ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইংলিশ ওপেনার জনি বেয়ারস্টো

‘সবাই আমাদের ব্যর্থতা দেখতে চায়’

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ৩০ জুন ২০১৯

 ‘সবাই আমাদের ব্যর্থতা দেখতে চায়’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার দ্বাদশ ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপের আয়োজক ইংল্যান্ড। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বসেরা হিসেবেই হট ফেবারিট তকমা নিয়ে বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করেছিল তারা। দুর্দান্ত গতিতে এগিয়েও যাচ্ছিল। কিন্তু খর্বশক্তির শ্রীলঙ্কার কাছে অপ্রত্যাশিত হারের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। সেমিফাইনাল খেলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার। তবে ইংলিশরা পরবর্তী দুই ম্যাচের একটিতে জিতলেও সম্ভাবনা ম্লান হয়ে যাবে এ তিনটি দলেরই। তাই এ তিনটি দল চলতি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের চরম শত্রুতেই পরিণত হয়েছে। সেটি উপলব্ধি করছে হট ফেবারিট হয়ে আসর শুরু করা ইংলিশরাও। সে জন্যই ওপেনার জনি বেয়ারস্টো আক্ষেপ নিয়েই বললেন, ‘লোকে আমাদের ব্যর্থতার অপেক্ষায় আছে।’ চলমান বিশ্বকাপে সবার আগে অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলেছে। নিউজিল্যান্ড ও ভারতও বেশ ভাল অবস্থানে আছে সেমিতে ওঠার লড়াইয়ে। তাই এ তিনটি দলকে পেছনে ফেলার বিষয়টি নিয়ে কেউ হিসেব কষছে না। পয়েন্ট টেবিলে ৫, ৬ ও ৭ নম্বরে থাকা তিন দল বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা শুধু একটি বিষয় নিয়েই ভাবছে- তা হচ্ছে ইংল্যান্ড দলটি যেন হেরে যায়। এ ৩ দলের সঙ্গেই ইংলিশদের ম্যাচ হয়ে গেছে। মাঠে প্রতিপক্ষ হিসেবে না নামলেও এখন এ তিনটি দলের সবচেয়ে বড় শত্রু ইংল্যান্ড। কারণ পরবর্তী দুই ম্যাচে ইংলিশরা ভারত ও নিউজিল্যান্ডের কাছে পরাস্ত হলেই এ তিন দলের যে কোন একটির সুযোগ থাকবে সেমিতে জায়গা করে নেয়ার। তাই নিজেদের বাকি ম্যাচগুলোয় জয়ের পাশাপাশি তারা কায়মনে প্রার্থনা করে যাচ্ছে ইংলিশদের হারের জন্য। শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে টানা দুই হারের পর হট ফেবারিটরাই এখন প্রাথমিক রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়ার বড় শঙ্কায়। ১৯৯২ বিশ্বকাপের পর আর কখনই বিশ্বকাপে ভারত কিংবা নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারেনি ইংলিশরা। এই পরিসংখ্যানের পাশাপাশি হঠাৎ করেই দলটির ছন্দপতনে মানসিক শক্তিতেও অনেকখানি ধস নেমেছে। সবমিলিয়ে ৭ ম্যাচে ৩ হারের জন্য স্বদেশীদের কাছেই চরম সমালোচনার মুখে রয়েছে ইংল্যান্ড। বাকি দুই ম্যাচেই জয় পেতে হবে, কিন্তু সেটা নিয়েও ইংলিশ ক্রিকেটারদের শুনতে হচ্ছে অনেক কটূক্তি। তাই বেশ চাপেই আছে ইয়ন মরগানের দল। এই পরিস্থিতিতে বাকি দুই ম্যাচে অন্যতম শক্তিশালী ও বিশ্বকাপের ফেবারিট দুই দলকে হারিয়ে দেয়াটা কঠিনই হবে তাদের জন্য। আর এখন অনেকেই চায় স্বাগতিকরা হেরে যাক পরবর্তী দুই ম্যাচ। বেয়ারস্টো খুবই আশ্চর্য হয়েছেন একটি রেডিও স্টেশনের অনুষ্ঠান শুনে। সেখানে তিনি সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক মাইকেল ভনকেও লায়ন্সদের বিপক্ষে কথা বলতে শুনেছেন। বেয়ারস্টো বলেন, ‘আমি সকালে রেডিওতে ছিলাম। খুবই আশ্চর্য হয়েছি ভনের মন্তব্য শুনে। এটা খুবই হতাশাজনক। আমি বলব যে এখন পর্যন্ত আমরা অনেক ভাল করেছি। আমরা দু’টা ম্যাচ হারলেই কেউ কেউ সুযোগ পেয়ে যায় সেটা নিয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে।’ কিন্তু বাস্তবতা যে এখন ইংলিশদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে গেছে সেটাও নিশ্চিত। অনেক মানুষই চাইছে না ইংল্যান্ড পরবর্তী দুই ম্যাচ জিতুক। যারা সেমিতে যাওয়া অনেকটাই নিশ্চিত করেছে তারাও চায় না এবং বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার কোন মানুষই তাদের পক্ষে থাকবে না। বিষয়টি বুঝতে পারছেন বেয়ারস্টো, ‘লোকজন অপেক্ষা করছে আমাদের ব্যর্থতা দেখার জন্য। তারা কেউ আমাদের জিততে দেখতে ইচ্ছুক নয়। অনেকভাবেই তারা আমাদের হার দেখতে উৎসুক যেন তারা আমাদের টুঁটি চেপে ধরতে পারে। ইংল্যান্ডের সব ক্রীড়াতেই এটা খুবই সাধারণ ব্যাপার।’ তবে এসব সমালোচনায় কর্ণপাত করা ঠিক হবে না ইংলিশ ক্রিকেটারদের। আর দুই ম্যাচ জিততে পারলেই সেমি ঠেকাতে পারবে না কেউ। তাই নির্ভার হয়ে চিন্তামুক্ত থেকেই পরবর্তী দুই ম্যাচে নামতে চান বেয়ারস্টো, ‘এটি হয়তো খুবই নাজুক একটি পরিস্থিতি হয়ে ওঠে দুই ম্যাচ হারাতে। কিন্তু সবই তো শেষ হয়ে যায়নি। এর মধ্যেই লোকেরা আমাদের সমালোচনায় মেতে উঠেছে। তাদের সমালোচনায় যা ঘটে গেছে তার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আসবে না। আমাদের শুধু নির্ভার হয়ে খেলতে হবে। আমরা এ বিষয়গুলোকে আমাদের ওপর চেপে বসতে দিচ্ছি না। আমরা কেমন খেলছি সেটাতে কোন পরিবর্তন ঘটবে না এখানে-সেখানে হওয়া কথাবার্তা থেকে। তাই সেসব দিকে কর্ণপাত না করে নিজেদের কিভাবে ফিরে আসা সম্ভব তা নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
×