স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ গাজীপুরে লাইফওয়ে বাংলাদেশ (প্রাঃ) লিঃ নামের একটি এমএলএম কোম্পানির গোপন কক্ষ থেকে ১৩ জিম্মিকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১এর সদস্যরা। এ সময় ওই কোম্পানির নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ২০জনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের কাছ থেকে টাকা ও মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন মাল জব্দ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১’র স্পেশালাইজ কোম্পানি গাজীপুরের পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাবের ওই কর্মকর্তা জানান, লাইফওয়ে বাংলাদেশ (প্রাঃ) লিঃ’র নামে একটি প্রতারক চক্রের সদস্যরা প্রতারণা করার উদ্দেশে গাজীপুরের বাসন থানাধীন চান্দনা চৌরাস্তার সিয়াম সিএনজি ফিলিং স্টেশন এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অবস্থান করছে। এ গোপন সংবাদ পেয়ে র্যাব-১’র কোম্পানি কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল-মামুনের নেতৃত্বে র্যাব সদস্যরা ওই এলাকার হাফিজুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের ২০জনকে আটক করে। এ সময় তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই বাড়ির দুটি গোপন কক্ষ থেকে ১৩ জিম্মিকে উদ্ধার করে। অভিযানকালে আটকদের কাছ থেকে সাত হাজার ষাট টাকা ও ১৪ টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
উদ্ধারকৃতরা হলো- চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার দক্ষিণ ভোড়াদাড়ি গ্রামের কাজল প্রধানের ছেলে ফরিদ উদ্দিন (২৪), একই থানার পশ্চিম পিংড়া গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে তানজিদ হোসেন (২১), একই জেলার সদর থানার ধনপুদ্দি গ্রামের মিজান খন্দকারের ছেলে বাবু খন্দকার (২২) ও মোঃ শামীম খন্দকার (২০), একই থানার দাসদী গ্রামের ইসমাইল খানের ছেলে বিল্লাল খান (১৮), ওহাব খানের ছেলে শাকিল হোসেন (২০), নাসির উদ্দিনের ছেলে মোঃ নাহিদ হাসান (২১) ও রশিদ পাটোয়ারীর ছেলে মোঃ সানা উল্লাহ পাটোয়ারী (২৩), আমানউল্লাহপুর গ্রামের খোকন গাজীর ছেলে মোঃ জুয়েল মিয়া (১৮), খেরুদিয়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আঃ সালাম (১৯), হাজীগঞ্জ থানার বানিয়াকান্দা গ্রামের মোঃ শাহজাহান কবিরের ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩২), সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানার চাঁদনী মুখা গ্রামের কাউসার আলীর ছেলে মোঃ আকরাম হোসেন (২০) এবং দিনাজপুরের পার্বতীপুর থানার সৈয়দপুর গ্রামের ভবেশ চন্দ্রের ছেলে তন্ময় কুমার (২২)।
র্যাবের কর্মকর্তা জানান, আটকরা সংঘবদ্ধ প্রতারক দলের সক্রিয় সদস্য বলে জিজ্ঞাসাবাদকালে র্যাবকে জানিয়েছে। তারা একে অপরের যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবৎ গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় লাইফওয়ে বাংলাদেশ (প্রাঃ) লিঃ নামে প্রতিষ্ঠান চালু করে দেশের সাধারণ মানুষের বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের চাকরি দেয়ার নামে গোপন কক্ষে বন্দী করে অভিনব কায়দায় প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে আসছিল। এ ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আটকরা হলো- কিশোরগঞ্জ জেলা সদর থানার ঘাগলাইল গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান (৩০), রাজশাহী জেলার বাঘা থানার মীরগঞ্জ গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মামুনুর রশিদ (৩০), চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর থানার ধুতুরহাট গ্রামের সানোয়ার হোসেনের ছেলে মোঃ জাহাংগীর আলম (২৫), জামালপুর জেলা সদরের কোটামনি গ্রামের মৃত আঃ সোবাহানের ছেলে মোঃ হুমায়ুন কবির (২৮), কুষ্টিয়ার কন্দরপ্রদীয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে আশরাফুল আলম (২৯), চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানার সোনাকানিয়া গ্রামের শফিকুর রহমানের ছেলে তৈয়াবুর রহমান (২৫), চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সদর থানার বালুবাগান এলাকার সাদিকুল ইসলামের ছেলে মাসদিদ (২১), মহনপুর গোরস্তানপাড়ার একরামুল হকের ছেলে সোহেল রানা (১৯), চড়াগ্রাম বিন্দুপাড়া এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে কাউসার আলী (২৩), চাঁপাইনবাবগঞ্জ গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে সাজিদুল ইসলাম (২২), নতুন হাট এলাকার শরিফুল ইসলামের ছেলে রজব আলী (২৩) ও বাগানপাড়া এলাকার আঃ মতিনের ছেলে মোস্তাকিম (২৫), একই জেলার দেবীনগর থানার কলিকাতা এলাকার কাউসার আলীর ছেলে আতাউর রহমান (১৯), গোমস্তাপুর থানার বিবিসন গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে মেসবাউল হক (২০) ও ভোলাহাট থানার হাসপুকুর গ্রামের আঃ খালেকের ছেলে আরিফ হোসেন (২৪), কুমিল্লার মুরাদনগর থানার নবীয়াবাদ গ্রামের স্বপন সরকারের ছেলে আব্দুল্লাহ আল সুমন (২২), চাঁদপুর জেলা সদর থানার আমানুল্লাহপুর এলাকার শাহ আলম বেপারির ছেলে শাহাদত হোসেন (১৯) ও বিধিপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে পিয়ারুল ইসলাম (২৫), বি-বাড়ীয়ার বিজয়নগর থানার আনন্দগ্রামের আঃ হাসিমের ছেলে কাউসার আলম (২০) এবং জয়পুরহাট জেলা সদর থানার হাতিল গাড়িয়া কান্ত গ্রামের নাজির রহমানের ছেলে কাউসার রহমান (২৪)।