ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাদের

ঐক্যফ্রন্ট তো ভাঙবেই, বিএনপিতেও ভাঙ্গনের সুর

প্রকাশিত: ০৪:৪০, ১৯ জানুয়ারি ২০১৯

ঐক্যফ্রন্ট তো ভাঙবেই, বিএনপিতেও ভাঙ্গনের সুর

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির এখন লেজেগোবরে অবস্থা, আর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে ভাঙ্গনের সুর। তবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য শুনে মাঝে মাঝে ভয় হয়, বেপরোয়া গাড়ির চালক যেভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে জানমালের ক্ষতি করে তেমনিভাবে তিনি বেপরোয়া রাজনীতিবিদের মতো দেশের ক্ষতি না করে বসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশাল বিজয় উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আগামী ১৯ জানুয়ারি শনিবারের বিজয় সমাবেশের মাঠ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা অতি সহিষ্ণুতার সঙ্গে বিষয়টি দেখছি। কেননা তাদের হেরে যাওয়ার একটি বেদনা আছে, কষ্ট আছে। সেই কষ্ট থেকেই তারা বেপরোয়া হতে পারে কিন্তু আমরা সরকারী দল, আমরা দেশ চালাচ্ছি, আমাদের একটি দায়িত্ব আছে। বিশাল একটা বিজয়ের সঙ্গে বিশাল একটা দায়িত্ব আমাদের আছে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমাদের নেত্রী আগামীকাল শনিবার জনগণের উদ্দেশে, আমাদের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে, আমাদের দায়িত্ববোধের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। নির্বাচনে যেমন গণজোয়ার ঠিক সেদিনও ১৯ জানুয়ারি একটা বড় জোয়ার এই নগরীতে দেখতে পাব। ১৪ দলের নেতারা বিরোধী ভূমিকা পালন করুক আওয়ামী লীগ তেমনটা চায় কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, তারা যদি সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসে এবং বিরোধীদল বিরোধী কণ্ঠ যত কনস্ট্রাকটিভ হয়ে পার্লামেন্টে থাকবে, ততই সরকারী দল কোন ভুল করলে সে ভুলটা সংশোধন করতে পারবে। কারণ বিরোধীদল না থাকলে তো একতরফা কাজ চলবে। তিনি বলেন, বিরোধী দল থাকলে বিরোধিতা থেকে সরকারের কিছু শিক্ষণীয় বিষয় থাকবে। সমালোচনা থেকে শুদ্ধ হতে পারবে। সমালোচনা তো মানুষকে শুদ্ধ করে। সমালোচনা থেকে যদি কোন ভুল হয় তাহলে সে ভুল শুদ্ধ করতে পারবে। ১৪ দলের সঙ্গে কোন টানাপোড়েন নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দলীয় ঐক্যজোট একটি আদর্শিক রাজনৈতিক জোট। নির্বাচনী জোট আর রাজনৈতিক জোট ভিন্ন জিনিস। ১৪ দলের সঙ্গে আমাদের যে সম্পর্ক সেটা হচ্ছে রাজনৈতিক জোটের সম্পর্ক। মহাজোট নামের যে বৃহত্তর জোট সেটা কিন্তু নির্বাচনী ঐক্যজোট। যেহেতু ১৪ দলের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রাজনৈতিক, কাজেই তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক থাকবেই। ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনৈতিক জোটের প্রশ্ন যখন আসে তখন তো আমরা এক সঙ্গেই আছি। আমাদের জোট তো আমরা ভাঙ্গিনি। এগুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আমাদের আলাপ আলোচনা হচ্ছে, আরও আলোচনা হবে। কিন্তু এটা মনে রাখা জরুরী মহাজোট কিংবা ১৪ দলে কোন প্রকার টানাপোড়েন নেই। আমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে যদি ভুল বোঝাবুঝি থাকে সেটা আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করব। জনগণের ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় রেখে ছুটির দিনে সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাঝে একদিন বাকি। মঞ্চ সাজসজ্জার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশে বিভিন্ন শাখা এবং পার্টির নেতাকর্মীরা প্রস্তুত। একটি বিশাল বিজয় সমাবেশ হবে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিকরা বিরোধী দলে থাকলে তা তাদের জন্যও ভাল, সরকারের জন্যও ভাল। কারণ সংসদে শক্তিশালী বিরোধীদল থাকলে সরকারের ভুলত্রুটি সংশোধন করা সুবিধা হয়। দায়িত্বশীল বিরোধিতা দেশের গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শরিকরা অনেকে বিরোধীদলের ভূমিকা পালনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তবে এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বর্তমান সরকারের মেয়াদে মুজিব বর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব। আমরা উন্নত বাংলাদেশ ও ব-দ্বীপ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এ সকল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেবেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, পানি সম্পদ উপ-মন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম এমপি, শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এমপি, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এমপি, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী সংসদের সদস্য মির্জা আজম এমপি, এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
×