ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

’২১ সালে শেষ হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ

প্রকাশিত: ১১:০২, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

’২১ সালে শেষ হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী ২০২০ সালের জুন থেকে দেশের জনগণ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা পাবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। প্রায় মৃত এই প্রকল্পটির অর্থায়ন নিয়ে এখন আর কোন সমস্যা নেই বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। বুধবার দুপুরে কাওলায় প্রকল্পের শুরুর পয়েন্টে কাজের অগ্রগতি দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা জানেন এই প্রজেক্টটি মরেই গিয়েছিল। মৃত প্রজেক্টটিকে জীবিত করা হয়েছে, ঝুলেই ছিল দীর্ঘদিন এই প্রজেক্ট। এখন এই প্রকল্প গতি পেয়েছে। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ ও যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। প্রকল্প এলাকাকে তিন অংশে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অংশে বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার, দ্বিতীয় অংশে বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার এবং তৃতীয় অংশে মগবাজার থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ৬ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, চলতি বছরের জুনের অগেই প্রথম ফেজের কাজ শেষ হবে। দ্বিতীয় ফেজ ২০২০ সালের জুলাই নাগাদ হয়ে যাবে। আর তৃতীয় ফেজ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। অর্থাৎ তিন ধাপের কাজ শেষ হবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রথম ধাপের কাজ ৫০ ভাগ, আর মোট কাজের অগ্রগতি ২০ ভাগ। মাঝখানে প্রকল্পের অর্থায়ন নিয়ে সমস্যা ছিল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখন এক্সিম ব্যাংক অব চায়না এই জানুয়ারি মাসেই ৮৬১ মিলিয়ন ইউএস ডলার অনুমোদন করেছে। সঙ্গে আছে আইসিবিসি, তারা আরও ৪০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার অনুমোদন করেছে। এখন আর অর্থায়নের কোন সমস্যা নাই। মার্চ নাগাদ সব টাকা এসে যাবে। তাই আমরা আশাবাদী যথাসময়ে কাজ শেষ করতে পারব। টাকার সংস্থান হওয়া মানেই আর বসে থাকার কোন সুযোগ নেই। আমরা এগিয়ে যাব। আশাকরি আর কোন জটিলতা সামনে আসবে না। দ্বিতীয় ফেজের কাজ শেষ হলেই জনগণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সুবিধা পবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় ফেজ সম্পন্ন হলে অপারেশনটা আমরা করতে পারব। প্রথম ফেজটা ফিজিবল হবে না। আগামী বছর জুলাই নাগাদ দ্বিতীয় ফেজের কাজ শেষ হলে অপারেশন শুরু হয়ে যাবে। প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে বলে জানান তিনি। আগামী রোজার ঈদের আগেই মহাসড়কের সব ফ্লাইওভার ও সেতুর কাজ শেষ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী রমজানের ঈদের আগেই ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের তিনটি সেতু, দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা, তৃতীয় গোমতী সেতুর কাজ সমাপ্ত হবে। কাঁচপুর সেতুর কাজ ইতোমধ্যেই শেষ পর্যায়ে, মেঘনা, গোমতী সেতুর কাজ জুনের আগেই শেষ হবে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়কের কাজও ঈদের আগে শেষ হবে। সেখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় কোনাবাড়ির ফ্লাইওভারের কাজ ৯৭ ভাগ শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া চন্দ্রা ফ্লাইওভার, ঢাকা-টাঙ্গাইলের পথে পাঁচটি ফ্লাইওভার, তিনটি আন্ডার পাস, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভুলতা ফ্লাইওভারের কাজ জুনের আগেই সম্পন্ন হবে বলে জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের প্রথম ধাপ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বনানী রেল স্টেশন পর্যন্ত এ বছরের জুনে চালু নিয়ে আর কোন সন্দেহ নেই। প্রায় ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে প্রকল্পটি ঢাকার যানজট নিরসনে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের একটি। প্রকল্পে ১ হাজার ৩০৪টি পাইল, ২৮০টি পাইল ক্যাপ, ৬২টি ক্রস-বিম, কলাম ১৬৩টি (সম্পূর্ণ) ও ৮৪টি (আংশিক) এবং ১৮৬টি আই গার্ডার নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও ২টি স্প্যান আই গার্ডার স্থাপনের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। পরিদর্শনকালে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে পিপিপি প্রকল্পের পরিচালক এএইচএম শাখাওয়াত আকতার ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাকসিথ সোয়ানাগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×