ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নবায়নযোগ্য শক্তিতে শহরের সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামে

প্রকাশিত: ১১:২০, ১৯ এপ্রিল ২০১৯

নবায়নযোগ্য শক্তিতে শহরের সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ক্রমেই পাল্টে যাচ্ছে গ্রাম। শহুরে সুবিধা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে গ্রামে। শহুরের সুবিধা গ্রামে নিয়ে যাওয়ার বৃহৎ কর্মসূচীতে নবায়নযোগ্য শক্তি বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে। দেশে দুই দশকের বেশি সময় নবায়নযোগ্য শক্তি স্থাপন ও ব্যবহার বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। দেশে তিন কোটির বেশি মানুষ প্রতিদিন সৌরশক্তি থেকে বিদ্যুত পাচ্ছে। আগামীর দিনগুলোতে গ্রামে শহুরের সুবিধাপ্রদানের ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য শক্তি বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে মত দেন বক্তারা। বৃহস্পতিবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘আমার গ্রাম : আমার শহর বিনির্মাণে নবায়নযোগ্য শক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক সম্মেলনে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সোলার এবং নবায়নযোগ্য শক্তি অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরইএ) অয়োজিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প এবং বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসআরইএ সভাপতি দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্থপতি ইকবাল হাবিব। অনুষ্ঠানে বলা হয়, সাম্প্রতিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি একটি বড় কারণ। জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধিতে গ্রিন হাউস নিঃসরণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। নানাবিধ দুর্যোগের পাশাপাশি বিশ্ব আজ জলবায়ু সংকেটর মুখোমুখি। এ অবস্থায় নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে আরও বেশি যতœবান ও দায়িত্বশীল হতে হবে। এজন্য বাস্তবমুখী নানা ধরনের পরিকল্পনা দরকার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএসআরইএ সভাপতি বলেন, সরকারের বিদ্যুত বিভাগের পরিকল্পনা আছে ২০২১ সাল নাগাদ বিদ্যুত উৎপাদনের শতকরা ১০ ভাগ নবায়নযোগ্য থেকে আসবে। বর্তমানে তা সর্বসাকল্যে ৫০০ মেগাওয়াট অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে উন্নয়নে স্লোগান দরকার আছে। সবুজ বিপ্লব, কৃষি বিপ্লব এসব উন্নয়নের চাকা হিসেবেও কাজ করে। প্রধানমন্ত্রী যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের স্লোগান সামনে আনে তা আমাদের কাছে একটি ধাক্কা দেয়। আর সেই স্লোগানে দেশ এখন ডিজিটাল। সর্বশেষ এলো আমাদের গ্রাম আমাদের শহর। এটি হবেই। মানুষের কর্মসংস্থান হবে, সুযোগ বাড়বে। এতে করে শহুরে সুবিধাগুলো গ্রামে চলে যাবে। প্রধানমন্ত্রী সেভাবেই কাজ করার জন্য বলছেন। মন্ত্রী বলেন, আমি অবাক হই আমার অনেক গ্রামে এখন এসি, পানি উঠানো যন্ত্রসহ নানা সুবিধা দেখে। ধারাবাহিক নেতৃত্ব ও সাহসী পদক্ষেপে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রী হিসেবে নয় একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বলতে পারি সময়টা এখন আমাদের জন্য ভাল। বিদ্যুত ও নবায়নযোগ্য শক্তি নিয়ে যারা কাজ করছেন সবাইকে নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আরও এগিয়ে যাবে দেশ সে প্রত্যাশা করেন এম এ মান্নান। সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা কিন্তু গ্রামকে শহর করতে চাচ্ছি না শুধু শহুরে সুবিধাগুলো গ্রামে পৌঁছাতে চাচ্ছি। সোলার এনার্জিতে অনেক ভাল কাজ হয়েছে আমাদের। টেকনোলজি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সোলার প্যানেলেও খরচ কমে আসছে। শহুরের কিছু সমস্যাও গ্রামে যাচ্ছে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারী শিল্প এবং বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমাদের গ্রামে ইউনিয়ন পর্যায়ে শহরের মতো যত্রতত্র বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। যোগাযোগ বৃদ্ধি পাওয়াতে গ্রামে ইজিবাইক ব্যবহার বেড়েছে। এই ইজিবাইকের রেজিস্ট্রেশন নেই, আর এর ব্যাটারি অনেক ক্ষতিকর পরিবেশের জন্য। এরকম আরও সমস্যা আপনা আপনি গ্রামে চলে যাচ্ছে। তাই এসব বিষয়ে এখনই ভাবতে হবে বলেও মনে করেন তিনি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ¯্রডো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর যোবায়েরসহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে বক্তারা মনে করেন, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করলে গ্রামে কর্মসংস্থান বাড়বে। নতুন জায়গা বা কৃষি জমি ব্যবহার করতে হবে না। পরিবেশের উন্নয়ন হবে। দক্ষ জনগোষ্ঠী গঠিত হবে। এই বিদ্যুত দিয়ে নানামুখী উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, ব্যবসা বাণিজ্য বাড়বে এতে টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে মনে করেন বক্তারা। এছাড়াও এই বিষয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। প্যানেল সেসনের সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনার্জি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুল হক। সম্মেলনে ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞসহ প্রায় প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তিবর্গ অংশ নেন।
×