ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড মুখোমুখি আজ

প্রকাশিত: ০৯:৪১, ৯ মে ২০১৯

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড মুখোমুখি আজ

মিথুন আশরাফ ॥ ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচ মঙ্গলবারই খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে দুর্দান্ত জয়ও মিলেছে। সিরিজে শুভ সূচনাও করেছে মাশরাফিবাহিনী। এবার দ্বিতীয় ম্যাচ খেলার পালা। স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আজ এই দুই দলের ম্যাচ রয়েছে। ডাবলিনের ম্যালাহাইডের দ্য ভিলেজ মাঠে বাংলাদেশ সময় বেলা পৌনে চারটায় ম্যাচটি শুরু হবে। খেলা শুরু হওয়ার সময় ঠিক থাকলেও খেলা সত্যিই হবে কিনা তা নিয়েই আছে সংশয়। বৃষ্টি পড়ার সম্ভাবনা যে আছে। আয়ারল্যান্ড সময় সকাল পৌনে এগারোটায় খেলা শুরু হবে। যে সময় খেলা শুরু হবে সেই সময় বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। নেট দুনিয়ায় আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের ম্যালাহাইডের আবহাওয়ায় তাই দেখা যাচ্ছে। তা যে হতে পারে বুধবারই প্রমাণ মিলেছে। সারাদিন বৃষ্টি ঝরেছে। গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়েছে। আর তাতে করে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা অনুশীলনও করতে মাঠে যেতে পারেননি। বোঝাই যাচ্ছে বৃষ্টির প্রভাবে খেলা না হওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। এই ম্যাচটি দুই দলের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাত্তাই পায়নি আয়ারল্যান্ড। সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই নিজেদের প্রথম ম্যাচে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ড নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভিন্ন স্বাদ পেয়েছে। স্বাগতিক আয়ারল্যান্ড হার দিয়ে সিরিজ শুরু করেছে। বাংলাদেশ জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে। যদি আজকের ম্যাচটিতে হারে আয়ারল্যান্ড তাহলে সিরিজ থেকে ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা জোরালো হয়ে যাবে। আর বাংলাদেশ জিতলে সিরিজের ফাইনালে খেলার উজ্জ্বল সম্ভাবনা তৈরি হবে। আয়ারল্যান্ড চাইবে যেভাবেই হোক ম্যাচটিতে জিততে। বাংলাদেশও তাই। জিতে ফাইনালে আশা জোরালো করতে বাংলাদেশ চাইবে। দুই দলই যেহেতু জয়ের তীব্র আকাক্সক্ষা নিয়ে ম্যাচটি খেলতে নামবে, তাই ম্যাচটি উত্তেজনা তৈরি করতে পারে এমন আশাও করা হচ্ছে। কন্ডিশন একটা বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই দলের সামনে দুই রকম হয়ে ধরা দিচ্ছে। কন্ডিশন জয় করার সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয় মিললেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটিতে যে ঠান্ডা বাংলাদেশের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না তার নিশ্চয়তা নেই। এখানেই ভয় আছে। আয়ারল্যান্ড নিজেদের কন্ডিশনের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশকে বিপাকেও ফেলতে পারে। প্রস্তুতি ম্যাচে আয়ারল্যান্ড উলভসের কাছে যে বাংলাদেশ ধরাশায়ী হয়েছে সেটিতে কন্ডিশনের প্রভাবওতো ছিল। তাই বাংলাদেশকে আজও কন্ডিশনের সঙ্গেও যুদ্ধ করতে হবে। ক্রিকেটাররা এখন মানসিকভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া জয় করার চেষ্টা করতে পারলেই হলো। কন্ডিশনের সঙ্গে জিতলেও হলো। খেলাও যে আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের চেয়ে শক্তিশালী দল নয় তা তো সবারই জানা। কন্ডিশন প্রভাব বিস্তার না করলে আয়ারল্যান্ডকেওতো উড়িয়ে দেয়ার কথাই। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০১৭ সালে ইংল্যান্ড এ্যান্ড ওয়েলসেই হয়। এই ট্রফিতে খেলতে নামার আগেও বাংলাদেশ দল আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলেছিল। সেবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের জায়গায় শুধু ছিল নিউজিল্যান্ড। সেবার শেষ ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল। পরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েই সেমিফাইনালে খেলেছিল। আয়ারল্যান্ডতো ত্রিদেশীয় সিরিজে পাত্তাই পায়নি। সেবারও আবহাওয়া একইরকম ছিল। সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ম্যালাহাইডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। কিন্তু বৃষ্টির কারণে খেলাই হয়নি। আয়ারল্যান্ডকে পরের ম্যাচে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকেও হারিয়েছিল। এবার প্রথম ম্যাচেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডকেও হারানোর পালা। কিন্তু বৃষ্টি কী তা হতে দেবে? ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোয় বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী। বল হাতে মাশরাফি বিন মর্তুজা ৩টি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও মুস্তাফিজুর রহমান ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। সাকিব আল হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজ ১টি করে উইকেট নিয়েছেন। মুস্তাফিজই শুধু খরুচে বোলার হয়েছেন। ১০ ওভারে ৮৪ রান দিয়েছেন। না হলে সবাই ভাল বোলিং করেছেন। আর তাইতো ২৬১ রানের বেশি করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্যাট হাতে নেমে দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল (৮০) ও সৌম্য সরকার (৭৩) মিলে ১৪৪ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন। এরপর সাকিব আল হাসান (৬১*) ও মুশফিকুর রহীম (৩২*) মিলে ম্যাচ জেতান। ২ উইকেট হারিয়ে ৪৫ ওভারে ২৬৪ রান করে ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ। ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে আইরিশদেরও হারিয়ে দেয়া সহজই হওয়ার কথা। সৌম্য সরকার সেই আত্মবিশ্বাসের কথা বলেছেনও। জানিয়েছেন, ‘অবশ্যই জয় তো সবসময় সবাইকে আত্মবিশ্বাসী করে। আমরা সবাই এখন আত্মবিশ্বাসী। আর কন্ডিশন আমরা পরিবর্তন করতে পারব না। এটা নিয়ে চিন্তা না করে সবাই সবার সেরাটা দিয়ে যতটুকু এগিয়ে যাওয়া যায়, সেটাই করতে হবে।’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যেমনটি খেলেছে বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও খেললে হয়ে যায়। জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারবে বাংলাদেশ।
×