ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অকল্যান্ডে জয় দিয়ে নতুন মৌসুম শুরু করলেন কানাডিয়ান টেনিস তারকা

ফেরার স্বপ্নে বিভোর বাউচার্ড

প্রকাশিত: ০৬:৩৬, ১ জানুয়ারি ২০১৯

ফেরার স্বপ্নে বিভোর বাউচার্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টেনিস কোর্টে নেমেই চমক উপহার দিয়েছিলেন ইউজেনি বাউচার্ড। ২০১৪ সালে উইম্বলডনের ফাইনাল ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও ফ্রেঞ্চ ওপেনের সেমিফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন তিনি। কিন্তু পারফর্মেন্সের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি কানাডার তরুণ প্রতিভাবান এই তারকা। তবে হাল না ছাড়া বাউচার্ড নতুন বছরে নতুন শুরুর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। জানালেন স্বরূপে ফেরার সব রকমের চেষ্টাই করবেন তিনি। তার ইঙ্গিত দেখা গেল নতুন বছরের প্রথম ম্যাচেই। সোমবার অকল্যান্ড ক্ল্যাসিক দিয়ে ২০১৯ মৌসুম শুরু করলেন তিনি। নিজের প্রথম ম্যাচে এদিন আমেরিকান তারকা মেডিসন ব্রেঞ্জেলের মুখোমুখি হন বাউচার্ড। প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে খুব সহজেই জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তিনি। দুর্দান্ত শুরু করা ইউজেনি বাউচার্ড এদিন ৬-৩ এবং ৬-৩ গেমে পরাজিত করেন মেডিসন ব্রেঞ্জেলকে। প্রতিপক্ষকে হারাতে বাউচার্ড এদিন সময় নেন মাত্র ১ ঘণ্টা ১১ মিনিট। এমন জয়ের পর অনুভূতিটা কেমন? বাউচার্ড বলেন, ‘সবকিছুই ঠিক আছে। তবে একটু নার্ভাস ছিলাম। কেননা, বছরের প্রথম ম্যাচ। তাই কী ঘটতে পারে তা আগে থেকে জানাটা খুব কঠিন। তবে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি, তাতেই আমি অনেক খুশি।’ এই মুহূর্তে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ৮৮ নম্বরে অবস্থান করছেন বাউচার্ড। গত দুটি মৌসুমে বাজে পারফর্মেন্স উপহার দেয়ার কারণে এমনটা হয় কানাডিয়ান তারকার। অথচ তিন বছর আগে টেনিস দুনিয়ায় রীতিমতো চমক হয়ে এসেছিলেন তিনি। তিন বছর আগের কথা। মেজর কোন শিরোপা জিততে পারেননি সেবার। কিন্তু তারপরও তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড় হিসেবে পুরো মৌসুমজুড়েই আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিলেন বাউচার্ড। সেই মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফানালে উঠেন তিনি। চীনার লি নার কাছে হেরে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শেষ চার থেকে বিদায় নেন পাঁচ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার এই টেনিস তারকা। ধারাবাহিক পারফর্মেন্সের সৌজন্যে ফ্রেঞ্চ ওপেনেও শেষ চারের টিকেট নিশ্চিত করেন বাউচার্ড। মৌসুমের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টে তাকে থামিয়ে দেন রাশিয়ান টেনিসের গ্ল্যামারগার্ল মারিয়া শারাপোভা। তারপরও দমে যাননি তিনি। মৌসুমের তৃতীয় গ্র্যান্ডসøাম টুর্নামেন্ট উইম্বল্ডনে নিজেকে আরও একধাপ এগিয়ে নেন প্রতিভাবান এই তারকা। প্রথম কানাডিয়ান খেলোয়াড় হিসেবে উইম্বলডনের ফাইনালে উঠার বিস্ময়কর কীর্তি গড়েন তিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্য। শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে সেবার চেক প্রজাতন্ত্রের পেত্রা কেভিতোভার কাছে পরাজয় মানেন বাউচার্ড। মৌসুমের প্রথম তিন মেজর টুর্নামেন্টের তিনটিতেই ব্যর্থ। তারপরও বিশ্ব টেনিসকে চমকে দিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ পাঁচে জায়গা করে নেন তিনি। শুধু টেনিস কোর্টে নয়, ক্যারিয়ারের শুরুতে মডেল হিসেবেও দ্যুতি ছড়ান তিনি। তার খেলার কৌশল, অসাধারণ ব্যক্তিত্ব ও সুন্দর মুখ অবয়বের জন্য মডেলিংয়েও নাম করেন বাউচার্ড। কিন্তু কানাডিয়ান এই গ্ল্যামারগার্ল টেনিস কোর্টে নিষ্প্রভ থাকার কারণে মডেলিং থেকেও যেন আড়ালে হারিয়ে গেলেন। কিন্তু দুর্দান্ত শুরু করার কারণে বাউচার্ডের ওপর আস্থা রাখছিলেন অনেকেই। কেননা, শারাপোভা-সেরেনা-আজারেঙ্কা-কেভিতোভা কিংবা ভেনাস উইলিয়ামসরা এখন ক্যারিয়ারের গোধূলীবেলায়। তাই বাউচার্ডকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছিলেন টেনিসবোদ্ধাদের অনেকেই। কিন্তু তাদের চরম হতাশ করেছেন ২৪ বছর বয়সী এই তারকা। বাউচার্ডের সময়টা এতই খারাপ ছিল যে ২০১৬ সালের পর গত দুই বছরে মৌসুমের শুরুর কোন টুর্নামেন্টেই জিততে পারেননি তিনি। তিন বছর আগে শেনঝেন ওপেন জিতে নতুন মৌসুম শুরু করেছিলেন বাউচার্ড। সে বছরে শেনঝেন ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালেও জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এর পরের সময়টাতে আর খুঁজেই পাওয়া যায়নি তাকে। তবে এবার অকল্যান্ডে আবারও জয় দিয়ে মিশন শুরু করেছেন তিনি। তার ভক্ত-অনুরাগীদের জন্য যা খুবই ইতিবাচক।
×