ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সুইসগেট নির্মাণে ধীরগতি

জোয়ারেই ডুবে যায় বাণিজ্যপাড়া চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৯:১৯, ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯

জোয়ারেই ডুবে যায় বাণিজ্যপাড়া চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বৃষ্টির প্রয়োজন পড়ে না, জোয়ারের পানিতেই প্লাবিত হয়ে যায় চট্টগ্রাম মহানগরীর অনেক এলাকা। বিশেষ করে দেশের ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ এবং আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকায় জনভোগান্তি প্রায় সারা বছরই। এতে স্থবিরতা দেখা দেয় ব্যবসা-বাণিজ্যে এবং অধিবাসীরা পড়েন অসহনীয় দুর্ভোগে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, জোয়ারের পানি ঢুকে যায় দোকান ও গুদামগুলোতে। পণ্য রক্ষা করতে প্রবেশ পথে বাধ এবং মেঝে উঁচু করেও রক্ষা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে জোয়ারের পানির উচ্চতা। নিচু সড়ক তলিয়ে যাওয়া এখন স্বাভাবিক চিত্র। বিশেষ করে দুপুরের পর বিকেলে বৃষ্টি ছাড়াই সড়কে থৈ থৈ অবস্থা। আর জোয়ারের সময় যদি হালকা বৃষ্টি হয় তাহলে তো সর্বনাশের ষোলকলা। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) গত বছরের জুন মাসে চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনায় উদ্বোধন করে স্লুইচগেট। জোয়ারের পানিতে আর এই বাণিজ্যিক এলাকা প্লাবিত হবে না, এমনই বলা হয়েছিল। কিন্তু কাজ উদ্বোধন হলেও নির্মাণ কাজে ধীরগতি। ফলে সেই দুর্ভোগ কাটেনি। প্রতিবছর জোয়ারের উচ্চতা বাড়তে থাকায় পানিও বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই ডুবে যাচ্ছে চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ ও আছাদগঞ্জের সড়ক ও নিচু এলাকা। খালের দুপাড় এখনও দখলমুক্ত করা যায়নি। ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে বাড়ানো হয়নি কর্ণফুলী নদীর পানি ধারণক্ষমতা। চট্টগ্রাম মহানগরীর আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। একদা সবচেয়ে অভিজাত এ আবাসিক এলাক এখন পরিত্যক্ত হওয়ার পথে। চওড়া সড়কের দু’পাশে আধুনিক নক্সার অনেক ভবন রয়েছে ওই এলাকায়। কিন্তু প্রতিদিনই বিকেলের দিকে সড়কগুলো ডুবে থাকে পানিতে। অধিকাংশ বাড়ির নিচতলায় পানি। উপরতলা বাসযোগ্য থাকলেও তাতে প্রবেশের সুযোগ নেই সড়ক ও গ্রাউন্ডফ্লোর প্লাবিত থাকার কারণে। অনেকেই নিজ মালিকানার বাসা ছেড়ে থাকছেন অন্যত্র ভাড়া বাড়িতে। নিজের সেই বাড়ি ভাড়াও দিতে পারছেন না বাস অযোগ্য হয়ে যাওয়ার কারণে। মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬শ’ কোটি টাকার একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলমান রয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। প্রকল্পের আওতায় রয়েছে নগরীর সব খাল উদ্ধার, পলি উত্তোলন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, খালের মুখে স্লুইসগেট নির্মাণ, পুনরায় যেন দখল হয়ে না যায় সে জন্য খালের দু’পাড়ে রিটেনিং ওয়াল এবং ওয়াকওয়ে নির্মাণ। চট্টগ্রাম নগরবাসী এখন চেয়ে আছে সেই প্রকল্পের পুরো বাস্তবায়নের দিকে।
×