ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ভুয়া কাস্টমস কমিশনার দুই পিএসসহ রাজধানীতে আটক

প্রকাশিত: ০৪:৪৫, ১১ জানুয়ারি ২০১৯

  ভুয়া কাস্টমস কমিশনার দুই পিএসসহ রাজধানীতে আটক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নামী-দামী স্যুট-কোট পরে তিনি প্রাডো গাড়িতে চড়েন। কখনও কাস্টমস কমিশনার, কখনও বাংলাদেশ ব্যাংকের উর্ধতন কর্মকর্তা। এসব পরিচয় দিয়ে নানাজনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতেন প্রতারক খন্দকার মোঃ ফারুক ওরফে ওমর মবিন (৫২)। তার পাতা ফাঁদে পড়া গ্রাহকদের সঙ্গে নামী-দামী অভিজাত হোটেলে বসে ক্লায়েন্টদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। সঙ্গে থাকত দু’জন পার্সোনাল সেক্রেটারি (পিএস)। পাঁচ বছর আগে এক এমপির পিএস ছিলেন ওমর মবিন। পরে চাকরি ছেড়ে প্রতারণাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন তিনি। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বুধবার রাতে রমনা থানাধীন বেইলি রোডের নবাবী ভোজ রেস্টুরেন্টের সামনে কাস্টমসে জব্দ স্বর্ণের বার নিলামে বিক্রির কথা বলে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মবিনসহ তার দুই পিএস মোহাম্মদ ইলিয়াস ওরফে নূর ইসলাম সরকার (৩৮) ও মোঃ সাইফুল ইসলামকে (৩০) গ্রেফতার করে সিআইডি। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১৮টি ওমর মবিন নামে কাস্টমসের সহকারী কমিশনারের ভিজিটিং কার্ড, চারটি ব্যাংকের চেকের পাতা, সাতটি মোবাইল ও তেরোটি বিভিন্ন অপারেটর সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তদন্ত সংস্থার সিরিয়াস এ্যান্ড হোমিসাইডাল স্কোয়াডের বিশেষ পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা। সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, প্রতারক চক্রের সদস্যরা কাস্টমস হাউসের জব্দ করা সোনার বার নিলামে পাইয়ে দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। প্রতারকদের শিরোমণি খন্দকার ফারুক ওরফে ওমর মবিন নিজেকে কাস্টমস কমিশনার পরিচয় দিতেন। আর দুই সহযোগী ইলিয়াস ও সাইফুল ছিল তার পিএস। তারা নানাজনকে টার্গেট করে প্রথমে পিএসদের পাঠাতেন। কাস্টমস হাউসের জব্দ সোনার বার নিলামে পাইয়ে দেয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিত তারা। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েক ভুক্তভোগীর বক্তব্যও আমরা পেয়েছি। যারা মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েও স্বর্ণের দেখা পাননি। সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, গ্রেফতারের পর আসামি খন্দকার মোঃ ফারুকের মোবাইলে মৃণাল নামে এক ভুক্তভোগীর কল আসে। তিনি সিআইডি কার্যালয়ে এসে প্রতারকদের শনাক্ত করেন। ভুক্তভোগী মৃণালের কাছ থেকেও প্রতারক ওমর মবিন কাস্টমস হাউসের স্বর্ণ স্বল্পমূল্যে নিলামের মাধ্যমে পাইয়ে দেয়ার কথা বলে ২৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ওমর মবিনের কাছ থেকে ৪০ কোটি টাকার ব্ল্যাঙ্ক চেক জব্দ করা হয়েছে। সিআইডি কর্মকর্তা জান্নাত আরা বলেন, ওমর মবিন ৫ বছর আগে জামালপুরের এক এমপির পিএস হিসেবে কাজ করত। সেখান থেকে চাকরি ছাড়ার পর প্রতারণার মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার নামে এ প্রতারক চক্রের আরও যে সদস্য রয়েছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। চক্রের সদস্যদের কাস্টমস হাউসের সিএন্ডএফের বিভিন্ন কাজের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের সিআইডির সিরিয়াস এ্যান্ড হোমিসাইডাল স্কোয়াডের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিব ফারহান, রুহুল আমিন এবং উপ-পরিদর্শক নিউটন কুমার দত্ত।
×