ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিযোগিতায় সাতবার সোনালি মুহূর্তে অভিষিক্ত হয়েছেন;###;নাজনীন বেগম

সারেগামাপা’র আইকন বাংলাদেশের নোবেল

প্রকাশিত: ০৭:২৩, ৬ ডিসেম্বর ২০১৮

সারেগামাপা’র আইকন বাংলাদেশের নোবেল

বাংলাদেশ নবীন সঙ্গীত তারকা নোবেল জি বাংলার বিনোদন অনুষ্ঠান সা রে গা মাতে এখনও মন মাতানো কণ্ঠে বিচারকম-লী থেকে শুরু করে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাকেও মুগ্ধতার আবেশে ভরিয়ে তুলছে। গোপালগঞ্জের এই ছেলেটি আল্লাহ প্রদত্ত গলাটি জন্মগতভাবে পেয়ে গেলেও সঙ্গীত সাধনার যে নিয়মকানুন পদ্ধতি তাকে কখনও সেভাবে আমল দেয়নি। সুর পাগল এই ছেলেটি জেমস আর আইয়ুব বাচ্চুর গান গেয়ে নিজেকে নিমগ্ন করে রাখত। সেখানে এক সময় নাম যশ খ্যাতি কোনটাই সেভাবে সামনে আসত না। মনের আনন্দে সুরের আবেশে প্রতিনিয়তই উদ্দীপ্ত হওয়া এই উদীয়মান কণ্ঠ যোদ্ধাকে যে মাত্রায় নিয়ে যায় সেখানে তার অনন্যতায় আজ সবাই বিস্মিত, অভিভূত। সা রে গা মা পা’র ৩ বিচারকম-লীই প্রথমেই প্রতিভাদীপ্ত এই কণ্ঠকে খুঁজে পেয়ে সোনালি মুহূর্ত উপহার দেয়াই শুধু নয় তাদের চেয়ারও নোবেলের সামনে এসে হাজির করেন। এমন অপ্রত্যাশিত বরমাল্যে নোবেল প্রথমে হতচকিত, বিস্মিত এমনকি বাকরুদ্ধ হয়ে যায়। ওপার বাংলার এমন নাটকীয় ঘটনার শুরু থেকেই নিজ দেশের ভক্ত আর অনুরাগীরা আনন্দের আতিশয্যে বিহ্বল হয়ে পড়ে। নোবেল চলে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়েই শুধু নয় বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এই কণ্ঠ শৌর্যের নিয়মিত দর্শক-শ্রোতার বিমুগ্ধ ভালবাসায় অভিষিক্ত হতে থাকে এই অনন্য তারকা কণ্ঠ। কি এক অপরিসীম শৈল্পিক মহিমা নোবেলের যে মাত্রায় উদ্দীপ্ত করে সেখানে তাকে শুধু মনে হয় নিবেদিত সুর সাধকের নিঃশর্ত সমর্পণ। গানের প্রতিটি শব্দের সঙ্গে সুরের যে অনবদ্য সম্মিলন এবং মধুর ঝঙ্কার সেখানে নোবেল যেন এক অনন্য সঙ্গীত তনয়। কোনদিন গায়নি এমন গানও যে অবিচল নিষ্ঠা আর পরম নিবেদনে নিজেকে বিলিয়ে দেয়া যায় গভীর থেকে গভীরতর মাত্রায় সেটাও বিন¤্র সাধনায় নোবেল একইভাবে দশর্করাও মন্ত্রমুগ্ধের মতো সম্মোহিত হয়ে যায়। এমন আবেগি মুহূর্তে বিচার করা সোনালি গিটার পর্যন্ত বাজাতে ভুলে যান। সোনালি ঠাকুর গানের ব্যাপারে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করতে গিয়ে সোনালি মুহূর্তকে উপহার দিতে দিতে মন্বিত ফিরে পান মুগ্ধ বিচারকরা মূলত কালজয়ী কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে নোবেলকে মেলাননি বরং সলিল চৌধুরীর গানটিকে নোবেল কিভাবে নিজের মতো করে পরিবেশন করল সেটাকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিলেন। আর সেখানেই জিত হলো নোবেলের। স্বনামখ্যাত কণ্ঠশিল্পী রূপঙ্কর এই গানটির জন্য নোবেলকে তৈরি করেছেন। সেই রূপঙ্করও বিমোহিত। তবে এখন নোবেল তার অনেক সরগরম সাধনার ঘাটতি পূরণ করতে বেশ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। ফলে নিজের সীমাবদ্ধতাকে আস্তে আস্তে জয় করতে সক্ষমও হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের প্রিয় শিল্পী রূপঙ্কর তার সঙ্গীত চর্চার অধ্যায়কে যেভাবে পরিশীলিত করছেন শৈল্পিক সুষমার সেখানে তার অনবদ্যতা আজ সবার নজর কাড়া, নোবেলের আর এক অসামান্য পারদর্শিতা অনুপমের সঙ্গে তার বিখ্যাত জনপ্রিয় গানটি পরিবেশন করা সাহসিকতায়। এই অনন্য শিল্পী নিজেও অভিভূত নোবেলের গলায় তার সাড়া জাগানো গানটি শুনে। বেঁচে থাকার গান- যদি কেড়ে নিতে বলে কবিতা আরও ঠাসা খাতা অবাক হওয়ার মুহূর্ত সামনে অপেক্ষা করছিল। সা রে গা মার সেই পর্বে নোবেল একাই রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয়। সেদিন বিচারকের আসনে অন্যান্যের মধ্যে লোপামুদ্রাও ছিলেন বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়িকা, এক প্রশ্নের উত্তরে নোবেল জানায় শুধু এই বড় আয়োজনেই নয় জীবনে প্রথম রবীন্দ্রনাথের গান গিয়ে শোনাচ্ছে সবাইকে। নিজেও কিছুটা অভিভূত। এই এক অসাধারণ উপস্থাপনা, রবীন্দ্রনাথের বাণীর শব্দ চয়নের যে গভীরতা তার যথার্থ পরিমাপ হয় প্রতিটি উচ্চারণে সেখানে নোবেলের সফলতা সবার নজর কাড়ে। শব্দের অবিচ্ছেদ্যতায় সুরের যে সম্মিলন সেখানেও নোবেল নিজেকে নিবেদন করতে পেরেছে বলে বিজ্ঞ বিচারকরা মত দেন। গায়কী এবং সমর্পণ যেন মিলে মিশে একাত্ম হয়ে যায়। সোনালি মুহূর্তও ঝরে পড়তে দেরি হয়নি। সামনে আরও পর্ব। নিজেকে আরও প্রমাণ করার সুযোগ এখনও হাতছানি দিচ্ছে। একটি পর্ব দর্শকের সামনে আসেনি কিন্তু বিজ্ঞাপনে দেখা যায় উদিত নারায়ণের সামনে তার গাওয়া হিন্দী গান গেয়ে বলিউডের এই বরণ্য শিল্পীর প্রশংসা ছাড়াও সোনালি মুহূর্তে নোবেল অভিষিক্ত হচ্ছে। নোবেল সর্বশেষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সে পরিসংখ্যানে না গিয়েও আটটি গোল্ডেন গিটার পাওয়া এই বাংলাদেশী ছেলেটি অন্য বাংলায় যা করে দেখাল তার দামও তো অনেক।
×