অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ উজবেকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর সম্ভাব্য উপায়গুলো কাজে লাগানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে দেশটি। দু’দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের কার্যকর উদ্যোগে বিদ্যমান বাণিজ্য বহুগুণে বাড়ানো সম্ভব বলে উজবেকিস্তান মনে করে। উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রদূত মি. ফারহদ আরজিয়েভ এবং এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দের মধ্যে শনিবার এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম এবং সহ-সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠককালে এফবিসিসিআই সভাপতি বাংলাদেশের দ্রুত অগ্রসরমান অর্থনৈতিক কার্যক্রমে দেশের বেসরকারী খাতের ভূমিকা তুলে ধরেন। দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ আরও আকর্ষণীয় করতে এফবিসিসিআই তার সদস্য সংস্থাগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও উজবেকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য তেমন প্রসার লাভ করেনি বলে তিনি উল্লেখ করেন। দেশ দু’টির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে পারস্পরিক প্রতিনিধি দল বিনিময়ের ওপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রসঙ্গত তিনি বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণের লক্ষ্যে বর্তমান সরকার গৃহীত ১০০টি ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ গঠনের কথা জানান।
উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের বস্ত্রখাত এবং ওষুধ শিল্পের বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। এছাড়াও রাষ্ট্রদূত উজবেকিস্তানের বিপুল প্রাকৃতিক গ্যাস সম্পদের কথা উল্লেখ করেন। বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে তিনি এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দের কাছ থেকে প্রস্তাব চান এবং এফবিসিসিআই নেতৃবৃন্দকে খুব কাছাকাছি সময়ে উজবেকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান।
এফবিসিসিআই সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, সিআইএস দেশগুলোতে রফতানি সম্প্রসারণের সম্ভাবনা যাচাইয়ের লক্ষ্যে এফবিসিসিআই থেকে একটি প্রতিনিধিদল উজবেকিস্তান সফরে যেতে আগ্রহী। দেশ দু’টির মধ্যকার পারস্পরিক সম্পর্ক বাড়ানোর লক্ষ্যে শেখ ফাহিম উজবেকিস্তান থেকে প্রযুক্তি হস্তান্তরের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেন।
এফবিসিসিআই পরিচালক মিসেস হাসিনা নেওয়াজ, মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ এবং তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু আলোচনায় অংশ নেন। উজবেকিস্তান দূতাবাসের প্রথম সচিব আযামজন মানসুরভ এবং এফবিসিসিআই ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব জনাব হোসাইন জামিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১১.৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য উজবেকিস্তান রফতানি করে এবং উজবেকিস্তান থেকে ১৬.১০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের রফতানিযোগ্য পণ্যগুলো হচ্ছে পাট ও পাটজাত পণ্য, ওষুধ পণ্য এবং পারমাণবিক চুল্লী, ব্রয়লার ও যন্ত্রাংশ। আর উজবেকিস্তান থেকে মূলত টেক্সটাইল সামগ্রী, সবজি এবং কেমিক্যাল সামগ্রী আমদানি করা হয়।
