ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল দেখছেন চ্যাপেল

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ৮ জুলাই ২০১৯

 ভারত-অস্ট্রেলিয়ার ফাইনাল দেখছেন চ্যাপেল

জিএম মোস্তফা ॥ গ্রুপপর্বের খেলা শেষ। মঙ্গলবার থেকে শুরু হবে ফাইনালে উঠার লড়াই। কার শোকেসে উঠবে এবারের বিশ্বকাপ। তার উত্তর এখন সময়ের হাতে। তবে এই সময়েই ভারত-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ফাইনাল দেখছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক ইয়ান চ্যাপেল। যদিওবা এটাকে ক্রিকেটের জন্য সুদৃষ্টিতে দেখতে নারাজ ৭৫ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি। গত ৩০ মে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে শুরু হয় ২০১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। দীর্ঘ ৩৮ দিন চলে তার গ্রুপপর্বের লড়াই। এই সময়ে ম্যাচ হয় ৪৩টি। গ্রুপপর্বে দুর্দান্ত লড়াই করে এবার যোগ্য এবং শক্তিশালী চারটি দলই জায়গা করে নেয় বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। শেষ চারে জায়গা করে নেয়া চারটি দল হলো ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড। পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা ভারত খেলবে চতুর্থ স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তৃতীয় স্থানে থাকা স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে দুই নম্বরের দল অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয়ই ভারতকে টেবিলে শীর্ষে পৌঁছে দেয়। শনিবার হেডিংলিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয় পেতে বিশেষ কোন কসরৎ করতে হয়নি ভারতকে। লঙ্কাবাহিনীর বিরুদ্ধে ৭ উইকেটের অনায়াস জয়ে মোট ৯ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করে টেবিলের শীর্ষে পৌঁছে যায় বিরাট কোহলির দল। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়া তাদের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ১০ রানে হেরে যাওয়ায় আগে টেবিলের শীর্ষে থাকলেও নেমে যায় দ্বিতীয় স্থানে। ১২ পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় স্থানে ইংল্যান্ড। আর ১১ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে থেকে চতুর্থ দল হিসেবে টুর্নামেন্টের শেষ চারে জায়গা করে নেয় নিউজিল্যান্ড। মঙ্গলবার ম্যানচেস্টারের ওল্ডট্র্যাফোর্ডে প্রথম সেমিফাইনালে ভারত মুখোমুখি হবে চতুর্থ স্থানে থাকা নিউজিল্যান্ডের। অন্যদিকে আগামী বৃহস্পতিবার বার্মিংহ্যামের এজবাস্টনে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া। আগামী রবিবার লর্ডসে হবে বিশ্বকাপের ফাইনাল। ইএসপিএনে লেখা এক কলামের মাধ্যমে ইয়ান চ্যাপেল চলে যান ক্রিকেটের অনেক অতীতে। তার লেখায় তুলে ধরেছেন ১৯৮৩ বিশ্বকাপে ভারত, ১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তান এবং ১৯৯৬ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গল্প। তার মতে ২০১৯ বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে যাওয়ার জন্য স্বাভাবিকভাবেই ফেবারিট ছিল ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের মতো তিনটি দল। এই তালিকার চতুর্থ দল হিসেবে নিউজিল্যান্ডকেও এগিয়ে রেখেছিলেন কেউ কেউ। শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা অনুযায়ীই এবার সেমিফাইনালে খেলছে দল চারটি। তবে টুর্নামেন্টের সাবেক চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা এবার বড় চমকটা দেয় স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। স্বাগতিকদের বিপক্ষে জয়ের ফলে শেষ দুই সপ্তাহে লঙ্কানদের সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। এর ফলে চ্যাপেল মনে করেন, ‘টাকা দিয়েই সুখ কেনা সম্ভব।’ কেননা, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বর্তমান বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল বোর্ড হিসেবে বিবেচিত ভারত, অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড। কখনও কখনও নিউজিল্যান্ডের বোর্ডকেও দেখা যায় অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী বোর্ডের ভূমিকায়। ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল ইংল্যান্ড। এরপর এবারই সেমির টিকেট কাটল দলটি। অর্থাৎ মাঝের সময়টাতে ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের ব্যাপক ঘাটতি ছিল থ্রি-লায়ন্সদের। অন্যদিকে ৯২’র পর চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে অস্ট্রেলিয়া। একবার রানার্সআপও হয়েছে তারা। ২০১১ সালে কোয়ার্টার ফাইনালেও জায়গা করে নেয় অসিরা। চ্যাপেলের মতে দেশের জন্য এমন দাপট নিঃসন্দেহে গর্বের কিন্তু ক্রিকেটের জন্য নয়। একই সময়ে দাপট দেখা গেছে ভারতেরও। ২০১১ সালে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারত। ২০০৩ সালে রানারআপ হওয়ার পাশাপাশি তিনবার (২০১৯ বিশ্বকাপসহ) সেমিফাইনালেও জায়গা করে নেয় তারা। এই সময়ে শিরোপা জিততে না পারলেও নিউজিল্যান্ডের পারফর্মেন্স ছিল অবিশ্বাস্য! ১৯৯২ সালের পর ছয়বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলে ব্ল্যাকক্যাপসরা। ২০১৫ সালে তো শিরোপা জয়েরও খুব কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। চ্যালেপের কাছে ৫০ ওভারের এলিট খ্যাত ক্রিকেটে এই চার দলের এতো বেশি দাপট একটু বেশিই মনে হচ্ছে। যে কারণেই তুলনামূলক কম শক্তির দলগুলোকে উন্নতির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) আরও বেশি উৎসাহ দেয়ার প্রয়োজন বলে মনে করেন চ্যাপেল।
×