ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা ছাড়ার আগে যা করতে হবে

প্রকাশিত: ১১:০৬, ৮ আগস্ট ২০১৯

ঢাকা ছাড়ার আগে যা করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উদযাপন করতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। আর নিজ নিজ বাসাবাড়ি ‘এডিস মশার প্রজননমুক্ত পরিবেশ’ করে রেখে যাওয়ার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, দু’একদিনের মধ্যে গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নামবে। শুধু বাসাবাড়ি নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিস জনশূন্য হয়ে পড়ে থাকবে। ওইসব নিরিবিলি স্থানগুলো হয়ে উঠতে পারে এডিস মশা প্রজননের উত্তম স্থান। ঈদ পরবর্তী সময়ে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি। ঈদ পরবর্তী সময়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে বেশ চিন্তিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধীন প্রতিষ্ঠানসমূহ। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেঙ্গু সচিবালয়ে রাজধানী ঢাকায় ক্রমবর্ধমান ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ মোকাবেলার লক্ষ্যে নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সানিয়া তহমিনা, ডাঃ সমীর কান্তি সরকার, পরিচালক, এমআইএস, ডাঃ সত্যকাম চক্রবর্তী, লাইন ডিরেক্টর, হাসপাতাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, ডাঃ এমএম আকতারুজ্জামান, জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে ঈদের ছুটিতে যারা ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবেন তাদের বাড়ি, অফিস, সকল প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টয়লেটের হাই এবং লো কমোড ঢেকে দিয়ে যেতে হবে। রেফ্রিজারেটরের ট্রে-এর পানি ফেলে শুকিয়ে রেখে যেতে হবে। এয়ার কন্ডিশনারের পাইপের পানিসহ যে কোন পানি পরিষ্কার করে রেখে যেতে হবে। বালতি, বদনা, হাঁড়িপাতিল, ড্রাম, গামলা, ঘটি-বাটি ইত্যাদির পানি ফেলে পরিষ্কার করে উল্টিয়ে রেখে যেতে হবে। বারান্দা ও বাসার ছাদের ওপর রাখা ফুলের টবের ট্রের পানি ফেলে পরিষ্কার করে উল্টিয়ে রেখে যেতে হবে। পানির ট্যাংকের ঢাকনা বন্ধ করে রেখে যেতে হবে। ঈদের ছুটিতে সকল সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালের হেল্প ডেস্ক খোলা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঈদের দিন কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) অন-কল এ চিকিৎসা কাজে দায়িত্বরত থাকবেন। স্থানীয় কোন রোগীর যে কোন সমস্যায় সিএইচসিপিদের প্রদানকৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করবেন। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং চালু থাকবে। বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটি-এর সহযোগিতায় ২৬ টি জেলার সিভিল সার্জন ও সংশ্লিষ্ট আরএমও, মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতকরণে সরকারী হাসপাতালসমূহে ৩৪০টি আইসিইউ বেড ও ৩৩৫টি ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু আছে। এছাড়াও বেসরকারী হাসপাতালসমূহেও এই সেবা চালু আছে। সকল বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, নৌ ও সমুদ্রবন্দরসমূহে এক্স- স্ট্যান্ডের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে বিশেষ সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ডাঃ এবিএম আব্দুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদ উদযাপন করতে হাজার হাজার মানুষ গ্রামে যাবেন। ইতোমধ্যে যাওয়া শুরু হয়ে গেছে। গ্রামে চলে যাওয়া মানুষদের জনশূন্য বাসাবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিস জনশূন্য হয়ে পড়ে থাকবে। ওই সব নিরিবিলি স্থানগুলো হয়ে উঠতে পারে এডিস মশা প্রজননের উত্তম স্থান। ঈদ পরবর্তী সময়ে আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি। তাই এবিষয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকেই সচেতন দায়িত্ব পালন করতে হবে।
×