ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

হজ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

হজ ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন আসছে

আজাদ সুলায়মান ॥ ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে হজ ব্যবস্থাপনায়। ঢাকা থেকে জেদ্দা পর্যন্ত হজযাত্রীরা যাতে কোন ধরনের হয়রানি ও জটিলতার মুখে না পড়েন সে লক্ষ্যে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে দীর্ঘদিনের পুরানো কিছু ইস্যুর সমাধান হয়েছে। বিদ্যমান হজ ব্যবস্থায় হজযাত্রীদের ঢাকা থেকে জেদ্দা নামার পরই ভোগান্তির ঘণ্টার পর ঘণ্টা শিকার হতে হয়। এ মৌসুমের হজ থেকেই এসব জটিল প্রক্রিয়া নিরসন করে অনেক সহজ, গতিশীল ও নিরাপদ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেই আগাম ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করা, ঢাকা থেকেই হজযাত্রীদের লাগেজ পরিবহনের দায়িত্ব নেয়া, বাংলাদেশের ৮ বিভাগীয় সব হজযাত্রীদের শহরে ফিংগার প্রিন্ট সংগ্রহ করা, মক্কা মদীনায় বাড়ি ও হোটেলের শ্রেনীবিন্যাস করা, সারাবছর ওমরাহ প্রক্রিয়া আরও সহজীকরণ করার মতো এক গুচ্ছ সিদ্ধান্ত এখন বাস্তবায়নের পথে। ফলে চলতি মৌসুম থেকেই হজযাত্রীরা এসব সুবিধা পাবেন। বর্তমান ধর্মমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ দায়িত্ব নেয়ার পর পরই তার জোরালো ভূমিকার কারণে দীর্ঘদিনের এসব পুরানো দাবি আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তার আমন্ত্রণে ঢাকায় এসেছেন সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ড.হোসেইন বিন নাসের আল শরীফের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। তারা গত দু’দিন ধরে ধর্মমন্ত্রী, হাব ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে বৈঠকের পর বৈঠক করছেন। কিভাবে হজ ব্যবস্থাকে আরও সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করা যায় সে বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে কর্ম কৌশল বের করছেন। জানতে চাইলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জনকণ্ঠকে বলেন,বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনার প্রতি সৌদি রাজকীয় সরকারের আস্থা ও পারস্পরিবক শ্রদ্ধাবোধের বিষয়টি অনন্য উচ্চতায়। যা অতীতে কখনোই ছিল না। সেজন্য চলতি সৌদি আরব থেকে প্রথমে ইমিগ্রেশনের ১৪ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি টিম ঢাকা পরিদর্শন করে গেছেন। এর আগে শাহজালাল বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ২১ মার্চ সৌদির একটি কারিগরি দল ঢাকা সফর করে। এখন ঢাকায় একগুচ্ছ সুখবর নিয়ে অবস্থান করছেন সৌদি হজ ও ওমরাহ বিষয়ক উপমন্ত্রী ড.হোসেইন বিন নাসের আল শরীফ। তিনি আমাদের এমন কিছু সুসংবাদ দিয়েছেন যা ছিল কল্পনাতীত। এত সহজে ও এত দ্রুততম সময়ে তিনি হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরেই ইমিগ্রেশনের ডেস্ক বসাতে রাজি হয়ে যাবেন তা আমার ধারণায় ছিল না। বলতে পারেন, ২০ পারসেন্ট হজ যাত্রীর কোটা বৃদ্ধির দাবি ছাড়া সবই তারা মেনে নিয়েছেন এবং কাজও শুরু করে দিয়েছেন। তবে সফররত আশ্বস্ত করেছেন, সৌদি বাদশাহর কাছে তারা এ দাবিটিও উত্থাপন করবেন। সফররত সৌদি আরবের ইমিগ্রেশনের চীফ (ডিজি) মেজর জেনারেল সোলাইমান আব্দুল আজিজ ইয়াহ ইয়াহর নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ সম্মতির কথা জানান। জানা গেছে, ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কোন স্থানে সৌদি ইমিগ্রেশন কাউন্টার বসানো হবে তা প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা করেছেন মেজর জেনারেল সোলাইমান আব্দুল আজিজ ইয়াহ ইয়াহ। তিনি বিমানবন্দরের বর্তমান ১১নং বোর্ডিং ব্রিজ সংলগ্ন ফাকা জায়গাকেই পছন্দের তালিকায় রেখেছেন। সিভিল এভিয়েশানও তার এ প্রস্তাব মেনে সর্বাত্মক সহায়তা দেবে বলে আশ্বস্ত করেছে।
×