ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বুড়াগৌরাঙ্গে ফেরি চলাচল বন্ধ ॥ দুর্ভোগে ৫০ হাজার যাত্রী

প্রকাশিত: ০৯:২৪, ১০ আগস্ট ২০১৯

 বুড়াগৌরাঙ্গে ফেরি  চলাচল বন্ধ ॥ দুর্ভোগে  ৫০ হাজার যাত্রী

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ॥ প্রথমে বিশাল আকারের ফেরি ‘কেতকী’। পরে ছোট একটি ফেরি। কিন্তু কোনটিই শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়নি। লোকসানের কারণ দেখিয়ে বুড়াগৌরাঙ্গ নদ থেকে বিআইডব্লিউটিসি ফেরি দু’টি তুলে নেয়। আর সেই থেকে আবারও চরবিশ্বাস ও চরকাজলসহ গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও দশমিনা উপজেলার অন্তত ৫০টি দ্বীপ চরের মানুষ মূল ভূখন্ড অর্থাৎ গলাচিপা উপজেলাসহ পটুয়াখালী জেলা সদরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লোকজনকে ছোট ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং ট্রলারে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বুড়াগৌরাঙ্গ নদ পাড়ি দিতে হচ্ছে। গত প্রায় দেড় বছর ধরে চলছে এ অবস্থা। যা দেখারও কেউ নেই। পটুয়াখালীর গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও দশমিনা উপজেলায় অন্তত ৫০টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল রয়েছে। যে দ্বীপগুলোতে বিপুলসংখ্যক মানুষের বসবাস রয়েছে। এছাড়া, পার্শ্ববর্তী ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার অন্তত দু’টি ইউনিয়নের মানুষ সড়ক যোগাযোগে গলাচিপা উপজেলা ব্যবহার করে আসছে। এসব চরবাসীকে নানান প্রয়োজনে প্রতিদিনই যাতায়াতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল বুড়াগৌরাঙ্গ নদ পাড়ি দিতে হয়। আর বুড়াগৌরাঙ্গ নদ পারাপারে ব্যবহার হয় ছোট্ট ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং ট্রলার। ফেরি উদ্বোধন উপলক্ষে গলাচিপা, রাঙ্গাবালী ও দশমিনার মানুষের মাঝে ব্যাপক আনন্দ-উল্লাস ছড়িয়ে পড়েছিল। লোকজন রাতেও উত্তাল নদ পাড়ি দেয়ার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু উদ্বোধনের এক মাসের মধ্যেই প্রথমে ‘ফেরি কেতকী’ বন্ধ হয়ে যায়। পরে আরেকটি ছোট ফেরি দেয়া হয়েছিল। সেটিও এক পর্যায়ে তুলে নেয়া হয়। ফলে চরবাসী আবার নদ পারাপারে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। এ বিষয়ে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরবিশ্বাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জেল হোসেন বাবুল মুন্সী বলেন, গলাচিপার চরবিশ্বাস থেকে সাগর উপকূলীয় রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ পর্যন্ত পাকা সড়ক রয়েছে। ফেরি চালু করার ফলে উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরকাজল, চরশিবা, চরআগস্তি, চর নজির, চরবোরহান, চরবিশ্বাস, চরমোন্তাজ ও চরবেষ্টিন এ ৮টি চরের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি চরের মানুষের জীবনযাত্রার ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে মনে করেছিলাম। কিন্তু কেন যে ফেরি বন্ধ হলো তা চরবাসী জানতেও পারছে না। এখন আবার আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। আরেক বিচ্ছিন্ন ইউনিয়ন চরকাজল ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রুবেল মোল্লা বলেন, ফেরির ব্যবস্থা হওয়ায় নিরাপদ নদ পারাপার অনেকটা নিশ্চিত হয়েছিল। এ বিষয়ে বিআইউব্লিটিসি বরিশাল কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ফেরি পারাপারে পূর্বশর্ত হচ্ছে যানবাহন থাকতে হবে। কিন্তু নদ পারাপারে তেমন যানবাহন হচ্ছিল না। এছাড়া চরবিশ্বাস-চরকাজল এলাকায় রাস্তাঘাটও তেমন নেই। এ কারণে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ফেরি চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। বিআইউব্লিউটিএ’র পটুয়াখালী নদী বন্দরের উপ-পরিচালক খাজা সাদিকুর রহমান বলেন, এখনও বদনাতলী ও চরশিবা ঘাটে ফেরির পন্টুন রয়েছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে আবার তা চালু হবে।
×