ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মতবিনিময় সভায় মোস্তাফা জব্বার

সেপ্টেম্বরে ফেসবুক ইউটিউব নিয়ন্ত্রণে আসবে

প্রকাশিত: ১০:১০, ৩০ জুন ২০১৯

  সেপ্টেম্বরে ফেসবুক ইউটিউব নিয়ন্ত্রণে আসবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজবসহ যে কোন তথ্য নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা বাংলাদেশ আগামী সেপ্টেম্বরেই অর্জন করতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। তিনি বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা খুশি তা করার দিন শেষ। চলতি বছরের শেষদিকে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক এবং ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউব নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। এখন যেকোন ওয়েবসাইট নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা অর্জন করেছে দেশ। শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে ‘তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক প্রশ্নোত্তর ও মতবিনিময় সভায় মোস্তফা জব্বার এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসার ২৫০ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। তাদের অনেকেই নির্ধারিত আলোচকদের প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। আলোচকরাও তার জবাব দেন। এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তরুণদের বিভিন্ন প্রশ্নের আরও জবাব দেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান। সঞ্চালনা করেন প্রচার উপ-কমিটির সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ। একজন শিক্ষার্থীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, রাষ্ট্রের এখন সবচেয়ে বড় সক্ষমতা হচ্ছে ইচ্ছে করলেই যেকোন ওয়েবসাইটকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটি বড় অর্জন। তবে সমস্যা হচ্ছে যখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়া হয় অথবা ভিডিও প্রচার করা হয়, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়ে উঠে না। এর কারণ হচ্ছে, বিশেষ করে ফেসবুক বা ইউটিউব, এই দুটিই মার্কিন প্রতিষ্ঠান। এটা তাদের আমেরিকান কমিউনিটির স্ট্যান্ডার্ড মেনে কাজ করে থাকে। আমরা সরাসরি তাদের হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তিনি বলেন, এ কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে সুনির্দিষ্ট তথ্য নিয়ন্ত্রণে সক্ষমতা এতদিন আসেনি। এগুলোতে গুজব ছড়ানো বন্ধে সরকার উদ্যোগী হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তা বন্ধে সফলও হচ্ছিল না। যা একটি সমস্যা ছিল সরকারের জন্য। আশা করছি, শীঘ্রই এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করতে সক্ষমতা অর্জন হবে। আগামী সেপ্টেম্বরের পর এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যাবে। তখন ইচ্ছেমতো ফেসবুক বা ইউটিউবে কিছু প্রচার করা যাবে না। ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব ইচ্ছা সরকারের নেই। তবে তা যেন অন্যের ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব না করে, সেটাই নিশ্চিত করবে সরকার। ইন্টারনেটে নাগরিকদের বিচরণ নিরাপদ রাখতে রাষ্ট্রের ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, এটি করতে ইতোমধ্যে ২২ হাজার পর্নো সাইট এবং কয়েক হাজার বেটিং সাইট বন্ধ করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই গুজব বা মিথ্যা তথ্য প্রচার করতে কিছু অনলাইন পোর্টাল আছে, যেগুলো বন্ধ করা একটু দুরূহ হয়ে যায়। অনলাইনের নিবন্ধন শেষ হলে এবং বৈধ তালিকা পেলে, বাকিগুলো বন্ধ করে দেয়া যাবে। ইন্টারনেট ব্যবহারে সবাইকে সচেতন ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। এর আগে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব কিংবা ভুয়া তথ্যের সমস্যার দিকটি তুলে ধরে বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। এটি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা তা নয়। তবে আমরা চাই, মানুষের অধিকার অবারিত থাকুক। কিন্তু মানুষের অবারিত অধিকার চর্চা করতে গিয়ে যেন অন্যের অধিকার খর্ব না হয়, কিংবা অন্যের ব্যক্তিস্বাধীনতা খর্ব না হয়। কিংবা রাষ্ট্রে হানাহানি সৃষ্টি না হয়, সমাজে অস্থিরতা না হয়, সেটা সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এবং প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেন, প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে কেবল এগিয়েই নিয়ে গেছে। অনেক চড়াই-উৎড়াই পার হয়ে আওয়ামী লীগও এগিয়েছে। এই দলটির উত্থান হয়েছে, কখনও পতন হয়নি। তিনি বলেন, আমরা তরুণ প্রজন্মের দিকে তাকিয়ে থাকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। অবশ্যই আমরা আরও এগিয়ে যাব। এরপর তরুণ প্রজন্মই দেশকে এগিয়ে নেবে।
×