ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ১৫ উদ্যোগ

প্রকাশিত: ১১:০৭, ৩ মে ২০১৯

 দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ১৫ উদ্যোগ

এম শাহজাহান ॥ রোজা সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে ১৫ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত আমদানি, মজুদ ও সরবরাহ নিশ্চিত করার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। লক্ষ্য, রোজায় স্বাভাবিক দামে ভোক্তাদের হাতে পণ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়া। এ জন্য বেসরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি এবার সরকারী-ভাবেও বাজারে পণ্যসামগ্রীর যোগান দেয়া হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, রমজানের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি পণ্যসামগ্রী দেশে মজুদ রয়েছে। তাই ম্যানুপুলেট করে বাজার নিয়ন্ত্রণের কারসাজি হলে কোন রকম ছাড় দেয়া হবে না। এ ব্যাপারে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও নজরদারি করা হচ্ছে। এছাড়া রমজানজুড়ে বাজারগুলোতে গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি র‌্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় থাকবে। কারসাজির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। জানা গেছে, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে ১৫ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত একটি জরুরী বৈঠক করা হয়। ওই বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিদ্যুত মন্ত্রণালয়, ঢাকা সিটি কর্পোরেশন, টিসিবি, ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর ও নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে জরুরী ভিত্তিতে পনেরোটি উদ্যোগ নিয়ে তা বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এগুলো হলো- পর্যাপ্ত আমদানি ও মজুদের বিষয়টি নিশ্চিত করা, ম্যানুপুলেটের সুযোগ বন্ধ করে বাজারে চাহিদা মতো পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা, বাজারগুলোতে গোয়েন্দা সংস্থা, র‌্যাব ও পুলিশের তদারকি কার্যক্রম বাড়ানো, ফেরি পারাপারে পণ্যবাহী ট্রাক অগ্রাধিকার দেয়া, মহাসড়কে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে পণ্যবাহী ট্রাক নিরাপদে বাজার পর্যন্ত নিয়ে আসা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর ও অধিদফতরের নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা, ট্রাকসেলে টিসিবির বিক্রি কার্যক্রম অব্যাহত রাখা ও পণ্যের পরিমাণ বাড়ানো, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতরের কার্যক্রম বাড়ানো, ভেজালরোধে নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের উদ্যোগ গ্রহণ, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশন ভর্তুকি মূল্যে বাজারে চিনি বিক্রি করবে, পণ্যসরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে রাস্তায় ট্রাফিক জট কমানো, ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিত করা, এক মাস রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি বন্ধ, স্থল বন্দরগুলোতে পেঁয়াজ, রসুনসহ মসলা জাতীয় পণ্যের দ্রুত ছাড়করণ, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ানো এবং প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের মূল্য তালিকা টানানো প্রভৃতি। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই পনেরোটি উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে রমজানে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে না। এছাড়া অসাধু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কারসাজি বন্ধ হবে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শামিমা ইয়াসমিন জনকণ্ঠকে বলেন, সরকারের কাছে এখন পর্যন্ত যে তথ্য রয়েছে, তাতে রমজানের চাহিদার তুলনায় বেশি পণ্যসামগ্রী আমদানি হওয়ায় মজুদ পরিস্থিতি সন্তোষজনক।
×