অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক নামে মাত্র উত্থান হয়েছে। তবে ডিএসইতে সপ্তাহজুড়ে টাকার পরিমাণে লেনদেন আগের সপ্তাহ থেকে সাড়ে ৭ শতাংশ বেড়েছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি আলোচিত ছিল খুলনা পাওয়ার কোম্পানির উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রির ঘোষণা। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা সামিট কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কোম্পানির ১ কোটি ৮০ লাখ শেয়ার পাবলিক মার্কেটে বিক্রির ঘোষণা দেয়া হয়। এরপরই খুলনা পাওয়ারের দর কমতে থাকে এবং কোম্পানিটির সঙ্গে সঙ্গে অন্য কোম্পানিরও দর কমতে থাকে। পরবর্তীতে মঙ্গলবার ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানিটির লেনদেন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়। ডিএসইর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তাদের এত বড় শেয়ার বিক্রি বাজার স্বাভাবিকভাবে নিতে পারবে না। তাই ব্লক মার্কেটে শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিলে কোম্পানিটিকে লেনদেনের সুযোগ দেয়া হবে।
জানা গেছে, বিদায়ী সপ্তাহে পাঁচ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২ হাজার ৫৯৫ কোটি ৭৫ লাখ ৯ হাজার ২৮৭ টাকার লেনদেন হয়েছে। যা আগের সপ্তাহ থেকে ১৮৪ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার ৬১৭ টাকা বা ৭.৬৩ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৪১১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৭ হাজার ৬৭০ টাকার। ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছে ৫১৯ কোটি ১৫ লাখ ১ হাজার ৮৫৭ টাকার।
আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন হয়েছিল ৪৮২ কোটি ৩৩ লাখ ৯১ হাজার ৫৩৪ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে গড় লেনদেন ৩৬ কোটি ৮৯ লাখ ১০ হাজার ৩২৩ টাকা বেশি হয়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ০.৬৩ পয়েন্ট বা ০.০১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ২৫৯ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ৫.৫৯ পয়েন্ট বা ০.৪৬ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬.২৬ পয়েন্ট বা ০.৩৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১২১০ ও ১৮৫৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে বিদায়ী সপ্তাহে মোট ৩৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট হাত বদল হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৯টির দর বেড়েছে, দর কমেছে ১৬২টির শেয়ার ও ইউনিটের দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির।
বিদায়ী সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে খুলনা পাওয়ারের। কোম্পানিটির মোট ১১২ কোটি ৮৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এসকে ট্রিমসের ৭৮ কোটি ৬০ লাখ ২৫ হাজার টাকার এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ভিএফএস থ্রেড ডাইংয়ের ৭৪ কোটি ৭০ লাখ ২৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এছাড়া ইনটেকের ৬৫ কোটি ৮৬ লাখ ৮ হাজার টাকার, বিবিএস ক্যাবলের ৬০ কোটি ৪৫ লাখ ৫৯ হাজার টাকার, নূরানী ডাইংয়ের ৫৯ কোটি ৮৭ লাখ ৮৩ হাজার টাকার, ইউনাইটেড পাওয়ারের ৫৯ কোটি ৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকার, ইন্ট্রাকোর ৫৭ কোটি ৪৭ লাখ ৮ হাজার টাকার, সায়হাম কটনের ৫৩ কোটি ৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকার এবং ড্রাগন সোয়েটারের ৫০ কোটি ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সব সূচক কমেছে। সপ্তাহটিতে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬০ পয়েন্ট বা ০.৩৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১০১ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক ১৭ পয়েন্ট বা ০.১১ শতাংশ, সিএসসিএক্স ৪২ পয়েন্ট বা ০.৪২ শতাংশ, সিএসই-৫০ সূচক ১২ পয়েন্ট বা ১.০৪ শতাংশ এবং সিএসআই ৯ পয়েন্ট বা ০.৮৪ শতাংশ কমে সপ্তাহ শেষে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৪ হাজার ৪৩৬, ৯ হাজার ৭৫৩, ১ হাজার ১৭৯ ও ১ হাজার ৬৮ পয়েন্টে।
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ১১১ কোটি ১০ লাখ ৩১ হাজার ১৭৩ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১২০ কোটি ৬৩ লাখ ২২ হাজার ৬১২ টাকার। এ হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন ৯ কোটি ৫২ লাখ ৯১ হাজার ৪৩৯ টাকা বা ৮ শতাংশ কমেছে।