ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেনাবাহিনী মাঠে নেমেছে

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

  সেনাবাহিনী মাঠে  নেমেছে

শংকর কুমার দে ॥ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী মাঠে নেমেছে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনী ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, এপিবিএন, আনসার ও গ্রাম পুলিশ। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৯৪ কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৭ টাকা। সেনাবাহিনী নামার পর সহিংসতা আর থাকবে না এবং নির্বাচনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত হবে বলে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী দলসহ সকল মহলের দাবি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ খবর জানা গেছে। আন্তঃবাহিনীর জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, রবিবার বিকেল থেকেই সেনাবাহিনী দাায়িত্ব পালনের জন্য সারাদেশের অস্থায়ী ক্যাম্পে পৌঁছতে শুরু করেছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ৩৮৯ উপজেলায় সেনাবাহিনী এবং ১৮ উপজেলায় নৌবাহিনী কাজ করবে। ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৯ দিন স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি জানায়, ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’র আওতায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও তাদের একইভাবে মোতায়েন করেছিল ইসি। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। গত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়। পরিপত্রের নির্দেশনা অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তা সহায়তা চাইলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা করবেন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজন অনুসারে উপজেলায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়োগ করা হবে। পরিপত্রে বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা অনুযায়ী কাজ করবে সশস্ত্র বাহিনী। অবৈধ সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সশস্ত্র বাহিনীকে ডাকা হলে এক্ষেত্রে অন্য কোন উপায়ে বেআইনী সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করা না গেলে ঘটনাস্থলে থাকা সর্বোচ্চ পদের ম্যাজিস্ট্রেট সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ ও গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে পারবেন। জরুরী পরিস্থিতিতে যদি কোন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে কমিশন্ড অফিসার সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগ এবং গ্রেফতার করার নির্দেশ দিতে পারবেন। সামরিক শক্তি প্রয়োগের জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে লিখিত নির্দেশ দেয়ার বাধ্যবাধকতা না থাকলেও মৌখিক নির্দেশ দেয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব তা লিখিত আকারে দেবেন। পরিপত্রে বলা হয়েছে, ঝুঁকি বিবেচনায় প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে সমন্বয় করে কম-বেশি করা যাবে। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বিবেচনায় প্রতিটি স্তরে প্রয়োজনীয়সংখ্যক সেনাসদস্য সংরক্ষিত হিসেবে মোতায়েন থাকবে। বিমানবাহিনী প্রয়োজনীয়সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান, জননিরাপত্তা বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীগুলোর অনুরোধে উড্ডয়নে সহায়তা করবে। পরিপত্রে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে একটি কেন্দ্রীয় কো-অর্ডিনেশন সেল থাকবে। সেলের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অনুরূপ জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন সেল স্থাপন করা হবে। কেন্দ্রীয় সেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিনিধি থাকবেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে ২৭ ডিসেম্বর স্থাপিতব্য জয়েন্ট কো-অর্ডিনেশন সেল এ জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধি থাকবেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে বা ভোট গণনাকক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে সশস্ত্র বাহিনী। সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজনে ইসির কাজে যাবতীয় সহায়তা দেবে সশস্ত্র বাহিনী। প্রয়োজনে পরিস্থিতি বিবেচনা বা নির্দেশক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এই বাহিনী। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে পরিপত্রে বলা হয়, যে ছয়টি আসনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে, সেখানে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেয়ার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। তবে বাহিনীর পোশাকে থাকবেন কিন্তু কোন ধরনের অস্ত্র- গোলাবারুদ বহন করবেন না। ইভিএম কেন্দ্রে যেসব সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য থাকবেন তাদের নিরাপত্তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর নিকটতম টহল দল ও স্থানীয় ক্যাম্প সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বা প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে মাঠে থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর (সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী) সদস্যরা। রবিবার, ২৩ ডিসেম্বর মধ্যরাত থেকেই তাদের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য মাঠে নামার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা পেয়েই সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলমগীর কবির। এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্তের কথা সাংবাদিকদের জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। ওইদিন তিনি বলেন, ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২৪ ডিসেম্বর সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করার জন্য সশস্ত্র বাহিনী ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে থাকবে। এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের মাঠে নামানো হয়েছে। এক হাজার ১৬ প্লাটুন বিজিবি এখন মাঠে কাজ করছে। সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি টিমের সঙ্গে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তের পরই এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এর আগে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৫ দিন মাঠে ছিল সেনাবাহিনী। তারা সাধারণ এলাকায় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন এলাকায় একজন কমিশনারের অধীনে দায়িত্ব পালন করে। ওই নির্বাচনে সারাদেশে প্রায় ৫০ হাজার সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন। এক্ষেত্রে প্রতিটি জেলায় একটি ব্যাটালিয়ন (৭৪০ সদস্য) ও প্রতিটি উপজেলায় এক প্লাটুন (৩৫ জন) সেনাসদস্য দায়িত্ব পালন করেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বরাদ্দ ॥ নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৩৯৪ কোটি ১৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫১৭ টাকা বাজেট বরাদ্দ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি, কোস্টগার্ড, এপিবিএন ও সশস্ত্র বাহিনী। বাজেটের এই টাকা এসব বাহিনীর মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। মোট বাজেটের মধ্যে পুলিশের জন্য ১০১ কোটি ২৬ লাখ ৮৪ হাজার ২৫০ টাকা, র‌্যাবের জন্য ১৩ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার ৫০০ টাকা, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের জন্য ১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জন্য ৫৩ কোটি ৬১ লাখ ৩৪ হাজার ২৩২ টাকা, আনসার ও ভিডিপি জন্য ১৬৩ কোটি ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৫০ টাকা এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে ৬০ কোটি ৩৭ লাখ ২ হাজার ৯৫০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ ও ‘সাধারণ’ এই দুই ভাগে বিভক্ত করে ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পরিকল্পনা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সারা দেশের ৪০ হাজার ২৭৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৫ হাজার ৮২৭টি কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ,’ ১৪ ৪৪৬টি কেন্দ্রকে ‘সাধারণ’ ভোট কেন্দ্র হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে পুলিশ। দুর্গম এলাকায় ১ হাজার ৬৩২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই উদ্যোগ। নির্বাচনের প্রস্তুতি সর্বোত্তম ও চমৎকার বলে দাবি করে পুলিশ মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, এখন পর্যন্ত যে পরিবেশ আছে, সে রকম শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকলে জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারব। পুলিশ সদর দফতর ও নির্বাচন কমিশন সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রচারাভিযানের শুরুতে সহিংসতা ঘটলেও নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমেই শান্তিপূর্ণ অবস্থায় ফিরে এসে উন্নত হয়ে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজমান। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধে নামানো হয়েছে সেনা বাহিনী। এর আগে সহিংসতার শঙ্কা দূর করতে আগাম নির্বাচনী মাঠে নামানো হয়েছে বিজিবি। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মামলা, গ্রেফতারি পরোয়ানা ও ফৌজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবারের নির্বাচনের আগে-পরের পরিবেশ নির্বিঘন্ন করতে অধিকমাত্রায় কৌশলী হতে যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সব ইউনিট। এবার ভোটকেন্দ্রভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন মাঠ পর্যায়ের নেতৃত্বে থাকা উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। সার্বিক পরিস্থিতি, বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, মাঠের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ এবং নাশকতার আশঙ্কা মাথায় রেখে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে আগের চেয়ে নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সেনাবাহিনী নামানোর খবরে নির্বাচনী মাঠে শান্তির সুবাতাস বইছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
×