ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সংবাদ সম্মেলন

দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

দেশে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশে বর্তমানে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে বলে দাবি করেছে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। বুধবার নির্বাচন কমিশনে (ইসি) নিবন্ধিত ৩১টি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংগঠন ও ২৬ এনজিও সংস্থার সম্মিলিত এই মোর্চাটি বলছে, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশন যথেষ্ট আন্তরিক ও সচেতন। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ সন্তোষজনক নয় বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের এমন সমালোচনার সময় ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য এলো। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ফোরামের পরিচালক আবেদ আলী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রচারে সারাদেশের মানুষের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কিছু বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচনের পরিবেশ স্থিতিশীল আছে। দেশের ৩০০টি আসনে ৪০ হাজার ১৯৯ কেন্দ্রে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ অবস্থায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, কিছু সংগঠন রয়েছে, যারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার মদদপুষ্ট হয়ে নির্বাচন এলেই ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক প্রতিবেদন দিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই কাম্য নয়। ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম এসব সংগঠনকে চিহ্নিত করে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক মনোনীত না করলে দেশের মঙ্গল হবে। লিখিত বক্তব্যের বাইরে তিনি আরও বলেন, পর্যবেক্ষণের জন্য নির্বাচন কমিশনে অনেক সংগঠন আবেদন করেছে। কিন্তু বিদেশী পর্যবেক্ষকদের থেকে দেশের সাংবাদিকরা বড় পর্যবেক্ষক। কারণ তারা সহজেই ঘটনার ফুটেজ নিতে পারে। বিদেশী সাংবাদিকরা দেশের বিভিন্ন চ্যানেলের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করে বলেও তিনি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ২১৪টি আসনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। এসব আসনে তাদের ৫ হাজার ৭৯৬ জন পর্যবেক্ষক কাজ করবেন। বাকি আসনগুলোতে অন্যান্য সংগঠনের পর্যবেক্ষণের প্রতিবেদন নিয়ে নিজেদের প্রতিবেদন পূর্ণ করবে ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন সংস্থা কেন্দ্রের (আসক) সামশুল হক, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার খন্দকার ফারুক আহমেদ, এ্যাসোসিয়েশন ফর রাইট এ্যান্ড পিসের আসমাউল হুসনা প্রমুখ। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধনে থাকা বিতর্কিত চারটি দেশীয় সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব না দেয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বুধবার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে সাক্ষাত করে এ আবেদন জানান আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গিয়ে তিনি এই আবেদন জানান। সিইসির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে ১১৮টি নিবন্ধিত নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা রয়েছে। এদের মধ্যে চারটি রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। তারা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে নির্বাচন প্রভাবিত করতে পারে। সংস্থাগুলো হচ্ছে ডেমোক্রেসি ওয়াচ, যার প্রধান হচ্ছেন শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমান। খান ফাউন্ডেশন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খানের স্ত্রীর। বগুড়ার লাইট হাউস তারেক রহমানের। আর আদিলুর রহমানের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদ। এরা সবাই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। এদের পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দিলে বিপর্যয় ঘটতে পারে। তাই নির্বাচন কমিশনকে আমরা বলেছি যেন নিরপেক্ষ সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেয়। এনজিও ব্যুরোর নিবন্ধনের মেয়াদ শেষ হলে সম্প্রতি অধিকার নামে একটি সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এইচ টি ইমাম বলেন, অধিকার সংগঠনটিই আদিলুর রহমানের। সেটির নিবন্ধন বাতিল হলে এখন তিনি বাংলাদেশ মানবিকার পরিষদ চালাচ্ছেন। এর আগে বিএনপি জানিপপ ও এর প্রধান ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ থেকে দূরে রাখার অনুরোধ জানায়। অন্তত ৯টি বিদেশী সংস্থা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগে বলেছে, তারা কেবল বিশেষজ্ঞ টিম পাঠাবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে না। আর নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দেশীয় ১১৮টি সংস্থার সবাই পর্যবেক্ষণে আগ্রহী। আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
×