ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে যাওয়া শিশুর মুখে হাসি ফুটছে

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে যাওয়া শিশুর মুখে হাসি ফুটছে

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ, ৩ সেপ্টেম্বর ॥ জন্মের পরই নির্মমতার শিকার হতে হলো ফুটফুটে এই শিশুটিকে। চোখ মেলে ভাল করে পৃথিবীর আলো দেখার আগেই যেন অন্ধকার গ্রাস করে নেয় তার চারপাশ। মায়ের কোলে পরম মমতায় হেসেখেলে সময় কাটানোর কথা থাকলেও এখন হাসপাতালের প্রতিকূল পরিবেশে থাকতে হচ্ছে নিষ্পাপ শিশুটিকে। স্বজনরা মাত্র ১২-১৩ দিনের এ ছেলে শিশুটিকে হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে পালিয়ে গেছে। তবে অন্য মানুষের ভালবাসায় প্রাণে বেঁচে গেছে ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার শিশুটি। কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সিঁড়ি থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। আনুমানিক ১২-১৩ দিনের এ ছেলে শিশুটিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডাক্তার আর নার্সদের চিকিৎসা আর সেবায় সুস্থ হয়ে উঠেছে শিশুটি। তাকে দত্তক নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন। এদিকে জন্মের পরই নির্মমতার শিকার শিশুটিকে কারও কাছে দত্তক দেয়া হবে, না-কি তাকে ঢাকার শিশু নিবাসে পাঠানো হবে তার নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে সমাজসেবা অধিদফতর। গত ২৫ আগস্ট বিকেলে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সিঁড়ির ওপর নবজাতক এ শিশুটিকে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। সেই থেকে তার সময় কাটছে হাসপাতালে। হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে নার্স আর আয়াদের পরম মমতায় আস্তে অস্তে হাসি ফুটছে শিশুটির মুখে। চিকিৎসকরা জানায়, শিশুটি বর্তমানে সুস্থ আছে। কোন অভিভাবক না থাকায় সমাজসেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে তাকে নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ রমজান মাহমুদ গণমাধ্যমকে জানান, সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা শিশুটিকে বাড়তি নজরদারিতে রেখেছেন। বিষয়টি ইতোমধ্যে পুলিশ ও সমাজসেবা বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে। জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক কামরুজ্জামান খান জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চিঠি পাওয়ার পর শিশুটিকে দত্তক দেয়া কিংবা ঢাকার শিশুমণি নিবাসে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পেতে কিশোরগঞ্জের ১নং আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালত সিদ্ধান্ত দিলে সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×