ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে কাদের

নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় বিএনপির কালোব্যাজ কর্মসূচী নেয়া উচিত

প্রকাশিত: ১০:৫২, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় বিএনপির কালোব্যাজ কর্মসূচী নেয়া উচিত

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের কারণে বিএনপির কালোব্যাজ ধারণ কর্মসূচী পালন করা উচিত। এত বড় একটি রাজনৈতিক দল ভোটকেন্দ্রে খুব কম এজেন্ট দিতে পেরেছে। যারা কেন্দ্র পাহারা দেবে বলে নির্বাচনের আগে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিল, নির্বাচনের দিন তাদের ভোটকেন্দ্রে দেখা যায়নি। এটা তাদের ব্যর্থতা। বুধবার দুপুরে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে তারা (বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছে। এখন তারা পথহারা পথিকের মতো অবস্থার মধ্যে রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পর উপজেলা নির্বাচনেও হারতে পারে, এই আশঙ্কায় এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না বিএনপি। নির্বাচনে হারতে হারতে বিএনপি জয়ের আশা ছেড়ে দিয়েছে। উপজেলা নির্বাচন বয়কট করতে চাচ্ছে, যাতে হারের জ্বালা সইতে না হয়। ৩০ ডিসেম্বরের আদলে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং উপজেলায় নির্বাচন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) এ বক্তব্যের সঙ্গে একমত কিনা একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার হয়েছে। তার (সিইসি) সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশের সুযোগ কোথায়? জাতীয় নির্বাচন যেভাবে হয়েছে উপজেলা নির্বাচনও সেই শিডিউল অনুযায়ী হবে। এতে দ্বিমত প্রকাশের কোন সুযোগ নেই। বিএনপি এবং জাতীয় পার্টি (জাপা) উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, এমন ঘোষণায় আওয়ামী লীগ প্রতিদ্বন্দ্বিতা উš§ুক্ত করবে কিনা জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, উন্মুক্তই যদি করব তাহলে এত আয়োজন করে মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র বিতরণ কেন? তিনি বলেন, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনের আগ পর্যন্ত আপনারা বলতে পারেন না কে অংশ নেবে আর কে নেবে না। শেষ মুহূর্তেও অনেকে সিদ্ধান্ত বদল করতে পারে। তাই মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার আগ পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে ইলেকশন ফোবিয়ায় ভুগছে। নির্বাচনে হারতে হারতে তারা এখন জয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছে। তবে কোন রাজনৈতিক দল না এলে জাতীয় নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনের ট্রেনও থেমে থাকবে না। তিনি বলেন, বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচন না করলেও তাদের অনেক প্রার্থী স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে পারে বলে আমার কাছে খবর আছে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের দ্বন্দ্ব অনেকটা প্রকাশ্যে কিনা একজন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনই সেটা বলার সময় আসেনি। তবে দ্বন্দ্ব বলতে এটা বিদ্বেষপ্রসূত কোন দ্বন্দ্ব নয়। খুব স্বাভাবিক কারণেই দলের ভেতরে সুস্থ একটা প্রতিযোগিতা হতেই পারে। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকতে হবে। তারপর দ্বন্দ্ব কিনা সেটা বলা যাবে। অনেক উপজেলায় প্রভাব খাটিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নিজেদের লোক এমনকি আত্মীয়-স্বজনের নাম পাঠিয়েছেন, এক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা কী হবে? জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মনোনয়নের জন্য আবেদনপত্র খতিয়ে দেখব। এখানে কে কার ভাই বা বোন এসব কোন প্রশ্ন নয়। জনগণের কাছে কার জনপ্রিয়তা কতটুকু, কে উইনেবল, কে ইলেক্টেবল সেটা আমরা খতিয়ে দেখব। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা উপজেলায় একটি বর্ধিত সভায় নাম নির্ধারণের জন্য বলেছিলাম। ওই বর্ধিত সভায় যদি কোন আত্মীয়ের নাম চলে আসে তাহলে তো কিছু করার নেই। আত্মীয় পরিচয়ের কারণে কারও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চাপা পড়ে যাবে সেটা তো হতে পারে না। তিনি বলেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গেলে কঠোর ব্যবস্থা। দলের ভেতরে গণতন্ত্র সুসংহত করতেই উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নের আবেদনপত্র বিক্রি উন্মুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
×