ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

সঙ্গী হবে ঈদ আনন্দের

জাদুঘর চিড়িয়াখানা থেকে পার্ক উদ্যান সিনেমা হল- সব প্রস্তুত

প্রকাশিত: ১০:২৯, ১০ আগস্ট ২০১৯

জাদুঘর চিড়িয়াখানা থেকে  পার্ক উদ্যান সিনেমা  হল- সব প্রস্তুত

মোরসালিন মিজান ॥ আরও একটি ঈদ। এবার ঈদ-উল-আজহা। বড় উপলক্ষ সামনে রেখে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ছুটির দিনগুলো দারুণ আনন্দে কাটাতে চান রাজধানীবাসী। আর এ হাসি আনন্দের সঙ্গী হবে বিনোদনকেন্দ্রগুলো। কেউ থিমপার্ক বা চিড়িয়াখানা ঘুরে বেড়াবেন। কেউ যাবেন জাদুঘর পরিদর্শনে। সিনেমা হলে ভিড় বাড়বে। নতুন নতুন রেস্তরাঁয় বসে চলবে গল্প আড্ডা। সবুজ উদ্যান, খোলা প্রান্তর এবং প্রত্নস্থাপনাগুলো ঘিরেও দেখা দেবে প্রাণচাঞ্চল্য। সেভাবেই নেয়া হয়েছে প্রস্তুতি। জাতীয় জাদুঘর ॥ ঈদের ছুটিতে খোলা থাকবে জাতীয় জাদুঘর। ঢাকার প্রাণকেন্দ্র শাহবাগে অবস্থিত এ জাদুঘর অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এখানে বর্তমানে ৯২ হাজারের বেশি নিদর্শন রয়েছে। চারতলা ভবনের তিনটি ফ্লোর। ৪৫টি গ্যালারি। ঈদেরদিন সোমবার সবক’টি গ্যালারি খোলা রাখা হবে। বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। ঈদের পরদিন মঙ্গলবারও জাদুঘর খোলা থাকবে। বুধবার থেকে চলবে স্বাভাবিক রুটিনে। সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পরিদর্শনের সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। কথা প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক রিয়াজ আহম্মদ বলেন, গত ঈদে একদিনে সর্বাধিক ৯ হাজার ৬শ’ ৬৭ জন দর্শনার্থী জাদুঘর পরিদর্শন করেছেন। এবার সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করছি আমরা। ঈদে শিশু কিশোর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিনা টিকেটে জাদুঘর পরিদর্শনের সুযোগ থাকবে বলেও জানান তিনি। জাতীয় চিড়িয়াখানা ॥ ঈদের ছুটিতে বড় ভিড় পরিলক্ষিত হয় জাতীয় চিড়িয়াখানায়। ছোটরাতো বটেই, বড়রাও বিচিত্র প্রাণী দেখে সময় কাটান এখানে। উপভোগ করেন। চিড়িয়াখানার কিউরেটর এসএম নজরুল ইসলাম জানান, এবারও ঈদের ছুটিতে খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। সাধারণ সময়ে ১০ হাজার থেকে ৪০ হাজার দর্শনার্থী আসেন। ঈদে সেটি বেড়ে দেড় থেকে দুই লাখ হয়ে যায়। সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। ঈদের ছুটিতে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে চিড়িয়াখানা। শিশুমেলা ॥ ঢাকার শিশুদের খুব প্রিয় জায়গা শিশুমেলা। শ্যামলীর এই শিশুরাজ্য ঢাকা উত্তর সিটি সিটি কর্পোরেশনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। আগারগাঁও, মিরপুর, মোহাম্মদপুর এলাকার শিশুকিশোরদের প্রধানতম বিনোদনকেন্দ্র বলা যায় এটিকে। এখানে আছে ৪০টির মতো রাইড। পরিবারের সকলের চড়ার মতো আছে ১২টি রাইড। বাকিগুলো শিশুদের। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের প্রথম সাতদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে শিশুমেলা। লালবাগ কেল্লা ॥ ঈদে ঘুরে বেড়ানোর আরেকটি সুন্দর জায়গা লালবাগ কেল্লা। মুঘল আমলে নির্মিত দুর্গ দেখতে ভিড় করবেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। কেল্লার কাস্টডিয়ান হালিমা আফরোজ জানান, ঈদের ছুটিতে হাজার হাজার মানুষ ঐতিহাসিক প্রত্ন স্থাপনা দেখতে আসেন। গত ঈদে একদিনে ১৬ হাজারের বেশি দর্শনার্থী এসেছিলেন। সংখ্যাটি মাথায় রেখেই প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। আহসান মঞ্জিল ॥ আহসান মঞ্জিল ঘিরেও কৌতূহলের শেষ নেই। পুরান ঢাকার সদরঘাটে অবস্থিত প্রাসাদটি অন্য অনেক স্থাপনা থেকে আলাদা। আকর্ষণীয়। ঈদে ঢাকার নওয়াবদের আবাসিক প্রাসাদ ও জমিদারির সদর কাচারি দেখতে ভিড় করবেন বহু মানুষ। আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের ডেপুটি কিপার ইলিয়াস খান জানান, ঈদের ছুটিতে যথারীতি খোলা থাকবে আহসান মঞ্জিল। সাধারণ দিনগুলোতে এখানে আসেন দেড় শ’ থেকে ৩শ’ দর্শনার্থী। ঈদের ছুটিতে সেটি বেড়ে হয় ৭ হাজার থেকে ৮ হাজার। দর্শনার্থীদের কথা বিবেচনায় রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ফ্যান্টাসি কিংডম ॥ থিমপার্ক ফ্যান্টাসি কিংডম ঢাকার বাইরে হলেও, এ নিয়ে রাজধানীবাসীর বিপুল আগ্রহ। এবারের ঈদেও বহু মানুষ সপরিবারে আশুলিয়ায় যাবেন। সেখানে অবস্থিত ফ্যান্টাসি কিংডমে আনন্দঘন সময় কাটাবেন। পার্কের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের প্রথম সাতদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ফ্যান্টাসি কিংডম। ওয়েভপুল, লেজি রিভার, টিউব স্লাইড, ওয়াটারপুলসহ বিভিন্ন রাইডে চড়ে আনন্দঘন সময় কাটাতে পারবেন দর্শনার্থীরা। নন্দন পার্ক ॥ নন্দন পার্কও ঢাকার বাইরে। তবে ঈদের ছুটিতে বহু মানুষ সেখানে যান। খুবই জনপ্রিয় এই থিমপার্ক। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের দিন সকাল থেকেই খোলা থাকবে পার্ক। ওয়াটার ওয়ার্ল্ড ও ড্রাই পার্কের সব রাইড ঈদে চালু থাকবে। ঈদে রাজধানীর জনপ্রিয় ফুডকোর্ট ও রেস্তরাঁগুলোও খোলা থাকবে। সিনেমা হলে মুক্তি পাবে নতুন ছবি। বসুন্ধরা সিটি শপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত স্কয়ারসহ যেসব শপিংমলে সিনেপ্লেক্স রয়েছে সবগুলোতে সিনেমা চলবে বলে জানা গেছে। এসবের বাইরে হাতিরঝিল, টিএসসি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক, চন্দ্রিমা উদ্যান, মানিক মিয়া এভিনিউসহ খোলামেলা সব জায়গা ঈদ বিনোদনের সঙ্গী হবে।
×