ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দলের জরুরী বর্ধিত সভায় কাদের

মিডিয়া না থাকলে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যেত না

প্রকাশিত: ১১:১৪, ৭ আগস্ট ২০১৯

মিডিয়া না থাকলে বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যেত না

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এটাই হলো বাস্তবতা। তাই লোক দেখানো কর্মসূচী পালন বা ফটোসেশন না করে সত্যিকারের পরিচ্ছন্নতায় নামতে হবে। তা না-হলে মন্ত্রী-এমপিসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউই রেহাই পাবেন না। আমরা চাই ঢাকা সিটির প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) এটা জানতে চেয়েছেন। আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করুন। নেত্রী কিন্তু বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে মনিটরিং করছেন। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় দলীয় নেতাকর্মীদের অনেকের মাঠে না নামার তথ্য তাঁর কাছে রয়েছে বলেও সতর্ক করে দেন তিনি। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের বিশেষ জরুরী বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবেলায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচী অব্যাহত রাখতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা সিটিতে প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা যতই মুখে নিয়ন্ত্রণের কথা বলি না কেন, এখনও এটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি।’ ‘মিডিয়া না থাকলে সরকার ডেঙ্গুকে গুজব বলে চালিয়ে দিত’ মর্মে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিডিয়া না থাকলে বিএনপির মতো বড় দল খুঁজে পাওয়া যেত না। তারা আন্দোলন নির্বাচন সব ক্ষেত্রেই ব্যর্থ, তারা ডেঙ্গু প্রতিরোধে নেই, তারা বন্যার্তদের পাশেও দাঁড়ায়নি। তারা শুধু মুখে মুখে দায়িত্ব পালন করে। তাদের আবাসিক প্রতিনিধি বসে বসে সংবাদ সম্মেলন করে। এজন্য মিডিয়া না থাকলে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যেত না। ওবায়দুল কাদের বলেন, এডিস মশা ভয়ঙ্কর। এই এডিস মশা কারও চেহারার দিকে তাকায় না, আপনি কাউন্সিলর, আপনি কি নেতা, আপনি কি মন্ত্রী, এমপি, মেয়র কোন দিকেই তাকাবে না। এডিস মশা সুযোগ পেলে সবারই রক্ত খাবে। এমপির রক্ত খাবে, মন্ত্রীর রক্ত খাবে, নেতার রক্ত খাবে, কাউন্সিলরের রক্ত খাবে, কাউকে ছাড়বে না। সাংবাদিকদেরও রেহাই নেই। তাই সবাইকে সচেতন হতে হবে, সাবধান হতে হবে। আমাদের যে করণীয় তা পালন করতে হবে। ‘শেখ হাসিনার নির্দেশ ডেঙ্গুমুক্ত বাংলাদেশ’Ñ এই কথা শুধু মুখে নয় এ্যাকশনেও বাস্তবায়ন করতে হবে। পরিচ্ছন্নতা অভিযানে ওয়ার্ড সভাপতি- সাধারণ সম্পাদকরা কাউন্সিলদের সহযোগিতা করবেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা কয়েকটি জায়গায় প্রোগ্রাম করলাম। এতে কিন্তু এডিস মশা ধ্বংস হবে না, উৎসমুখ বন্ধ হবে না। ডেঙ্গু রোগের বিস্তারও রোধ করতে পারব না। এজন্য ডেঙ্গু মোকাবেলায় আমাদের সর্তক ও সচেতন থাকতে হবে। মশার প্রজনন ধ্বংস করার পূর্ব শর্ত হচ্ছে পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা। তাই আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচী অব্যাহত রাখতে হবে। ডেঙ্গু মোকাবেলা কর্মসূচীটি আমরা সিনসিয়ারলি নিয়েছি। দেশের স্বার্থে ও দলের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা এ কাজটি করব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানতে চেয়েছেন কয়টা ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। আমরা দেখতে চাই ঢাকার কয়টা ওয়ার্ডে এই কর্মসূচী পালন করা হয়। পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচী একদিন করলে হবে না। প্রতিদিনই করতে হবে। যেসব ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেননি তারা শুরু করবেন, যারা করেছেন তারা এই পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রাখবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের প্রথম কাজ হলো সচেতনতা তৈরি করা, সবাইকে সতর্ক করা। এই মশার বংশ বিস্তার ও প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা আপনার আশপাশের এলাকা কর্মস্থল জনপ্রতিনিধিরা তাদের নির্বাচনী এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন। তিনি বলেন, নোংরা শহরের মধ্যে ঢাকা শহর চার নম্বরে আছে। এই ঢাকাকে ক্লিন করতে হবে, গ্রিন করতে হবে। আসন্ন কোরবানির ঈদে বহু মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামে যাবে এবং তাতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু ছড়ানোর শঙ্কা যে আরও বাড়বে- সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অনেকেই যাচ্ছেন, যাবেন। এখানেও এই ডেঙ্গু জ্বরের বিস্তারের একটা আশঙ্কা আছে। তাই সতর্ক থাকতে হবে।’ উপস্থিত জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুই সিটির ১০৯ কউন্সিলরের মাত্র ১৩ জন কাজ করেছেন। ঢাকার ১০৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে কয়জন কাউন্সিলর ও কয়টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মী যথাযথভাবে ডেঙ্গু মোকাবেলায় মাঠে নেমেছেন? এমন প্রশ্ন রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘আমি চিহ্নিত করে লজ্জা দিতে চাই না। শুধু বলতে চাই, কমিটমেন্ট থেকে কাজটা করেন। শেখ হাসিনার নির্দেশ মেনে করতে হবে। কতজন নেত্রীর (শেখ হাসিনা) নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেমেছেন, জানতে চাইলে সভায় ১৩ জন হাত উঁচু করেন। এ সময় ওবায়দুল কাদের উষ্মা প্রকাশ করেন।
×