ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা

রাজনীতিতে আশার আলো ফিরিয়ে এনেছিলেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত: ১০:০৮, ১৮ মে ২০১৯

 রাজনীতিতে আশার আলো ফিরিয়ে এনেছিলেন শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ১৯৮১ সালে দেশে যখন প্রতিকূল পরিবেশ তখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে অন্ধকারে নিমজ্জিত রাজনীতিতে আশার আলো ফিরিয়ে এনেছিলেন, আর আওয়ামী লীগ পেয়েছিল রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে মুক্তি। তাকে সেদিন দলের সভাপতি নির্বাচিত করাটা যে সঠিক ছিল পরবর্তীতে তার দূরদর্শী নেতৃত্বের মধ্যদিয়ে সেটা প্রমাণিত। তার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনার ৩৮ তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় দলের শীর্ষ নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের দুর্দিনে শেখ হাসিনা সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দলকে শক্তিশালী সংগঠনে পরিণত করেছেন। দেশের আনাচে-কানাচে, মাঠে-ঘাঠে ঘুরে দলকে গতিশীল করে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন মানুষের হৃদয়ে। দল বিস্তার করেছে ইউনিয়ন পর্যন্ত। আর সেই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই আওয়ামী লীগ টানা তিনবারসহ চারবার সরকার গঠন করেছে। শুক্রবার বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে সারাদেশেই প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত হয়। রাজধানীতে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, সেদিন আওয়ামী লীগ যে কারণেই সভাপতি নির্বাচিত করুক না কেন পরবর্তীতে তার দূরদর্শী নেতৃত্ব, রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্ব প্রমাণ করে দিয়েছে শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করার মধ্য দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিল। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির অগ্রদূত। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার দেশে ফেরার তিনটি মাত্রা আছে। প্রথম মাত্রা তার ব্যক্তিগত যে তার নেতৃত্ব। দ্বিতীয় মাত্রা হলো তিনি না ফিরলে আওয়ামী লীগের সঙ্কট দূর হতো না। তৃতীয় মাত্রা হলো বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যে বাংলাদেশ হারিয়ে গেছিল সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে এনেছেন। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এই তিন মাত্রা সবাইকে মনে রাখতে হবে। প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, শুধু পিতৃহত্যার বিচার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য নয় শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এসে বাংলাদেশে নতুন একটা কথা যোগ করেন সেটা হলো মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করা। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, শুধু তাই নয় বাংলাদেশকে উন্নয়নের উৎকর্ষের দিকে নিয়ে গেছেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল-আলম হানিফ বলেন, আজ যারা আইনের শাসনের কথা বলেন তাদের নেতা খুনী জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করে আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত করেছিলেন। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। পাকিস্তানের এজেন্ট, পাকিস্তানের সহযোগী শক্তি বিএনপি-জামায়াত আবারও গণতন্ত্রের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অশুভ তৎপরতা চালিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাধার সৃষ্টি করেছে। এই অশুভ তৎপরতাকে প্রতিহত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব এটাই আজকের দিনের প্রত্যয়। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনা এদেশের মানুষের সঙ্গে আছেন, থাকবেন। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ বদলে গেছে। শেখ হাসিনা মানে গণতন্ত্র, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি। এটাকে আরও গতিশীল করতে হলে শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বাহাউদ্দিন নাসিম, এনামুল হক শামীম, শিক্ষা সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, সদস্য মির্জা আজম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত। এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এর আগে সকালে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে তার বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের নেতারা শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান। পরবর্তীতে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত প্রায় ১৫ লাখ মানুষের হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসার জবাবে তিনি এদিন বলেন, বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য আমি দেশে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।
×