ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরের ট্রেনের দু’ঘণ্টা বিলম্ব ॥ স্প্রে ছাড়াই ছাড়ছে বাস

ট্রেন-বাসে ঈদযাত্রা শুরু, বেশিরভাগ ট্রেন ছেড়েছে সময়মতো

প্রকাশিত: ১১:০৪, ৮ আগস্ট ২০১৯

ট্রেন-বাসে ঈদযাত্রা শুরু, বেশিরভাগ ট্রেন ছেড়েছে সময়মতো

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যারা ঈদ উপলক্ষে যুদ্ধ করে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করেছিলেন তাদের এবার বাড়ি ফেরার পালা। বুধবার সকাল থেকে ঘরমুখো মানুষ ভিড় করতে শুরু করে কমলাপুর রেলস্টেশনে। গত ২৯ জুলাই যারা ঈদের অগ্রিম টিকেট কিনেছিলেন, মূলত তারাই বাড়ির পথে যাত্রা শুরু করেছেন। ১১ আগস্ট পর্যন্ত ঈদযাত্রা অব্যাহত থাকবে। প্রথমদিনের বেশিরভাগ ট্রেন সময়মতো ছেড়েছে। উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারণে লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কিছু ট্রেন গেছে বিলম্বে। যারা অগ্রিম বাসের টিকেট সংগ্রহ করেছিলেন তারাও বুধবার থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে এডিস মশা নিধনে বাসে এ্যারোসল স্প্রে করার ঘোষণা দেয়া হলেও বাস্তবে তা দেখা যায়নি। ফলে ডেঙ্গু ঝুঁকির মধ্যেই নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে ঢাকার মানুষদের। সকাল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনে বাড়ি ফেরা মানুষের ভিড় দেখা গেছে। প্রথম দিনে তুলনামূলক যাত্রী চাপ কম ছিল। বিমানবন্দর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনের ছাদে ঝুঁকি নিয়ে কিছু যাত্রীকে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। বুধবার কমলাপুর স্টেশন থেকে মেইল, এক্সপ্রেস এবং লোকালসহ মোট ৫২ ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। দুপুর পর্যন্ত ২২টির বেশি ট্রেন ছেড়ে যায়। তবে দেরিতে পৌঁছার কারণে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যেতে পারেনি। এই ট্রেনটি সকাল ৯টায় ছাড়ার কথা থাকলেও পরে ছেড়ে গেছে ৯টা ৪০ মিনিটে। এছাড়া, চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে সাড়ে ৮টায়। সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় ছাড়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে দুই ঘণ্টা পরে। রোজার ঈদেও উত্তরবঙ্গগামী দুটি ট্রেন প্রায় প্রতিদিনই বিলম্বে ছেড়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন যাত্রীরা। এছাড়া আরও কিছু ট্রেন বিলম্বে ছেড়ে যাওয়ার কারণে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন তখন। এবারের ঈদ প্রস্তুতির সময় নির্ধারিত সময়ে ট্রেন ছাড়ার নিশ্চয়তার বিষয়ে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা প্রতিবারই চেষ্টা করি যেন যথাসময়ে ট্রেন ছেড়ে যায়। যাত্রীরা যেন কোন অবস্থাতেই দুর্ভোগের শিকার না হন। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে তা সম্ভব হয় না। মন্ত্রী বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ডাবল লাইন না হবে ততক্ষণ ট্রেনের সিডিউল ঠিক রাখা খুব কঠিন। এবারের ঈদেও কিছুটা ত্রুটি-বিচ্যুতি হতে পারে। এ ব্যাপারে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে ট্রেন বিলম্বের বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য হলো, বন্যার কারণে উত্তরাঞ্চলের রেল লাইন বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি ট্রেন বিলম্বে ছাড়ছে। সকালে কমলাপুর রেলস্টেশনে ও দুই সন্তান নিয়ে কিশোরগঞ্জ যাওয়ার জন্য কমলাপুর স্টেশনে আসেন আজিজ মিয়া। তিনি বলেন, ‘ঈদের আগ মুহূর্তে অনেক ঝামেলা থাকে। তাই গত ২৯ জুলাই অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করেছি। আজ বাড়ি যাচ্ছি। আত্মীয়-স্বজনসহ সবার সঙ্গে ঈদ করব। রংপুরগামী ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী আসমা আক্তার বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য প্রতি ঈদেই আমাদের ট্রেনটি দেরিতে ছাড়ে। সিডিউল বিপর্যয় হয়। আজও একই অবস্থা হয়েছে। সুন্দরবন এক্সেপ্রেসের যাত্রী দিনার সুলতানা বলেন, প্রায় দুই ঘণ্টা বিলম্বে ট্রেন ছাড়ছে। কেন প্রতিবার এমন হয় জানি না। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে আশা রাখি। কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, ‘ঈদযাত্রার (বুধবার) প্রথম দিন হওয়ায় স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় কিছুটা কম। আমাদের ট্রেনগুলো সকাল থেকে সিডিউল অনুযায়ী রওনা হয়ে গেছে। দু’একটি ট্রেন কিছুটা দেরিতে গেছে। তবে সেগুলোকে সিডিউল বিপর্যয় বলা যাবে না। যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘœ করতে ইতোমধ্যে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। আশা করছি, মানুষের ঈদযাত্রা অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের ঈদযাত্রা আরও আরামদায়ক হবে। দেশের উত্তরাঞ্চলসহ আশপাশের জেলায় সাত আগস্ট থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ৩০টি বাস কোম্পানি অগ্রিম টিকেট বিক্রি করেছিল। সেই হিসেবে বুধবার সকাল থেকে বাসে ঈদযাত্রা শুরু হয়। যাত্রীরা অভিযোগ করেন কোন বাসেই মশক নিধনের ওষুধ না ছিটানোর। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মালিক সমিতি ঘোষণা দিলেও তাদের কাছে মশা নিধনের কোন ওষুধ সরবরাহ করা হয়নি। তাছাড়া এ ব্যাপারে কোন নির্দেশনাও দেয়া হয়নি বলে তারা জানান।
×