ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

পোষা পাখিতে নারীর আনন্দ

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

পোষা পাখিতে নারীর আনন্দ

চার দেয়ালের মধ্যে নারী থাকবে। ঘরদোড় সামলাবে। তার আবার বাইরে কাজ কেন? এভাবেই নারীকে বন্দী রাখা হতো। তার প্রতিভা বিকাশের পথ ছিল না। গুমড়ে কেঁদে মরত তাদের চাওয়া-পাওয়া। এসবই কিছুদিন আগের কথা। এখন আর সে দিন নেই। নারী বন্ধ দুয়ার ভেঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঘরে বন্দী রাখার দিন শেষ। উন্নয়নে নারীর অংশীদারিত্ব বাড়ছে। সব পেশায় নারীর সাফল্যময় উপস্থিতি চোখে পড়ে। শখের বস্তুতেও তারা সফলতা দেখাচ্ছে। তেমনই একটা শখের বস্তু হলো পোষা পাখি। বাহারি রঙের খাঁচার বিদেশী পাখি। যা একদিকে শখ তো মিটাচ্ছেই, উপরন্তু বাড়তি আয়ের সুযোগ করে দিচ্ছে। অর্থনীতিকভাবে নারীকে শক্তিশালী করে তুলছে। পোষা পাখিতে গেল কয়েক বছরে নারীদের সাফল্য উল্লেখ করার মতো। সব বয়সী নারীরা পোষা পাখিতে সম্পৃক্ত হচ্ছে। সেরকমই কজন পোষা পাখি পালনে সফল নারীদের কথা বলা হলো। নওশিন লায়লা মুনমুন নওসিন লায়লা মুনমুন। মেধাবী ছাত্রী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুটি সাবজেক্টে মাস্টার্স করা। থাকেন মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায়। প্রথমে শখ করে একটি মোরগ কিনেন। নাম দেন লালী। এরপর কিনলেন বাজরিগার, তারপর কটাটেল, খরগোশ। এটা ১৯৯০ সালের দিকের কথা। আজ থেকে ২৮ বছর আগের কথা। ছোটকাল থেকেই তার পশু, পাখির প্রতি প্রেম। মেয়ে মানুষ পাখি পালে। সবার তীর্যক দৃষ্টি। ব্যঙ্গাত্মক উক্তি। মুনমুন এসবে পাত্তা দেননি। তিনি পোষা পাখিকে নিয়ে কাজ শুরু করেন। তিনি ভেটেনারী চিকিৎসার বই, হোলিস্টিক টিটমেন্ট পদ্বতি, ইন্টারনেটে প্রচুর পড়াশোনা শুরু করেন। দেশ বিদেশের এভিয়ান ভেটদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এদিকে নিজের পোষা পাখির সংগ্রহ বেড়ে যায়। পাখি ডিম বাচ্চা করে। চোখমুখ জুড়ে মুনমুনের সে কি খুশি। প্রথমে তিনি পাাখির চিকিৎসা পদ্ধতি নিজের পাখির ওপর প্রয়োগ করেন। সফল হোন এক শতভাগ। এরপর অন্যদের সাহায্য করেন। পোষা পাখির জগতে এক অনন্য নাম নওশিন লায়লা মুনমুন। কারও পাখি অসুস্থ। ছুটে যান তিনি। সময় অসময় নেই। মাঝ রাতে ফোন, আপা পাখি ঝিমায়, খাচ্ছে না। সবুজ পুপ। ঘুম ছেড়ে মুনমুন পাখির জন্য পরামর্শ দেন। ফেসবুকে মুনমুনের একটা গ্রুপ আছে। বাংলাদেশ বার্ড হেল্প নাম। সেখানে মুনমুনের পোস্ট ভাল লাগে জাকারিয়ার। ইনবক্সে ম্যাসেজ আদান-প্রদান দু’জনার। প্রেম অতঃপর প্রনয়। পোষা পাখি দুটি মানুষের হৃদয়কে এক জায়গায় এনে দিয়েছে। বর্তমানে মুনমুনের সংগ্্রহে ৪০ জোড়ার ও বেশি পাখি রয়েছে। বাজেরিগার,কটাটেল,লাভবার্ড,রেম্প সহ বিভিন্ন বিদেশী খাঁচার পাখি। ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সে কারণে পাখি পালন করতে একটু সমস্যা হয়। বাড়িয়ালাকে বাড়তি টাকা দিতে হয়। এলাকার মাস্তানরা ঝামেলা করে। মুনমুন পাখি বিক্রির টাকায় পাখির খরচ বহন করেন। আবার বাড়তি টাকাও থেকে যায়। পাখির নায্য দাম পাওয়া যায় না। এটাই মুনমুনের অভিযোগ। তিনি পোষা পাখি রফতানির সু ব্যবস্থার দাবী জানান। পোষা পাখি তরুন, যুবক, যুবতীদের বিপদে যাওয়া থেকে বাচাতে পারে। আবার গৃহবধুরা পোষা পাখি পালন করতে পারেন। এ জন্য দিনে ঘন্টা দুয়েক সময় দিলেই যথেস্ট। এতে বাড়তি উপার্জন হবে। সংসারে স্বচ্ছলতায় গৃহবধুর অবদান বাড়বে। এমনটাই জানালেন নওশিন লায়লা মুনমুন। পোষা পাখির অসুস্থতায় যেখানে এন্টিবায়োটিক ওষুধের কথা ভাবা হয়। সেখানে মুনমুন পাখির জটিল রোগের ভেষজ চিকিৎসায় সফল হয়েছেন। এটা বাংলাদেশে আর কেউ পেরেছে বলে জানা যায় না। পাখির প্রটোজোয়াল ইনফেকশনে থানকুনি পাতা, আদার রস, সালমোনেলোসিস এর জন্য চা পাতি, তুলসি পাতা, পুদিনা পাতা, ট্র্রাইকোমোনাসিসের জন্য আদা, লেবু, এলোভেরা, মাইকোপ্লাজমোসিসের জন্য নিম পাতা ও আদার রস দিলে ভাল কাজ হয়। জ্যোতি হাসান প্রথম সন্তান তখন জ্যোতি হাসানের গর্ভে। কি যে উচ্ছ্বাস। কদিন পরই ডেলিভারির তারিখ। ব্যাংক কর্মকর্তা স্বামী ঘর সাজালেন। নতুন অতিথি আসছে। আয়োজন তো কিছু করতেই হয়। হঠাৎ একদিন জ্যোতি অসুস্থ হয়ে পড়ল। সন্তান পেটের মধ্যে মারা গেল। জ্যোতির পৃথিবীর আধারে ভরে গেল। কোন কিছুই তার ভাল লাগে না। রাজ্যের বিষণœতা তার চোখে মুখে। স্বামী কত কিছুই না করে। তারপর ও জ্যোতির আচরণে আগের চঞ্চলতা আসে না। সন্তান হারানোর আঘাত। রীতিমতো কুড়ে কুড়ে খায় জ্যোতিকে। সারাক্ষণ মন খারাপ করে বসে থাকে। সবাই ভাবল, জ্যোতি আর আগের মতো হবে না। জ্যোতির ভাসুসের পোষা পাখির সঙ্গে সম্পৃক্তা ছিল। তিনি এক পেয়ার পাখি জ্যোতিকে গিফট করলেন। ফুটফুটে সুন্দর পাখি। নাম তার বাজরিগার। খাঁচার পাখি। কিচির মিচির করে ডাকাডাকি করে। এক অপরকে খাইয়ে খেয়। জ্যোতির ভালই লাগে। বিষন্ন মনে একটু আনন্দ দোল খায়। তিনি বাজরিগার পাখির যতœআত্তি শুরু করেন। সময় মতো খাবার দেয়া, নরম খাবার তৈরি করা, খাঁচা পরিষ্কার করা। আরও কত কাজ। তার সময় ভালই কাটতে লাগল। এরপরের গল্পটা শুধুই সফলতার। আর দশটা মেয়ে যা পারেনি। জ্যোতি তা পেরেছে। পোষা পাখির জগতে জ্যোতি এখন সুপরিচিত নাম। ঘরে সংকুলান হয়নি। স্বশুরকে বললেন ছাদে রুম করার কথা। শ্বশুর ছাদে পাখির রুম করে দিয়েছেন। বাজরিগার, সিলভার জাভা, লুটিনো ককাটেল, লাভবার্ডসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক পাখি তার এভিয়ারিতে। এসব পাখি নিয়মিত তার এভিয়ারিতে ডিম বাচ্চা করে। তিনি এভিয়ারির নাম দিয়েছেন আয়মান এভিয়ারি। একমাত্র মেয়ের নামে নাম। জ্যোতির টেম (পোষ মানানো) পাখি আছে। তার নাম টুকি। টুকি নিজের নাম বলতে পারে। খাঁচার বাইরে সে ঘুরে বেড়ায়। হাতে বসে খুনসুটি করে। শুধু পাখি পালন নয়। একটি বেসরকারী স্কুলে শিক্ষকতা করেন জ্যোতি হাসান। স্কুল সংসার সব এক হাতে সামলান। তিনি মনে করেন, গৃহবধূরা পোষা পাখি পালন করতে পারে। অবসর সময় ভাল কাটবে। উপরন্তু কিছু অর্থ আয়ও হবে। স্টুডেন্টরাও পোষা পাখি পালন করে পকেট খরচ যোগাড় করতে পারে। জ্যোতির মতে, পোষা পাখি মন ভাল রাখে। তার জীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া এনেছে খাঁচার পোষা পাখি। মাদক নির্মূল, গ্যাজেট আসক্তি কমাতে পারে খাঁচার এই সব রং বেরঙের পোষা পাখি। পোষা পাখি থাকলে বাচ্চাদের গ্যাজেট আসক্তি কমই হয়। পাখি বাচ্চা বিক্রি করে সে টাকায় পাখির খরচ চলে। বাড়নি বিনিয়োগ করা লাগে না জ্যোতি হাসানের। বাজরিগার সোসাইটির সক্রিয় সদস্য জ্যোতি। তিনি জানান, শুরুতে বাজরিগার সোসাইটি অব বাংলাদেশ তাকে সাহায্য সহায়তা করে। এই সংগঠন বিভিন্ন কর্মকা-ের মাধ্যমে নারী পাখি পালকদের উৎসাহ দেয়। সরকার একটু যদি সহযোগিতা করে তাহলে অনেক নারী উদ্যোক্তা তৈরি হতে পারে। এমনটাই জ্যোতি মনে করেন। জ্যোতির মতে পোষা পাখির বাণিজ্যিক সুফল যতটা নয়। তার চেয়ে সামাজিক সুফল অনেক বেশি। যুব সমাজ পোষা পাখিতে সম্পৃক্ত হলে অপরাধমূলক ঘটনা কমবে। বিপথগামিতা রোধে পোষা পাখির জুড়ি নেই। ব্যাংক কর্মকর্তা জ্যোতির স্বামী তাকে সব রকম সহায়তা করেন। পোষা পাখির খাবারের বাজারে স্থিতিশীলতা নেই। এটাই প্রধান সমস্যা বলে জ্যোতি জানান। সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সহায়তা করেছে পোষা পাখি বাজরিগার। দুশ্চিতা, অবসাদ, মন খারাপ এসব পোষা পাখি দূর করে। একঘেয়ামী ঘেষতেই দেয় না বলে জানান জ্যোতি হাসান। তার মতে, দিন বদলেছে। অন্য দশটা পেশার মতো পোষা পাখিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। শখের পাখি শখ মিটাচ্ছে। আবার খরচপাতিও উঠে আসছে। নারী হিসেবে পোষা পাখি পালনে সফলতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত জ্যোতি হাসান। ভেঙে পড়া তার জীবনটা গুছিয়ে উঠেছে। অনেকটাই বাজরিগার পাখির ছোঁয়ায়। শারমিনা ইয়াসমিন শারমিনা ইয়াসমিন। পুরোদস্তুর গৃহবধূ। ঘরদোড় সব এক হাতে সামলান। কোথাও কোন ক্রটি হয় না। শারমিনার বাসায় কেউ বেড়াতে এলে খুশিই হয়। এমন পরিবাটি অতিথিয়তা ক’জন করে। গৃহবধূর পরিচয়ে বাইরে শারমিনার একটা পরিচয় আছে। তিনি পোষা পাখি পালন করেন। যে কজন নারী পোষা পাখি পালনে আমাদের দেশে সফল। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন শারমিনা। মাত্র দুপেয়ার বাজরিগার পাখি। সঙ্গে এক পেয়ার ককাটেল বেবী। এগুলো দিয়েই শারমিনার শুরু। সেও বছর ছয়েক আগের কথা। তখন পোষা পাখি শিল্প এক বড় ছিল না। সুবিধার চেয়ে অসুবিধাই ছিল বেশি। অদম্য শারমিনা। কারও কথায় কান দেন না। এরপরে ১৫ জোড়া জাভা কিনেন। বারান্দায় পাখির সংকোলন হয় না। আলাদা রুম নেন। সেখানেও এক সময় পাখিতে ভরে যায়। এখন তার পক্ষীশালা বাড়ির ছাদে। সেখানে রুম করে নিয়েছেন তিনি। অত্যন্ত গুছানো পাখির রুম। বর্তমানে তার সংগ্রহে আছে ২৫ জোড়া লাভবার্ড, ইন্ডিংয়ান রিননেক ২ জোড়া, জাপানিজ ক্রেস্টেড বাজরিগার ২৫ জোড়া। এক সময় তার লাভবার্ডের সংখ্যা ৬৫ জোড়া পর্যন্ত হয়েছিল। বাড্ডা লিংক রোডে তার বাসা। খাঁচার বিদেশী পোষা পাখির এক ভিন্ন জগত। সদালাপী, পরউপকারী শারমিনা লাভ নয়। পাখির কোয়ালিটির প্রতি বেশি যতœবান। পাখির বিক্রির টাকায় পাখির খরচ চলে তার। গৃহবধূ যারা। তারা ইচ্ছে করলে পোষা পাখি পালন করতে পারে। অবসর তো কাটবেই, উপরন্তু বাড়তি কিছু অর্থ আসবে। যা সংসারে সচ্ছলতায় ভূমিকা রাখতে পারে। এমনটাই মনে করেন শারমিনা। দেশে উন্নতমানের পোষা পাখি উৎপাদন হয়। তারপরেও নি¤œমানের পাখি আমদানি করা হয়। যা কিনে মানুষ প্রতারিত হয়। অন্যদিকে দেশী পোষা পাখি পালকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নতুন পাখি পালক সৃষ্টিতে প্রতিবন্ধকতা হলো আমদানি করা নি¤œমানের পোষা পাখি। অভিযোগের সুরে কথাগুলো বললেন শারমিনা। তিনি দেশী পোষা পাখি উৎপাদকদের স্বার্থ সুরক্ষার দাবি জানান। লিজা আফরোজ লিজা আফরোজের পাখি পালনের গল্পটা একটু অন্যরকম। তখন সন্ধ্যা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস। শীতে জবুথুবু অবস্থা। কিচির মিচির শব্দ কানে লাগল। বেলকনিতে ছুটে গেলেন লিজা। সুন্দর একটি পাখি বসা। অপূর্ব সুন্দর দেখতে। মুগ্ধ লিজা। পাখিটি ধরে লালন পালন শুরু করেন। ছেড়ে দিলে তো বাঁচবে না। ছোট বাচ্চা পাখি। মায়ায় পড়ে যান তিনি। ভাবলেন বড় করে ছেড়ে দিবেন। পাখিটির নাম ছিল বাজরিগার। এটা ছিল খাঁচার পোষা বিদেশী পাখি। খাঁচায় ডিম বাচ্চা করে। সেই থেকে শুরু। লিজার এখন প্রায় ১৫টির মতো বাজরিগার পাখি রয়েছে। বারান্দায় খাঁচায় পোষা পাখি পালন করেন। লিজা থাকেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার মধ্যপাড়ায়। সাজানো গোছানো তার বাড়ি। মাস্টার্স ফাইনালে পড়েন তিনি। মেধাবী ছাত্রী। পাখি পালনে পড়াশোনার ক্ষতি হয় না? লিজা জানালেন, না। ক্ষতি নয়। উপকারই হয়। পোষা পাখির স্পর্শে মেধার বিকাশ হয়। মানবিকতা বাড়ে। বোধ, বুঝ শক্তি বাড়ে। বিষণœতা গ্রাস করে না। এক ঘেয়ামী কাটে। মন খারাপ হলে দূর হয়। পাখির ছোট ছোট বেবী নিজেকে নতুন করে চিনতে সাহায্য করে। সারাদিন তো নয়। পাখির পিছনে ঘণ্টাখানেক ব্যয় করলেই হয়। স্টুডেন্ট, গৃহবধূ যাদের কথাই বলা হোক। তাদের হাতে অনেক অলস সময় থাকে। আনপোডাক্টটিভ কাজে মানুষ সে সময় খরচ করে। পোষা পাখিতে সে সময়টুকু দেয়া যায়। লিজার মতে, বাজরিগার এমনই এক পাখি। একটু ভালবাসা পেলেই সুফল দেয়। খুব বেশি যতœআত্তি নেই। নিয়মিত খাবার, পানি পরিবর্তন, খাঁচা পরিষ্কার রাখা, শীতকালে ঠা-া যেন না লাগে লক্ষ্য রাখা। এটুকুই। বিড়াল বাজরিগার দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাই বিড়াল থেকে পাখির খাঁচা দূরে রাখতে হবে। বাজরিগার নিয়মিত ডিম, বাচ্চা করে। তাহলে কি এ থেকে হাত খরচের টাকা আসা সম্ভব? লিজা বলেন, অবশ্যই সম্ভব। গৃহবধূ, স্টুডেন্টরা দুই পেয়ার বাজরিগার পালন করতে পারেন। এতে কোন সমস্যাই হবার কথা নয়। বাংলাদেশে পোষা পাখির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় বাজরিগার। এই পাখির খাবার, ওষুধ, ডাক্তার সব সহজলভ্য। পাখি বিক্রি করে অর্থ উপার্জন সম্ভব। অনেকেই পোষা পাখি পালনকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। লিজা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক অনুকরণীয় পাখি প্রেমী। তার দেখাদেখি অনেক মেয়ে পাখি পালন শুরু করেছে। লিজা জানান, পোষা পাখির জন্য তার দুই ছেলের মধ্যে মোবাইল আসক্তি নেই। তারা পোষা পাখির সঙ্গে অবসর কাটায়। মোবাইল আসক্তি দূর করতে পারে পোষা পাখি। বাসার পরিবেশে ভিন্নত, একটু প্রকৃতির ছোয়ার জন্য পোষা পাখি অতুলনীয় বলে লিজা জানান। বাজরিগার পাখির দাম ও কম। লিজা জানান, বাচ্চাদের বিপদগামিতা রোধে পোষা পাখি বাজরিগার অনন্য। ছেলে মেয়েদের পোষা পাখি কিনে দেয়া উত্তম। এর কোনই সাইড এফেক্ট নেই। লিজার কিছু কোয়েল পাখি ও পালন করেন। কারণ হিসেবে তিনি জানালেন, কোয়েলের ডিম খুব পুষ্টিকর। বাচ্চারা খুব পছন্দ করে। ডিম সিদ্ধ বাজরিগার পাখির উকৃষ্ট খাবার। পোষা পাখি পালনে লিজার সফলতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাড়া ফেলেছে।
×