ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইনমন্ত্রী বললেন ওয়েট এ্যান্ড সি ॥ সিনহাকে কি বিচারের আওতায় আনা হবে?

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ৪ এপ্রিল ২০১৯

আইনমন্ত্রী বললেন ওয়েট এ্যান্ড সি ॥ সিনহাকে কি বিচারের আওতায় আনা হবে?

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে আবারও জুডিসিয়াল ক্যু চেষ্টার অভিযোগ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, বিচারপতি সিনহা দেশে জুডিসিয়াল ক্যু ঘটাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পারেননি। জনগণের শক্তি বাড়লে আর কেউ এমন চেষ্টা করতে পারবেন না। তিনি আরও বলেন, অবৈধ ভবন মালিকদের করা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। বুধবার সচিবালয়ে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলী দাসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এ কথা বলেন। আগের দিন মঙ্গলবারও সচিবালয়ে এসকে সিনহার বিরুদ্ধে জুডিসিয়াল ক্যু করার চেষ্টার অভিযোগ তোলেন আইনমন্ত্রী। জুডিসিয়াল ক্যুর চেষ্টা করায় এসকে সিনহাকে বিচারের আওতায় আনা হবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়েট এ্যান্ড সি। হঠাৎ বিষয়টি কেন এলো- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করে নয়, সমন্বয় সভার আলোচনার মধ্যে... সেখানে অগ্রগতি, কিছু কিছু বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি, কেন হয়নি এ নিয়ে আমরা আলাপ-আলোচনা করছিলাম। সেই সব আলাপ-আলোচনার মধ্যে কিছু কথা হয়েছে। আমি মনে করি যে কথা হয়েছে, সেগুলো সত্য। এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় নির্বাহী বিভাগ কখনোই হস্তক্ষেপ করবে না। আইনমন্ত্রী বলেন, অবৈধ ভবন মালিকদের করা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে সংশ্লিষ্টদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে। নিয়ম না মেনে তৈরি করা অসংখ্য ভবন নিয়ে মামলা চলমান থাকায় রাজউক কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এখন সরকার এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমার সঙ্গে গণপূর্তমন্ত্রী কথা হয়েছে। তাকে আমি বলেছি, যথনই আমার প্রসিকিউশন টিম, এ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের সাহায্য লাগবে এসব মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য আমরা সব সহায়তা তাদের দেব। মামলা জট কমানোর বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে কি না- তা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘বিষয়টা হচ্ছে, জনগণের মাইন্ডসেট পরিবর্তন করতে হবে। আমরা এডিআর (বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি) করি, সেটা জনগণকে গ্রহণ করতে হবে। এখন যেটা করা হচ্ছে, ফৌজদারি বিষয়ে যেসব মামলা আপোসযোগ্য সেগুলো... আমি তো আদালতকে বলতে পারি না। প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি একটা প্র্যাকটিস ডিরেকশনের মাধ্যমে পাঠাবেন (আপোসযোগ্য মামলা), আমি প্রসিকিউশনকে বলেছি, দেখেন কোর্ট যদি বলে দেয় এটা আপোসযোগ্য আপনারা আপোস করে আসেন। কোর্টে এসে আমাদের বলেন এতদিনের মধ্যে আপোস করেছেন। এ রকম একটি অনুশাসন যদি কোর্ট দেন তবে জনগণের সাহস হয় সেটার উপর আস্থা রাখা। আপনারা কিছুদিনের মধ্যে দেখবেন কোর্ট আপোসযোগ্য মামলাগুলোতে এমন অনুশাসন দিচ্ছেন, এ অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা আর আদালতে আসছে না। বাইরেই এটার নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং কোর্টকে একটা রিপোর্ট দেয়া হচ্ছে। এ ব্যবস্থা আপনারা শীঘ্রই দেখবেন। তিনি আরও বলেন, ‘আর দেওয়ানি মামলার বিষয়ে আমরা চেষ্টা করছি- আগে সিভিল প্রসিডিউর কোর্ট ছিল, সেই কোর্টের অনেক ধাপ রয়েছে। আজকের বাস্তবতায় সেই ধাপগুলো আমার মনে হয় কিছুটা কমিয়ে আনা যায়, উই আর ওয়ার্কিং অন দ্যাট। ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাত প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশনার দায়িত্ব নেয়ার পর তার সঙ্গে এটাই প্রথম সাক্ষাত। আমরা যেসব বিষয়ে আলোচনা করেছি তা হলো আইনের ক্ষেত্রে, বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে আমাদের দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা। গুজরাটের ভুপালে আমাদের জুডিসিয়াল অফিসারদের ট্রেনিং নেয়ার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেই এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী আমাদের অফিসাররা সেখানে ট্রেনিং নিয়ে থাকেন। সেটার বিষয়ে আলাপ হলোÑ এই প্রশিক্ষণের আরও ক্ষেত্র বাড়ানো যায় কি না, সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখন আমরা একটা সিদ্ধান্তে এসেছি যে লিগ্যাল ড্রাফটিংয়ের বিষয়ে ট্রেনিংয়ের জন্য আমরা কিছু অফিসার ভারতে পাঠাব। ওখানে খুব উন্নতমানের একটা ড্রাফটিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আছে। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা সেখানে পাঠাব। আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক যাতে আরও শক্ত, দৃঢ় ও বিস্তৃত হয়- সেই সহযোগিতার দ্বারগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
×