ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুরে ভেঙ্গে পড়ল নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১৫ নভেম্বর ২০১৮

শেরপুরে ভেঙ্গে পড়ল নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর, ১৪ নবেম্বর ॥ নকলায় নির্মাণাধীন পল্লী বিদ্যুতের একটি সাবস্টেশন ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের পরই ভেঙে পড়েছে। অভিযোগ উঠেছে, কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতায় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করার কারণেই উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে নির্মাণাধীন ওই ছাদ ভেঙে পড়ার ঘটনাটি ঘটে। আর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে ওই ভবনের ৩ দিক ডেকোরেটরের কাপড়ে ঢেকে তড়িঘড়ি করে আবারও একইভাবে কাজ শেষ করার চেষ্টার পরও ফাঁস হয়ে যায়। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ‘সাপ্লাই ইনস্টলেশন টেস্টিং এ্যান্ড কমিশনিং অব ৩১/১১ কেভি সাবস্টেশন’ নির্মাণ কাজ চলছে নকলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে। সাব-স্টেশনটির নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সানরাইজ এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজটি বাস্তবায়ন করছে। এ প্যাকেজের মধ্যেই ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২২ ফুট বাই ৩৪ ফুট আয়তনের ভবনটির নির্মাণ কাজ চলছে, যার প্রথম তলার উচ্চতা ১০ ফুট এবং দ্বিতীয় তলার উচ্চতা ১৩ ফুট। এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৭/৮ দিন আগে নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের নির্মাণাধীন ভবনটির দোতলার ছাদের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও রবিবার সন্ধ্যার পর পরই ছাদটি বাঁশের সাটারিংসহ ধসে পড়ে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজে কাজটি না করে এমদাদ হোসেন নামে একজনকে দিয়ে সাব-কন্ট্রাক্টে কাজটি করাচ্ছেন। কাজের কোন তদারকি নেই। তারা নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে নির্মাণ কাজ করছেন। তাই ছাদ ধসে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সানরাইজ এন্টারপ্রাইজের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মুনতাসির মামুন বলেন, ৩ দিন আগে যেদিন ছাদ ঢালাই কাজ করার কথা ছিল তখন পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাটারিং কাজে ব্যবহৃত বাঁশের মান ভাল নয় বলে আপত্তি করে সেগুলো পরিবর্তন করতে বলেন। তাই সেইসব বাঁশ সরানোর কারণে ছাদ ধসে পড়ার রিউমার ছড়িয়েছে। এখন নতুন করে ভাল বাঁশ এনে আবারও কাজ শুরু করা হচ্ছে। কাপড় দিয়ে ঘেরাওয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, যেহেতু একটি রিউমার হয়েছে ছাদ ধসে পড়ার, সেজন্য লোকজনের আনাগোনা কমাতে পর্দা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের ভাষাতেই কথা বলছেন। ওই প্রকল্পের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের জামালপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আহাম্মেদ আলী ‘ওই ভবনের কাজ ভাল হচ্ছে’ বলে দাবি করে জানান, শাটারিংয়ের দুর্বল বাঁশের কারণে ছাদ ঢালাই নিয়ে সমস্যা হয়েছে। তবে ঠিকাদার বলেছেন, তারা আমাদের ভালভাবে কাজ বুঝিয়ে দেবেন। তবে নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ছাদ ধসের ঘটনা জানার পর পরিদর্শন করে দেখেছি। কাজের গুণগত মান ভাল না। তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে মানাসহ কাপড় সরিয়ে জনসমক্ষে কাজ করতেও বলেছি।
×