ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কাশ্মীরে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জাতিসংঘের

প্রকাশিত: ১১:০৪, ৭ আগস্ট ২০১৯

কাশ্মীরে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জাতিসংঘের

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ কাশ্মীর ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। ওই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। অপরদিকে কাশ্মীর ইস্যুটি গভীরভাবে নজরে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। সোমবার হঠাৎ করেই জম্মু-কাশ্মীরের ওপর থেকে ভারতের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কাশ্মীর ইস্যু ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করলেও ওই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। জাতিসংঘের মহাসচিব এ্যান্তোনিও গুতেরেসও ভারত ও পাকিস্তানকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক বলেন, কাশ্মীরে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে আমরা চিন্তিত। কাশ্মীরে ভারতের নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে আমরা সতর্ক আছি। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া, ওয়ান ইন্ডিয়া, ডন, এনডিটিভি, এএফপি, আনন্দবাজার ও বিবিসির। ওমর-মেহবুবা জঙ্গী নন, তাদের মুক্তি দিন-মমতা ॥ ভারতে কাশ্মীর নিয়ে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতিতে তোলপাড়ের মধ্যে এবার বিষয়টি নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন পশ্চিবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে দেয়ার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলাসহ তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গ্রেফতার হওয়া কাশ্মীরের দুই সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিসহ অন্যদের নিয়ে। মমতা বলেছেন, ‘তারা কেউ জঙ্গী নন। কেন্দ্রীয় সরকারকে বলব, সবাইকে নিয়েই চলতে হবে। গণতন্ত্রের স্বার্থেই তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া উচিত।’ মঙ্গলবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে সংবাদমাধ্যমকে মমতা বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিল পাস করানো হয়নি। বিলের যোগ্যতা নিয়ে নয়, তবে পাশ করানোর পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।’ মমতার মতে, ‘কাশ্মীরেই সর্বদল বৈঠক ডাকা উচিত ছিল।’ ভারত গণমানুষের, ভূমি বিভাজনের নয়- রাহুল ॥ ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল দেশটির জাতীয় নিরাপত্তায় অশুভ প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। মঙ্গলবার সোনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেসের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর রাহুল গান্ধী এ মন্তব্য করেন বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়। বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে এক বার্তায় রাহুল লেখেন, জম্মু ও কাশ্মীরকে টুকরো টুকরো করা, জনপ্রতিনিধিদের অন্তরীণ করা ও আমাদের সংবিধান লঙ্ঘনের মধ্য দিয়ে জাতীয় অখণ্ডতার বিকাশ সাধিত হয় না। এ জাতির সৃষ্টি গণমানুষ দ্বারা, ভূখণ্ড দ্বারা নয়। কাশ্মীরিদের খাদের কিনারায় ঠেলে দেয়া হয়েছেÑ এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ॥ কাশ্মীরের মর্যাদা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত রাজ্যটিতে সহিংসতা বাড়াতে পারে বলে ভারতকে সতর্ক করেছে এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সোমবার লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার গ্রুপটির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারতের পদক্ষেপ সেখানকার অস্থিরতার কারণ হতে পারে আর বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করতে পারে। গত কয়েক দিনের পরিস্থিতিতে কাশ্মীরিদের খাদের কিনারায় ঠেলে দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করা হয় ওই বিবৃতিতে। কাশ্মীরে আন্দোলন দমাতে ৩ মাসের খাদ্য মজুদ ॥ ভারতশাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে অঞ্চলটিকে তিন ভাগে ভাগ করায় ক্ষোভে ফুঁসছে স্থানীয়রা। এ নিয়ে যে কোন মুহূর্তে বড় বিক্ষোভ শুরু হতে পারে আশঙ্কায় সেখানে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সম্ভাব্য আন্দোলন দমাতে আগের ৩৫ হাজারের সঙ্গে নতুন করে মোতায়েন করা হয়েছে আরও সাড়ে আট হাজার সেনা সদস্য। এ পরিস্থিতির সহসাই উন্নতি হচ্ছে না ধারণা থেকে কাশ্মীর উপত্যকায় অন্তত তিন মাস চলার মতো খাবার ও জ্বালানি মজুদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার এক শীর্ষ কর্মকর্তা। মঙ্গলবার শ্রীনগরের পরিকল্পনা কমিশনের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি রোহিত কানসাল বলেন, রাজ্যজুড়ে (সাবেক) পর্যাপ্ত খাবার মজুদ করা হয়েছে। বিশেষ করে কাশ্মীর উপত্যকায় তিন মাসেরও বেশি সময় চলার মতো চাল, গম, মাংস, ডিম ও জ্বালানি রয়েছে। কোন কিছুর কমতি পড়বে না। কাশ্মীরি ব্যাংকের দখল নিল ভারত সরকার ॥ ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে। এতদিন ধরে ব্যাংকটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিশেষ স্বাধীনতা পেয়ে আসছিল। এবার ব্যাংকের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়। রাজ্যসভার পর লোকসভায় ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রস্তাবটি পাস হলেই এবং রাষ্ট্রপতি তাতে স্বাক্ষর করলেই জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকের সম্পূর্ণ মালিকানা নিজেদের দখলে নিয়ে নেবে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমানে জম্মু-কাশ্মীর ব্যাংকের ৬০ শতাংশ মালিকানা আছে কাশ্মীরের রাজ্য সরকারের হাতে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ওই মালিকানা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের।
×