ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সিন্ডিকেট লেনদেনের খপ্পরে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ৪ এপ্রিল ২০১৯

সিন্ডিকেট লেনদেনের খপ্পরে ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সিন্ডিকেট লেনদেনের খপ্পরে পড়েছে পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতের কোম্পানি ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস লিমিটেড। অথচ ৩১ মার্চেও কোম্পানি কর্তৃপক্ষ শেয়ার দর অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণ জানে না বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জেকে (ডিএসই) জানিয়েছিল। কিন্তু কে শোনে কার কথা একটি চক্র প্রতিদিনই অস্বাভাবিক হারে কোম্পানিটির দর বাড়াচ্ছে। বুধবার ডিএসইর সার্বিক সূচক যেখানে ৭০ পয়েন্টে কমেছে সেখানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর বেড়েছে ১০০ টাকা ৫০ পয়সা। সরকারী কোম্পানিকে ঘিরে এমনভাবে অস্বাভাবিক লেনদেন করায় শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তারা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোম্পানির মৌলভিত্তি দেখে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। জানা গেছে, শেয়ারটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার পেছনে কোন কারণ আছে কিনা তা জানতে চেয়ে গত ৩১ মার্চ ডিএসই নোটিস পাঠায়। এর জবাবে কোম্পানিটি জানায়, কোন রকম মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারটির দর বাড়ছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত কয়েক কার্যদিবস ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে এ কোম্পানির শেয়ার দর। গত ১০ মার্চ কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ১২৫৭.৪০ টাকায়। যা ৩১ মার্চ দর বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১৫৯৭.৩০ টাকা। পরে বুধবারে এই কোম্পানির প্রতিটি শেয়ার ১৭০৯.৩০ টাকায় লেনদেন হয়েছে। অর্থাৎ কয়েক কার্যদিবসের ব্যবধানে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর বেড়েছে ৪৫১.৯০ টাকা। প্রতিটি শেয়ারের প্রায় ৩৬ শতাংশ দর বেড়েছে। অথচ এই সময়ে ডিএসইর সার্বিক সূচকের পতন ঘটেছে প্রায় ২৫৮ পয়েন্ট। বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাত্র ৯৯ লাখ টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানি হওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটিকে টার্গেট করে এগোচ্ছে। আগামীতে ভাল লভ্যাংশ আসবে এমন গুজবও শেয়ারবাজারে ছড়াচ্ছে। অথচ কোম্পানিটির তৃতীয় প্রান্তিক প্রতিবেদনই এখন প্রকাশ হয়নি। এর মধ্যেই শেয়ারটির লেনদেনের সঙ্গে জড়িতরা শেয়ারবাজারে গুজব রটাচ্ছে। অথচ সরকারী কোম্পানি হওয়ার কারণে লভ্যাংশ ও কোম্পানির প্রবৃদ্ধি নিয়ে ধারণা করা খুবই কঠিন। তারপরও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা অনেক সময় বিভ্রান্ত হয়ে লেনদেন করে থাকেন। বেশিরভাগ সময়ই গুজবে বড় বিনিয়োগকারীরা লাভবান হন আর লোকসানে পড়েন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কারণ এক পর্যায়ে কোম্পানিটির বুলিশ ট্রেন্ডের মধ্যে বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে বের হয়ে যান। কিন্তু আটকা পড়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। জানা গেছে, ১৯৭৬ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটি ১৯৮৪ সালে একটির বিপরীতে তিনটি বোনাস শেয়ার প্রদান করেছিল। ৯৯ লাখ ৪০ হাজার টাকার পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ার উদ্যোক্তা পরিচালক, ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২১.৫০ শতাংশ শেয়ার ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৭.৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষ অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় ২.৯৯ টাকা। আগের বছরে যা ছিল ১৪.৮০ টাকা।
×