ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেতন ভাতা বৃদ্ধির দাবি

পোশাক শ্রমিক অসন্তোষ অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৮:০৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

 পোশাক শ্রমিক অসন্তোষ অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর ॥ বেতনভাতা বৃদ্ধির দাবিতে গাজীপুরে কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা রবিবার কর্মবিরতি, বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে। এসময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও মহাসড়ক অবরোধ করে। একাধিক পয়েন্টে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ অন্তত ১৩ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শটগানের গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের মুখে এদিন অন্তত ৮টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ভুল ধারণা থেকে শ্রমিকরা অযৌক্তিকভাবে এ আন্দোলন করছে বলে পুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরের এনএজেড, কম্পোজিট লিমিটেডের শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের কাছে গত কয়েকদিন ধরে সরকার ঘোষিত মজুরি কাঠামো অনুযায়ী বেতনভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এতে সাড়া না দেয়ায় শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে রবিবার সকালে শ্রমিকরা কারখানায় গিয়ে কাজে যোগ না দিয়ে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে আসে এবং কারখানা এলাকায় থাকা একটি মোটরসাইকেল ও একটি কাভার্ডভ্যানে অগ্নিসংযোগ ও কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। পরে তারা পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় তাদের সঙ্গে আশপাশের আরও বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকরা যোগ দেয়। পুলিশ লাঠিচার্জ করলে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে। এসময় অন্তত ৭ জন আহত হয়। বিকেলে শ্রমিকরা পুনরায় ওই এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। এনএজেড, কারখানার শ্রমিক আতিকুর রহমান, শিবলী ও তাদের সহকর্মীরা জানায়, সম্প্রতি সরকার কর্তৃক বর্ধিত হারে বেতনভাতা ঘোষণা করে। কিন্তু কারখানা কর্র্তৃপক্ষ তা উপেক্ষা করে আগের কাঠামো অনুযায়ী বেতনভাতা দিয়ে আসছে। এতে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে এবং কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে। এ কারখানায় প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক রয়েছে। তারা গত প্রায় সপ্তাহখানেক যাবত আন্দোলন করে আসছে। এদিকে একই দাবিতে ভবানীপুর এলাকায় গোল্ডেন গার্মেন্টসের শ্রমিকরা একই দিন সকাল হতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানা থেকে বেরিয়ে পার্শ্ববর্তী মন্ডল গার্মেন্টস কারখানায় যায়। এসময় তাদের সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয়ার জন্য ওই কারখানা থেকে শ্রমিকদের বের করে আনতে গেট ভাংচুর করে। একপর্যায়ে দুপুরে খাবারের বিরতির পর বিকেলে শ্রমিকরা গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধের কারণে সড়কের উভয়দিকে যানবাহন আটকা পড়ে। পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়। এতে পুলিশসহ আন্তত ৬জন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ টিয়ার সেল ছুড়ে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এছাড়াও শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ী এলাকার জাবের জোবায়ের, বৈরাগীরচালা এলাকার হ্যামস শিল্প গ্রæপের কারখানাগুলোসহ কোনাবাড়ি এলাকার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা এদিন কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করে।
×