এরপর ২৭ ও ৩০ জুন মামলার বাদী ও নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানকে জেরার মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। এরপর ৪৭ কার্য দিবসে মোট ৯২ সাক্ষীর মধ্যে ৮৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ৬ এপ্রিল সকালে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত আলিমের আরবী প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় গেলে দুর্বৃত্তরা তাকে ডেকে কৌশলে মাদ্রাসার ছাদে নিয়ে যায়। পরে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় দগ্ধ নুসরাত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাঁচ দিন পর গত ১০ এপ্রিল রাতে মারা যায়। পরদিন ১১ এপ্রিল বিকেলে সোনাগাজীতে তার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে প্রধান আসামিসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান। পিবিআই ও পুলিশ এ মামলায় ২১ জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে হত্যায় সরাসরি জড়িত ৫ জনসহ ১২ আসামি আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। এ মামলায় আটক থাকা চার্জশীটের বাইরের ৫ জনকে বিচারিক আদালত মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেয়।
×